দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, নৈরাজ্য এবং এসব ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। এখনো নানা প্রকাশনীর ওপর যেভাবে খবরদারি করা হচ্ছে উল্লেখ করে এই কমিটি বলেছে, এটা যদি অব্যাহতভাবে চলতে থাকে, তাহলে শেখ হাসিনার আমলের সঙ্গে এই সরকারের পার্থক্য কীভাবে তৈরি হবে?

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সাধারণ সভা হয়। সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, চিকিৎসক হারুন অর রশিদ, শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, সামিনা লুৎফা, মাহা মির্জা প্রমুখ অংশ নেন। এই সভা থেকে সম্প্রতি শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর বর্বরোচিত পুলিশি হামলার নিন্দা জানানো হয়। আগাগোড়া সংস্কার ছাড়া পুলিশের আচরণের যেকোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়, সে বিষয়েও সভায় সবাই একমত পোষণ করেন।

সভা শেষে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বইমেলায় যেভাবে আগাম ঘোষণা দিয়ে স্টলে হামলা হচ্ছে, পুলিশের উপস্থিতিতে মাস্তানি দেখানো হচ্ছে এবং সরকার যে এই গোষ্ঠীকে কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ করছে না— সভায় তার তীব্র সমালোচনা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখনো নানা প্রকাশনীর ওপর যেভাবে খবরদারি করা হচ্ছে, সেটা যদি এভাবে অব্যাহতভাবে চলতে থাকে, তাহলে হাসিনার আমলের সঙ্গে এই সরকারের পার্থক্য কীভাবে তৈরি হবে? বইমেলার এসব ঘটনায় গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি গভীর উদ্বেগ জানায় এবং সরকারের পক্ষ থেকে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায়।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আয়নাঘর পরিদর্শন বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু ভুক্তভোগী ও অল্প গণমাধ্যম সহযোগে হলেও শেষ পর্যন্ত যে সরকার আয়নাঘর পরিদর্শন করতে পেরেছে, সে জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি সরকারকে অভিনন্দন জানায়; কিন্তু কমিটি এটাও সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চায় যে আয়নাঘরের আলামত যারা নষ্ট করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও সরকারকে অবস্থান নিতে হবে। শুধু তা–ই নয়, দেশের সব গোপন আয়নাঘরকে উন্মুক্ত করা এবং যেসব বাহিনীর কার্যালয়ে এসব আয়নাঘর ছিল, সেসব গুমের সঙ্গে জড়িত বাহিনীকে বিলুপ্ত করার দাবি জানায় কমিটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসিনার আমলে ফ্যাসিবাদের অন্যতম সহযোগী হেফাজতে ইসলামের হুমকিতে টাঙ্গাইলে লালন স্মরণানুষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। কমিটি মনে করে, সরকারের উচিত অবিলম্বে লালনের স্মরণে যে অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে, সেটি পুনরায় আয়োজনের ব্যবস্থা করা এবং যারা এটা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা স্বীকৃত দেশবরেণ্য ব্যক্তিদের নামে থাকা বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তন করার ঘোষণা নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, দেশবরেণ্য বিজ্ঞানী, কবি ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে থাকা ভবনের নাম পরিবর্তন করতে পারেন একমাত্র তাঁরাই, যাঁরা চরম সাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যাকারীদের অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন। কমিটি এর তীব্র নিন্দা জানায়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট নগরে প‌্যাডেলচা‌লিত রিকশা ভাড়া ন্যূনতম ২০, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা

সিলেট নগরে প্যাডেলচালিত রিকশার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া তা‌লিকা প্রকাশ করেছে মহানগর পুলিশ। তালিকা অনুযায়ী ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ভাড়া ২০২৭ সা‌ল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

আজ সোমবার সকালে মহানগর পু‌লিশের ক‌মিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী স্বাক্ষ‌রিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে যাতায়াতের জন্য নতুন করে প্রস্তাবিত রিকশা ভাড়ার হার নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাড়ার তালিকা প্রণয়নের সময় নগরের রাজনীতিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, চাকরিজীবী, ছাত্র-ছাত্রী, প্যাডেল রিকশা সমিতি, সাধারণ জনগণের প্রতি‌নিধিদের মতামত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০১৫ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ প‌্যাডেলচা‌লিত রিকশা ভাড়ার তালিকা ‌নির্ধারণ করে‌ছিল। তবে ওই ভাড়া তা‌লিকা শুরু থেকে মেনে নেন‌নি রিকশাচালকেরা। এর ১০ বছর পর পু‌লিশের পক্ষ থেকে রিকশা ভাড়া পু‌ন‌র্নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুন‌র্নির্ধা‌রিত প্রস্তাবিত ভাড়া তালিকায় দেখা গেছে জিন্দাবাজার মোড় (পয়েন্ট) থেকে লামাবাজার, মিরাবাজার, আম্বরখানা, ভাতালিয়া পর্যন্ত ৩০ টাকা। সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, ঈদগাহ, শেখঘাট পর্যন্ত ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ, ওসমানী মেডিকেল পর্যন্ত ৫০ টাকা। বালুচর, টিলাগড়, বাগবাড়ি, চৌকিদেখি, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট পর্যন্ত ৬০ টাকা।

কোর্ট পয়েন্ট থেকে টিলাগড় পর্যন্ত ৬০ টাকা। শিবগঞ্জ, নতুন ব্রিজ ৪০ টাকা। মিরাবাজার ও যতরপুর ৩০ টাকা। উপশহর (এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, জি, এইচ, আই, জে, কে ব্লক) ৫০ টাকা। নতুন ব্রিজ হয়ে দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল ৭০ টাকা। রেলও‌য়ে স্টেশন, গোপশহর মকন দোকান, গোয়াবাড়ি, আখালিয়া ‌বি‌জি‌বি ক্যাম্প গেট, ভাঙ্গাটিকর, টুলটিকর, মিরাপাড়া পর্যন্ত ৮০ টাকা। ঝেরঝেরিপাড়া, শিবগঞ্জ সোনাপাড়া, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, উত্তর কাজীটুলা, গোয়াইটুলা, আম্বরখানা, মাহিমপুর, দর্শন দেউরী, সুবিদবাজার, ভাতালিয়া, ওসমানী মেডিকেল, কুমারপাড়া (ঝরনারপাড়) ৫০ টাকা। দর্জিবন্দ, শাহী ঈদগাহ, লেচুবাগান, হাউজিং এস্টেট, লন্ডনী রোড ও পাঠানটুলা, বাগবাড়ি, বর্ণমালা পয়েন্ট, এতিম স্কুল, নবাব রোড (শেখঘাট পিচের মুখ, কলাপাড়া ডহর), ঘাসিটুলা বেতেরবাজার, আম্বরখানা, কলবাখানী, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর ৫০ টাকা। জল্লারপাড়, তোপখানা ২০ টাকা।

এ ছাড়া কোর্ট পয়েন্ট থেকে নতুন ব্রিজ হয়ে কদমতলী, লাউয়াই, বিসিক শিল্পনগরী, বরইকান্দি, চৌকিদেখি, লাক্কাতুরা, শাপলাবাগ ৭০ টাকা। কাজীটুলা, রাজারগলি, শাহজালাল দরগাহ গেট, মিরের ময়দান, শেখঘাট, রিকাবীবাজার, দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, পশ্চিম কাজিরবাজার, ছড়ারপার, কুমারপাড়া পয়েন্ট, মিরাবাজার আগপাড়া, সোবহানীঘাট, চালিবন্দর ৩০ টাকা। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গেট ৯০ টাকা। কুমারগাঁও বাস টার্মিনাল ১০০ টাকা। খোজারখোলা, সরকারি কলেজ ছাত্রাবাস, বালুচর, বাদাম বাগিচা, মদিনা মার্কেট, কানিশাইল খেয়াঘাট, পীর মহল্লা কুশিঘাট ৬০ টাকা।

আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সুবিদবাজার, শাহী ঈদগাহ, কাজীটুলা ২০ টাকা। মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, চৌকিদেখি ৩০ টাকা। লাক্কাতুরা, মিরাবাজার, নয়াসড়ক ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ ৬০ টাকা। টিলাগড়, উপশহর (এবিসি পয়েন্ট), নতুন ব্রিজ ৬০ টাকা।

শিবগঞ্জ পয়েন্ট থেকে টিলাগড়, সেনপাড়া, খরাদিপাড়া ২০ টাকা। নতুন ব্রিজ, বালুচর ৩০ টাকা। ঈদগাহ ৫০ টাকা। আম্বরখানা, লামাবাজার, শেখঘাট ৬০ টাকা। পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, ওসমানী মেডিকেল, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, শেখঘাট, সুবিদবাজার ৭০ টাকা এবং কদমতলী বাস টার্মিনাল ৮০ টাকা।

দক্ষিণ সুরমা কিনব্রিজ থেকে রেলগেট ২০ টাকা। হুমায়ুন রশীদ চত্বর, টেকনিক্যাল, পর্যন্ত লাউয়াই ৩০ টাকা। শিববাড়ি ও গোটাটিকর পর্যন্ত ৪০ টাকা। বরইকান্দি ও আলমপুর পর্যন্ত ৫০ টাকা এবং মকন দোকান পর্যন্ত ৭০ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত রুটের বাইরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ গজের জন্য অতিরিক্ত ১০ টাকা ভাড়া প্রযোজ্য হবে। তবে নির্ধারিত রুটে উল্লিখিত নয় এমন নিকটবর্তী গন্তব্যে যাত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ