সরকারি ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি ‘পুরোপুরি’ বন্ধের সুপারিশ করেছে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ-সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। ফলে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে পুরোনো বিতর্ক নতুন করে ফিরে এসেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টাস্কফোর্স এ সুপারিশের কারণও বলেছে। তাদের মতে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ব্যাপক পরিসরে ছাত্র রাজনীতি দেখা যায়, যা একাডেমিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আয়োজন চলছে, তখনই এ সুপারিশ এলো। ইতোমধ্যে এ সুপারিশের প্রতিবাদও জানিয়েছে কোনো কোনো ছাত্র সংগঠন। এটা সত্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে এক ধরনের জনমত গড়ে উঠেছে। ৫ আগস্টের পরে কেউ কেউ এর পক্ষে কথাও বলেছেন। কিন্তু মাথাব্যথার দাওয়াই হিসেবে টাস্কফোর্স মাথা কাটার সুপারিশ করেছে। সর্বশেষ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের সব ক্রান্তিকালে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দিয়েছে। আগামীর জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্যও শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি চালু রাখতে হবে।
তবে হ্যাঁ, এত দিন শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির নামে দলীয় লেজুড়বৃত্তির যে অপচর্চা ছিল, তা বন্ধ করা জরুরি। টাস্কফোর্স যদি সুপারিশ করত– ‘দলবাজি’ বন্ধ করতে হবে, তা যথার্থ হতো। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরই আমি লিখেছি, ‘ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতির নামে দলবাজির কারণে শুধু শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার পরিবেশই বিঘ্নিত হয়নি; একই সঙ্গে উচ্চশিক্ষার মূল উদ্দেশ্যও ব্যাহত হয়েছে।’ (রাষ্ট্র সংস্কার শুরু হোক শিক্ষাঙ্গনে সংস্কার দিয়ে, সমকাল, ১৬ আগস্ট ২০২৪)। 

আমি এটাও মনে করি, সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি নিশ্চিত হতে পারে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই। জুলাই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা ঘোষণা করে, সেখানে তাদের একটি দাবি ছিল– শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ চালু করতে হবে। সে কারণেই ৫ আগস্টের পর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জোরালো হয়। 
গত বছরের শেষ দিক থেকে যখন ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো আলোচনা শুরু করে, তখন প্রায় সবাই দ্রুত নির্বাচনের দাবি করলেও বিএনপির সহযোগী ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভিন্ন অবস্থান আমরা দেখেছি। বিশেষ করে ডিসেম্বরে এ লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈঠকে ছাত্রদল অংশ নেয়নি। পরে তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি তোলে। একদিকে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কার চাইছে না, অন্যদিকে ছাত্রদল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে সংস্কার দাবি করছে। বিপরীতমুখী এ অবস্থানে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে, ছাত্রদল সংস্কারের কথা বলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়। এ আশঙ্কা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। ‘দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন চায় ছাত্রদল’ শিরোনামে সম্প্রতি তিনি এক লেখায় বিস্তারিত লিখেছেন। ছাত্রদলও যখন ‘দ্রুত’ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা বলছে, তার মানে, এ ব্যাপারে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ প্রায় সব ছাত্র সংগঠন এখন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। তবে হ্যাঁ, ছাত্রদল এখনও সংস্কার চায়। সে সংস্কার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতেই পারে। 

আমরা দেখছি, সবার আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পূর্বঘোষিত রূপরেখা অনুযায়ী, গত ১ ফেব্রুয়ারি জাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার কথা ছিল। তবে জাকসুর গঠনতন্ত্রের সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও অন্যান্য সংগঠনের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে তা পিছিয়ে যায়। সম্প্রতি জাকসু নির্বাচন-সংক্রান্ত পরিবেশ পরিষদের সভা শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.

মোহাম্মদ কামরুল আহসান ২১ মের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। তার মানে, সেখানে তিন মাসের জন্য নির্বাচনটি পিছিয়ে গেল।

জাকসু নির্বাচনের যে রোডম্যাপ এসেছে, তা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুসরণ করতে পারে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে এলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও এগিয়ে আসতে পারে। ডাকসুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেভাবে ভাববে নিশ্চয়।
বস্তুত ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির বিকল্প নেই। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটানো দরকার, যেখানে কোনো একক রাজনৈতিক দলের আধিপত্য থাকবে না। দলীয় প্রভাব বলয় থেকে শিক্ষাঙ্গনকে মুক্ত রাখতে রাজনৈতিক সরকার আসার আগেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করা জরুরি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে ক্যাম্পাসে পুরোনো সেই দলবাজি ও খুনোখুনির রাজনীতি ফিরে আসার শঙ্কা আছে। বর্তমানে হলগুলোতে হল প্রশাসনের যে নিয়ন্ত্রণ আছে, সেই নিয়ন্ত্রণও আলগা হয়ে যেতে পারে। সে জন্যই তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়া জরুরি।   

গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডাকসু সংলাপ: সংস্কার ও নির্বাচন’ বিষয়ে এক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা যথার্থই বলেছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারের অংশ, যাতে প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় রাজনীতিতে যা-ই ঘটুক, তার প্রভাব ডাকসুর ওপর পড়বে না– এটি নিশ্চিত করতে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হতে হবে।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের যে পরিণতি হয়েছে, সেখান থেকে রাজনীতিকদের শিক্ষা নিতেই হবে। ছাত্রনেতারাও নিশ্চয় বাস্তবতা অনুধাবন করে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত সময়ে করার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহায়তা করবেন। 

মাহফুজুর রহমান মানিক: 
জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল 
mahfuz.manik@gmail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত র র জন ত ছ ত র স গঠন র জন ত ক ৫ আগস ট ছ ত রদল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তানদের টানে বিচ্ছেদ থেকে বন্ধন, আদালত চত্বরে আবার বিয়ে

তিন বছর আট মাস আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয় এক দম্পতির। পরে দুই কন্যাসন্তানের হেফাজত চেয়ে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা করেন মা ও বাবা। শুনানির সময় বাবার সঙ্গে আদালতে সন্তানদের দেখা হতো। কিন্তু এতটুকু দেখাতে মন ভরত না সন্তানদের। সন্তানেরা মা-বাবাকে সব সময় একসঙ্গে কাছে পেতে চাইত। সাত বছর বয়সী বড় কন্যা প্রতিবার সাক্ষাতের সময় কান্নাকাটি করে মা-বাবাকে একসঙ্গে থাকার জন্য আকুতি জানাত।

পরে দুই কন্যার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে  ব্যথা ও অভিমান ভুলে ওই দম্পতি আবার একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। প্রায় তিন বছর মামলা চালানোর পর গত মার্চ মাসে আদালত চত্বরে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মলয় কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, শুধু কন্যাদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ওই দম্পতি আবার এক হয়েছেন। আপসের পর ধর্মীয় বিধান মেনে আদালত চত্বরে তাঁদের আবার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁরা সংসার শুরু করেছেন।

যেভাবে দ্বন্দ্ব, যেভাবে আপস

২০১৭ সালে পারিবারিকভাবে এই দুজনের বিয়ে হয়। তাঁরা দুজনই উচ্চশিক্ষিত। দুজনই উচ্চপদে চাকরি করেন। বিয়ের পর নারীর বাবার বাড়িতে তাঁদের সংসার শুরু হয়। পরে রাজধানীতে একটি ভাড়া বাসা নিয়ে থাকা শুরু করেন। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাঁদের কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।

নারীর ভাষ্য, বিয়ের পর তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল। স্বামী যৌতুক চেয়েছিলেন। এ কারণে মেয়ের সুখের কথা ভেবে যৌতুক হিসেবে ছয় লাখ টাকা ব্যয় করে টিভি, ফ্রিজ, খাট ও আলমারি উপহার দেন তাঁর বাবা।

মামলায় ওই নারী অভিযোগ করেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তাঁর স্বামীর ভাড়া বাসায় ওঠার কয়েক মাস পর থেকে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। ভাড়া বাসার পাশে তাঁর ননদের বাসা ছিল। শাশুড়ি কখনো তাঁদের সঙ্গে, আবার কখনো মেয়ের বাসায় থাকতেন। তুচ্ছ কারণে শাশুড়ির সঙ্গে তাঁর প্রায় সময় মনোমালিন্য হতো। এ নিয়ে স্বামী তাঁকে কটু কথা বলতেন। একপর্যায়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী। তবু সন্তানের কথা ভেবে অত্যাচার সহ্য করে সংসার করতে থাকেন তিনি।

মামলায় ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে বাবার কাছ থেকে জমি লিখে নিতে স্বামী তাঁকে চাপ দিতে শুরু করেন। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। একসময় তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের চার বছরের মাথায় তিনি স্বামীকে তালাক দিয়ে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।

তালাক কার্যকরের (তিন মাস) আগে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা তালাকের নোটিশ প্রত্যাহারের অনুরোধ করতে থাকেন। স্বামী ও তাঁদের স্বজনেরা ওই নারীর কাছে অঙ্গীকার করেন, আর কখনোই শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা হবে না। স্বামীর অনুরোধ ও সন্তানের কথা ভেবে কার্যকর হওয়ার আগে ওই নারী তালাকের নোটিশ প্রত্যাহার করে নেন। আবার সংসার শুরু করেন।

আদালতের কাছে নারী দাবি করেন, আবার সংসার শুরুর পর থেকে কয়েক মাস তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। তবে দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে আবারও স্বামী নির্যাতন করা শুরু করেন। তিনি এতটাই উগ্র হয়ে ওঠেন যে নির্যাতন ঠেকাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে স্বামী তাঁদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আবারও স্বামীর বাসা ছেড়ে চলে যান বাবার বাসায়। ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট তিনি আবার তাঁর স্বামীকে তালাকের নোটিশ দেন। তালাক কার্যকরও হয়। ছয় মাস পর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। স্বামী কখনো দ্বিতীয় সন্তানকে দেখতে আসেননি।

তবে এই নারীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁর সাবেক স্বামী। সাবেক স্বামীর অভিযোগ, তাঁর মায়ের সঙ্গে স্ত্রীর বনিবনা হতো না। এ কারণে স্ত্রী প্রায় সময় তাঁর মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। একদিন রাগ করে তাঁর স্ত্রী বড় মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পর কন্যাদের দেখতে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারধর করেন। এ সময় তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দেন। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনার পর তাঁদের দুজনের মধ্যে আর কোনো সমঝোতা হয়নি। পরে দুই কন্যার হেফাজত চেয়ে সাবেক স্ত্রীকে বিবাদী করে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন সাবেক স্বামী। অন্যদিকে ওই নারীও সাবেক স্বামীকে বিবাদী করে একই ধারায় মামলা করেন।

আরও পড়ুনবিয়ের অনেক বছর পরও কেন বিচ্ছেদ হয়১০ জুলাই ২০২৪

বিবাদীপক্ষের আইনজীবী মলয় কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, এই দম্পতির বড় সন্তানের বয়স প্রায় সাত বছর, আর ছোট সন্তানের বয়স চার বছর। পারিবারিক আদালতে মামলার শুনানি চলাকালে আদালতকক্ষে স্বামী-স্ত্রীর দেখা হতো। দুই কন্যা তখন মা–বাবা দুজনের সঙ্গেই কথা বলত। তারা কান্নাকাটি করত; সবাই মিলে একসঙ্গে থাকতে চাইত। একসময় স্বামী-স্ত্রী দুজনই সন্তানের মানসিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আবার একসঙ্গে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেন।

আইনজীবী মলয় কুমার সাহা বলেন, মা–বাবার বিচ্ছেদের পর সন্তানেরা মানসিক যন্ত্রণার মুখোমুখি হয়। শিশুর মানসিক বিকাশে মা–বাবার আদর-ভালোবাসা বিরাট ভূমিকা রাখে। বিচ্ছেদের কারণে আদর-ভালোবাসার ঘাটতি সন্তানদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এ কারণে দুই কন্যার মানসিক সুস্থতার কথা ভেবে গত মার্চ মাসে আপস করে ওই দম্পতি আবার বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা সংসার শুরু করেছেন। তাঁদের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। তাঁরা এখন সুখে আছেন।

আরও পড়ুনবিচ্ছেদের ৫০ বছর পর আবার একসঙ্গে দুজন ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনডিভোর্সের পরও সন্তানের কথা ভেবে এক ছাদের নিচে থাকা কি ঠিক২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ