যুদ্ধ বন্ধে জিনপিংয়ের সহায়তা চান ট্রাম্প
Published: 12th, February 2025 GMT
চতুর্থ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি তা রক্ষা করতে পারেননি। এখন এই সংকট মোকাবিলায় চীনের সহায়তা চাচ্ছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধরত দু’পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে মত তাঁর। খবর সিএনএনের।
গত মাসে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ট্রাম্প বলেন, আশা করি, চীন এই যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে আমাদের প্রচেষ্টায় যোগ দেবে। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এটিকে কাজে লাগিয়ে এই দ্বন্দ্ব মেটানো সম্ভব। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করব। এ বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
যদিও ট্রাম্প চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাকে জটিল করে তুলেছেন। এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যস্থতা করতে জিনপিং রাজি হবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষকরা। তবে বিরল পদক্ষেপ হলেও বেইজিং উদ্যোগটি নিতে পারে। কারণ, তারা ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সংঘাত এড়াতে চাচ্ছেন।
মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক স্টিমসন সেন্টারের ইউন সান বলেন, আমার মনে হয়, মধ্যস্থতার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নতির আশা দেখালে বেইজিং প্রস্তাব লুফে নেবে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে তার জোটকে দুর্বল করার বিষয়ে বেইজিং সতর্ক থাকবে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্য হিসেবে ন্যাটো সদরদপ্তরে প্রথম সফর করছেন। ইউরোপীয় মিত্ররা ইউক্রেন সরকারকে ওয়াশিংটন কতটা সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিতে চায়, তা জানার জন্য অপেক্ষা করছে। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউক্রেন প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপের বৈঠকের আগে হেগসেথ যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলির সঙ্গে আলোচনা করেন। হেগসেথের পূর্বসূরি লয়েড অস্টিন ২০২২ সালে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তার জন্য ফোরামটি প্রতিষ্ঠা করেন।
এদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। কিয়েভের মেয়র জানিয়েছেন, বুধবার ভোরে চালানো এই হামলায় আহতদের মধ্যে ৯ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।