বিপিএল শেষ হওয়ার পরদিনই মাঠে নেমে পড়েছে বাংলাদেশ দল। এর পরও গত শনিবার দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া অনুশীলন দেখে অনেকেই বাঁকা হাসি হেসেছেন। এই বিদ্রুপের কারণটা বুঝতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি। টি২০ থেকে এক লাফে ওয়ানডেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অথচ এক ফরম্যাট থেকে অন্য ফরম্যাটে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশ দলের যে কিছুটা সময় লাগে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরিকল্পনার সময় সেটা হয়তো মাথাই ছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১০ দিন আগে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ। ভ্রমণ ও নানা আনুষ্ঠানিকতার কারণে সর্বোচ্চ সপ্তাহখানেক অনুশীলনের সুযোগ শান্ত-সৌম্যরা পাবেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। বাংলাদেশ দল সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিল গত ১২ ডিসেম্বর উইন্ডিজে। ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করবে তারা। ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আড়াই মাস ওয়ানডে না খেলা আবার অজুহাত হয়ে দাঁড়াবে না তো? 

বিসিবির এক কর্তা অবশ্য বলেছেন, বিপিএলের জন্য উইন্ডো অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত। তাই এখানে বিশেষ কিছু করার ছিল না। আর বিপিএলে তো ক্রিকেটাররা খেলার মধ্যেই ছিলেন। তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এ ছাড়া টি২০ ও ওয়ানডে একই ধরনের বলে (সাদা বল) খেলা হয়। ওয়ানডে হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাট। এখানে অনভ্যস্ততার প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলেও জানালেন ওই বিসিবি কর্তা।

তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাকি দলগুলোর দিকে তাকালেই বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনার দীনতা ফুটে ওঠে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে আসরের স্বাগতিক পাকিস্তান ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ খেলছে। তিন দেশই যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে এই টুর্নামেন্টকে নিয়েছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। 

চলমান ভারত-ইংল্যান্ড তিন ওয়ানডের সিরিজও যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মহড়া, সেটা দুই দলের ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেই পরিষ্কার বোঝা যায়। আসরের আরেক হট ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির জন্য অসিরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২টি ওয়ানডেও খেলবে।

আফগানিস্তান কেবল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল দেড় মাস আগে। তারাও বাংলাদেশের মতোই মাঠে নামছে। তারা জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করেছে গত ৬ জানুয়ারি। এর পর থেকে তাদের ক্রিকেটাররা বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে বেড়াচ্ছেন। অবশ্য আফগানরা মানিয়ে নেওয়ায় বেশ পটু।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম য সরক র ল দ শ দল

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ