কীর্তনখোলায় তেলবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ড, গুরুতর দগ্ধ ৪
Published: 12th, February 2025 GMT
বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের ইঞ্জিনে আগুন লেগে চারজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় কীর্তনখোলার চাঁদমারী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিদগ্ধ চারজন হলেন মো. রুবেল (২৫), মোহাম্মদ মানিক (৩০), সম্পদ (২২) ও মো.
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা সানজিদা ইসলাম বলেন, দগ্ধ ৪ জনের প্রত্যেকের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যায় কীর্তনখোলা নদীসংলগ্ন চাঁদমারী এলাকায় যমুনা পেট্রোল ডিপো থেকে একটি জাহাজে ড্রামভর্তি জ্বালানি তেল ও ব্রয়লার মুরগির খাবার তোলা হচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয় তেলের কয়েকটি ড্রামে। এতে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো জাহাজটি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের নৌযান ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে জাহাজের ছয় কর্মচারীর মধ্যে চারজন গুরুতর দগ্ধ হন।
মেসার্স রশিদ এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন এমবি রাশেদা-রহিমা কার্গো জাহাজের কর্মচারী আমজাদ হোসেন জানান, তাঁরা প্রতি সপ্তাহে বরিশাল থেকে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে হাতিয়ায় যান। আজ সন্ধ্যায় ৭৮ ব্যারেল পেট্রোল, মুরগির খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হাতিয়ার উদ্দেশে কার্গোটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইঞ্জিন চালু করতে গেলে হঠাৎ ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এ সময় কার্গো জাহাজে থাকা পেট্রোলের ড্রামে আগুন ধরে যায়। এতে মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো জাহাজে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতায় দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন জাহাজের কর্মচারীরা। এ সময় কয়েকজন শ্রমিক ও কর্মচারী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের রক্ষা করতে পারলেও চারজন ভেতরে আটকা পড়ে গুরুতর দগ্ধ হন।
আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আকস্মিক আগুন ধরে যাওয়ার পর আমরা অনেকটা দিগ্ভ্রান্ত হয়ে পড়ি। এরপর আগুনের তীব্রতা এতটাই বেড়ে যায় যে তা নিয়ন্ত্রণের সাধ্য ছিল না। পরে আমি ও অপর এক স্টাফ দুলাল হোসেন ঝাঁপ দিয়ে নদীতে পড়ে জীবন রক্ষা করি। গুরুতর আহত চারজনকে প্রথমে শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। ঘটনাস্থল ছেড়ে কার্গোটি ভাসিয়ে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, ঘটনাটি কী কারণে ঘটেছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
ঝিনাইদহের শৈলকূপায় গাছ থেকে পড়ে খায়রুল ইসলাম (৫৫) নামে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দুধসর গ্রামে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। খায়রুল একই উপজেলার খন্দকবাড়িয়া গ্রামের মুকাদ্দেস আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, খায়রুল আজ সকালে গাছ কাটার জন্য দুধসর গ্রামের হাজরাতলায় যান। বেলা ১১টার দিকে একটি গাছের ডাল কাটার সময় পা পিছলে তিনি নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক খায়রুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ
আশুগঞ্জ সার কারখানায় গ্যাস সংযোগের দাবিতে সমাবেশ
দুধসর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, হাজরাতলায় একটি রেইনট্রি গাছ কাটার সময় খায়রুল নামে এক শ্রমিক গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুত্ব আহত হন। সবাই মিলে তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান জানান, গাছ থেকে পড়ে এক কাঠ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ