নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলেই আলোচনায় রাজি জেলেনস্কি
Published: 10th, February 2025 GMT
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যেকোনো ধরনের আলোচনায় রাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তাঁর শর্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করবে না, এমন বোঝাপড়া থাকতে হবে। যুক্তরাজ্যের আইটিভিকে গতকাল রোববার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ কথা বলেন।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি রুশ আগ্রাসন বন্ধ করার নিশ্চয়তা থাকবে। এর অর্থ তিনি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান।
জেলেনস্কি বলেন, ‘সংঘর্ষ থামিয়ে দিলে তা বারবার আগ্রাসনের রূপে ফিরে আসবে। তাহলে কে পুরস্কার জিতবে এবং ইতিহাসে বিজয়ী হিসেবে নাম লেখাবে? কেউ না। এটা সবার জন্যই একটা চূড়ান্ত পরাজয় হবে। আমাদের জন্য এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ট্রাম্পের জন্যও এটা গুরুত্বপূর্ণ।
টানা তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের খুব দ্রুতই অবসান ঘটবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে এরই মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। গত রোববার নিউইয়র্ক পোস্ট–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শুরুর দিকের পর এই প্রথম মার্কিন ও রুশ দুই প্রেসিডেন্ট শুক্রবার সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেছেন। তবে এ নিয়ে রুশ কর্তৃপক্ষ অনেকটাই চুপচাপ।
ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, মার্কিন কূটনীতিকেরা এ সপ্তাহে ইউরোপে যাচ্ছেন। যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায়, তার বিস্তারিত আলোচনা করবেন। তাঁরা উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে কাজ শুরু করবেন।
রুশ ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল গালুজিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য তাঁরা ভালো কোনো প্রস্তাব এখনো পাননি। রাশিয়ার বৈধ স্বার্থ বিবেচনা করে এমন বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে আলোচনার বিষয় নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ। এতে সংকটের মূল কারণগুলো বের করে তা বাস্তব উপায়ে সমাধানের প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।
এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে গতকাল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া সুমি এলাকায় কয়েকটি ভবনে হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ৮১টি ড্রোনের মধ্যে ৬১টি ভূপাতিত করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।