‘রেজা নুর: চন্দন বনের ঐশ্বর্য’ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তর বাড্ডার কামরুল কনভেনশন সেন্টারে এই সংকলনের মোড়ক উন্মোচন হয়।

চতুরঙ্গ সম্পাদিত ‘একজন রেজা নুর: চন্দন বনের ঐশ্বর্য’ সংকলনটি মূলত কবি ও কথাসাহিত্যিক রেজা নুরের সাহিত্যের মূল্যায়নধর্মী একটি সংকলন। সংকলনটি সম্পাদনা করেন কবি ও কথাসাহিত্যিক জব্বার আল নাঈম।

মোড়ক উন্মোচন পর্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রেজাউদ্দিন স্টালিন। তিনি বলেন, “রেজা নুর হলেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও লেখক। প্রবাস জীবনে শত ব্যস্ততার মধ্যেও যে একাধারে সাহিত্যের সব শাখায় অবদান রেখে যাচ্ছেন। তার কবিতাও অসামান্যভাবে উঠে এসেছে বাংলাদেশের সৌন্দর্য, প্রকৃতি ও পরিবেশের অপরূপ বর্ণনা ও বন্দনা। তার মতো লেখকের উচিত দেশে এসে নিজেকে উজার করে লেখালেখিতে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া।”

আরো পড়ুন:

বইমেলায় কবীর আলমগীরের ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগের পতন’

বইমেলায় ফাহমিদা নবীর প্রথম বই প্রকাশিত

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবি, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক মুম রহমান বলেন, “রেজা নুরের সরল ভঙ্গি ও বর্ণনা পাঠককে ধরে রাখতে সহযোগিতা করে। যেকোনো বর্ণনা করতে গেলে তা যেন সত্যিকার বা বাস্তবিকভাবে দেখা মিলে।”

এছাড়া মুম রহমান লেখক রেজা নুরের অন্যান্য বইয়ের ছোট ছোট ব্যাখা ও বইয়ের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে কবি সাম্মি ইসলাম নীলা রেজা নুরের আদমের আগের পৃথিবী নামক কবিতাটি পাঠের পাশাপাশি বলেন, “সরল ভঙিমায় রেজা নুর যে চিত্র আঁকেন এককথায় তা অসাধারণ। রেজা নুর ব্যক্তি হিসেবেও প্রশংসনীয় একজন মানুষ। তিনি মানুষকে সহজেই আপন করে নিতে জানেন।”

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে কথা বলেন কবি ও সাংবাদিক পলিয়ার ওয়াহিদ, কবি মাহমুদ নোমান এবং কবি, কথাসাহিত্যিক ও সম্পাদক জব্বার আল নাঈম।

পলিয়ার ওয়াহিদ বলেন, “যশোর আমার জন্ম এলাকা, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ফররুখ আহমেদ, রেজাউদ্দিন স্টালিন সেই পরম্পরায় যশোরে পেয়েছি রেজা নুরকে। তার সঙ্গে পরিচয়ের আগে পরিচিত হই তার লেখার সঙ্গে। এখনো ভোর উপন্যাস পড়েছি, অসম্ভব ভালো লাগা কালজয়ী উপন্যাস।”

চতুরঙ্গ সম্পাদক জব্বার আল নাঈম বলেন, “লেখালেখির কারণে রেজা নুরকে দেশের মানুষ চিনতে পেরেছি সত্যি কিন্তু, তার আরো কিছু অবদান আছে, তিনি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক। তিনি স্থানীয়ভাবে অনেক উন্নয়নমূল কাজ করে যাচ্ছেন।”

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনকারী হিসেবে ছিলেন জিনাত রেহানা লুনা। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন হাসানুর রহমান।

উক্ত অনুষ্ঠানে লেখক রেজা নুর নিজেও সংক্ষিপ্ত আকারে নিজের জীবন ও লেখালেখি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা.

মিজানুর রহমান।

চতুরঙ্গ এই সংখ্যায় যারা লিখেছেন তারা হলেন-ফিরোজ আশরাফ, মুম রহমান, মনি হায়দার, তাজ ইসলাম, খালেদ রাহী, শামস সাইদ, মোজাফ্ফর হোসেন, সাইফ বরকতুল্লাহ, পলিয়ার ওয়াহিদ, আজিম হিয়া, শিবলী আহমেদ, কাজী শোয়েব শাবাব, শিমুল জাবালি, সাম্মি ইসলাম নীলা, জোবায়ের মিলন, মাহমুদ নোমান, রাসেল আবদুর রহমানসহ আরো অনেকে।

একই অনুষ্ঠানে রেজা নুরের আরো দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। প্রথমটি কবিতাগ্রন্থ ‘আদমের আগের পৃথিবী’ এবং উপন্যাস ‘চেনা আগুন’।

ঢাকা/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল ব র আল রহম ন স কলন

এছাড়াও পড়ুন:

স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহত হওয়ার ঘটনার পর দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংকের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এ ব্যাংকের অবস্থান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মাইলস্টোনের ঘটনার পর অনেকেই স্কিন (চামড়া বা ত্বক) দান করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করছেন। স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া রোগীকেও বাঁচানো সম্ভব।

২১ জুলাই দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। গত সোমবার রাত ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৩৪ জন মারা গেছে। আর সোমবার বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৪৫ জন। তাদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৩৩ জন।

দেশে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর দান করা ত্বক ব্যবহার করে ১০ জন দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই বেঁচে গেছেন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় একজন মারা গেছেন।

জীবিত ব্যক্তির শরীর থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করা ত্বক মারাত্মকভাবে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া যে কেউ চাইলে মরণোত্তর ত্বক দান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দাতার মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মরদেহ থেকে ত্বক সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই ত্বক দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

ওজন কমানোসহ কিছু প্লাস্টিক সার্জারির পর বেঁচে যাওয়া ত্বক সংরক্ষণ করার মধ্য দিয়ে দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংকটি যাত্রা শুরু করে। আগে এ ধরনের অস্ত্রোপচারের পর বাড়তি ত্বক ফেলে দেওয়া হতো।

স্কিন ব্যাংকের সমন্বয়কারী ও জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মাইলস্টোনের ঘটনার পর ত্বকদানের বিষয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে; বিশেষত অনেক নারী আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে যোগাযোগ করেছেন।

তবে সমস্যা হলো, আগ্রহী ব্যক্তিদের বেশির ভাগ চাইছেন, মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষার্থীদের শরীরে যাতে তাঁদের দান করা ত্বক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে প্রক্রিয়া শেষে কার দান করা ত্বক কার শরীরে ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ত্বক দান করার ক্ষেত্রে স্ক্রিনিংসহ পুরো প্রক্রিয়া শুনে অনেকে আর আগ্রহ দেখাননি। এখন পর্যন্ত যাঁরা যোগাযোগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ১৫ থেকে ১৬ জন ত্বক দান করতে চেয়েছেন বলে জানান চিকিৎসক মাহবুব হাসান।

ভবিষ্যতে দগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় ত্বক সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। ত্বক সংগ্রহের পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে সেই ত্বক পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে।মাহবুব হাসান, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক।

৩ জুলাই মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম আন্তর্জাতিক দগ্ধ ও আঘাতপ্রাপ্তদের সম্মেলন। এই সম্মেলনে ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ফার্স্ট স্কিন ব্যাংক ইন বাংলাদেশ: দ্য ওয়ে অব ওভার কামিং দ্য চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাহবুব হাসান। প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, দেশে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর দান করা ত্বক ব্যবহার করে ১০ জন দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই বেঁচে গেছেন। আর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় একজন মারা গেছেন।

আপাতত রেজিস্ট্রেশন ও স্ক্রিনিং

দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংক উদ্বোধন করা হয় গত ৯ জানুয়ারি। তবে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। ব্যাংকটিতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল। বর্তমানে এই ব্যাংকে দুজন চিকিৎসক ও একজন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন।

স্কিন ব্যাংক যাত্রা শুরুর পর মোট ১৪ হাজার ৫০০ সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক সংরক্ষণ করা হয়েছিল। মাইলস্টোনের ঘটনার আগপর্যন্ত ৯ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যাংকে ছিল। মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় গত রোববার পর্যন্ত এ ব্যাংক থেকে সাড়ে ৩ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যবহার করা হয়েছে।

স্কিন ব্যাংক যাত্রা শুরুর পর মোট ১৪ হাজার ৫০০ সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক সংরক্ষণ করা হয়েছিল। মাইলস্টোনের ঘটনার আগপর্যন্ত ৯ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ছিল। মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় গত রোববার পর্যন্ত এ ব্যাংক থেকে সাড়ে তিন হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যবহার করা হয়েছে।

মাইলস্টোনের ঘটনার পর ত্বকদানের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ত্বকদানের আহ্বান জানিয়ে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন। তবে কিছু কিছু ভুল তথ্যও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।

আরও পড়ুনস্কিন ব্যাংক চালু হলো বাংলাদেশে, দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত২৫ জুলাই ২০২৫

মাইলস্টোনের ঘটনার পর জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অনেকেই ত্বক দান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্বক সংরক্ষিত আছে।

এ বিষয়ে চিকিৎসক মাহবুব হাসান বলেন, এ মুহূর্তে ত্বকদানে আগ্রহী ব্যক্তিদের রেজিস্ট্রেশন আর স্ক্রিনিং করে রাখার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, যাতে জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের কাছ থেকে ত্বক সংগ্রহ করা যায়।

সংগ্রহ করা ত্বক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখলে পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
  • স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়