বইমেলায় শফিক হাসান’র ভ্রমণগ্রন্থ `দেখি বাংলার মুখ’
Published: 12th, February 2025 GMT
প্রত্যেক মানুষ নিজের দৃষ্টি দিয়েই দেখেন। কেউ কেউ দেখার সঙ্গে যুক্ত করেন অন্তর্দৃষ্টিও। একেকজনের বাংলার মুখ দেখার পদ্ধতি হয়তো ভিন্ন রকমের। শফিক হাসান উল্লিখিত দুই পদ্ধতিতেই দেখেন তার চিরচেনা কিংবা অচেনা বাংলাদেশকে। অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার ভ্রমণগ্রন্থ ‘দেখি বাংলার মুখ’। এতে রয়েছে ১৫টি ভ্রমণকাহিনী। স্থান পেয়েছে দেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়ানোর গল্প। ভ্রমণকাহিনীগুলোর শিরোনামে চোখ বোলালেই বোঝা যাবে কেমন মালা গেঁথেছেন তরুণ এই লেখক।
বইয়ের শুরুতেই রয়েছে বড় পরিসরের ভ্রমণবৃত্তান্ত ‘বৃষ্টিভেজা নড়াইল, পল্লীকবির বাড়ি ও ঝিনাইদহের গল্প’। বৃহৎ পরিসরের আরও দুটি ভ্রমণগল্প হচ্ছে ‘রঙ্গ-রসের রংপুরে কিছু আলো, কিছুটা অন্ধকারে’, ‘পুণ্ড্রনগরের পথে-ঘাটে, পুরাতত্ত্ব ও মিথের জাদু’। অন্য ভ্রমণকাহিনীগুলোর বিষয়বস্তুও শিরোনাম থেকেই অনুমেয় লালন ফকির ও রবীন্দ্রনাথ ভূমি-তালাশে, কেওক্রাডং চূড়ায় উচ্চতার মেলায়, নদী পেরিয়ে বরিশালে, গীতিকার দেশে, শেকড়ের সন্ধানে মুজিবনগরে, কক্সবাজারে সমুদ্রভোজনে, স্মৃতি বিস্মৃতির চট্টগ্রামে, মাদারীপুরের স্বর্ণরেণু, তূর্ণা নিশিথায় নিশিযাপন, হাতিরঝিল ভেসে যায় জলজোছনায়, কাহারোলে অন্য রোল, ঝিম সবুজের হাতছানি দেয় শ্রীময়ী সিলেট ও শ্রীমঙ্গল।
ভ্রমণকাহিনী লেখার নেপথ্য সংযোগসূত্র উল্লেখ করে শফিক হাসান বলেন, ``লোকে যেটাকে ভ্রমণকাহিনী বলে আখ্যায়িত করে, আমি বড়জোর সেটাকে ভ্রমণগদ্য নাম দিতে পারি! তবে বোঝা ও বোঝানোর সুবিধার্থে অধিকাংশ সময়ে ভ্রমণকাহিনীই উচ্চারণ করতে হয়। আমার ভ্রমণগদ্যে আর যা-ই থাকুক, ‘কাহিনী’ থাকে কম। ’
আরো পড়ুন:
বইমেলায় হট্টগোল, উপদেষ্টা ফারুকীর কড়া বার্তা
বইমেলায় হট্টগোল: ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
ভ্রমণে মূলত কী খোঁজেন, কেন ভ্রমণ করেন? জানতে চাইলে এই লেখক বলেন, ‘‘অদেখা সুন্দর ছাড়া আর কী খুঁজব ঘরের বাইরে গিয়ে! শস্যবতী ধানখেতে দোলা দেওয়া বাতাস, নীরবে ফুটে থাকা নাম না জানা ফুল, জলাশয়ে হাঁসের অবাধ সন্তরণ, গাছের ডালে মাছরাঙার ধ্যানী-শিকারি দৃষ্টি, পাখির কিচিরমিচির, গৃহস্থের পোষা গবাদি পশু-পাখির চাঞ্চল্য, হরেক রকম পাখপাখালির কূজন.
ভ্রমণে বড় কোনো প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়নি কখনো জানিয়ে ভ্রমণপিয়াসী এই লেখক বলেন, ‘জীবনের সঙ্গে লড়াইয়ের মাঠে মানুষ বরাবরই স্বতন্ত্র, একা। এই বিশ্ব-প্রতিবিম্ব উপলব্ধির চেষ্টা করি। এটাও আবিষ্কার করি, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী অতিথি আপ্যায়নের কী চূড়ান্ত নজিরই-না স্থাপন করেন রূপসী বাংলার ততোধিক সুন্দর মানুষ! পরোপকারি মনোভাবজনিত সহযোগিতা ও আতিথ্যের তুলনা হয় না। অল্প-বিস্তর নেতিবাচক ঘটনা যে ঘটে না, তাও কিন্তু নয়! এসবই দেখি, উপলব্ধি করি; জাগিয়ে ও ভাসিয়ে রাখি নিজেকে। চিহ্নিত করে চলি স্বদেশ-সমকালের যাপনচিত্র। আর বুকভরে টেনে নিই নতুন বাতাস, বৈচিত্র্যপূর্ণ নবীন আলো-জল।’
লেখক জানান, বইটিতে স্থান পাওয়া কোনো কোনো ভ্রমণকাহিনী বর্তমান সময়ে লেখা হলেও অধিকাংশই দশ থেকে পনেরো বছর আগের। আবার একাধিকবার গিয়েছেন এমন জায়গাও আছে। লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। সেই সময়টাকে ফ্রেমবন্দি করে রাখবেন বলে ‘হালনাগাদ’ করেননি। তাই কোনো কোনো বর্ণনা ও ঘটনা ওই সময়ের চোখ দিয়েই পড়তে হবে, বুঝতে হবে।
পাঠক প্রতিক্রিয়া আপাতত ভালোই। এই ভ্রমণবইয়ে পাঠক বাংলাদেশকে কতটুকু দেখতে সমর্থ হবেন, জানা নেই। কতটুকু আনন্দিত বা ব্যথিত হবেন, তাও তো বোঝার উপায় নেই লেখকের পক্ষে! তবে ইতিবাচক সাড়া পেলে শীঘ্রই দ্বিতীয় ভ্রমণগ্রন্থ লেখায় হাত দেবেন শফিক হাসান।
প্রাপ্তিস্থান: দেখি বাংলার মুখ বইটির প্রকাশক অনুপ্রাণন প্রকাশন। বইমেলায় স্টল নম্বর: ৬৯৫-৬৯৬-৬৯৭।
১৪৪ পৃষ্ঠার (৯ ফর্মা) এই বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছেন আইয়ুব আল আমিন। মুদ্রিত মূল্য : ৪০০ টাকা।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণক হ ন বইম ল য়
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫