রঘুনন্দন পাহাড়ে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারী
Published: 14th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ওলিপুর রেলওয়ে গেটের অদূরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাশে রেল ও সড়ক পথের মাঝামাঝি সরকারি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে।
একাধারে এ অবস্থা চলতে থাকায় স্থানটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে আশপাশের বাড়ির লোকজন ও পথচারীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এর ফলে হুমকিতে পড়েছে পাহাড়সহ আশপাশের পরিবেশ। প্রতিকার করতে এগিয়ে আসছেন না কেউ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দুর্ভোগের শিকার হওয়া লোকজন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দেখা যায়, পিকআপ ভর্তি করে ময়লা এনে এ স্থানে ফেলা হচ্ছে। সেসব ময়লার দুর্গন্ধে এ স্থান দিয়ে যাতায়াত কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে।
পিকআপ চালক আব্দুস ছাত্তার জানান, এসব ময়লা ওলিপুর বাজারের। টাকার বিনিময় তিনি গাড়ি ভরে ময়লা এখানে ফেলে যান। শ্রমিকরাও মজুরি পেয়ে এখানে ময়লাগুলো ফেলে যাচ্ছে। এখানে তার কিছু করার নেই।
বিস্তারিত জানতে হলে ওলিপুর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরুল ইসলাম সরদারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
এসব ময়লা ওলিপুর বাজারের।
বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরুল ইসলাম সরদার বলেন, “ময়লা ফেলানোর আর কোন স্থান নেই। তাই ময়লাগুলো ওখানে ফেলা হচ্ছে। দ্রুত যেন সরকারিভাবে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করে দেওয়া হয়। তাহলে আর ওই স্থানে ময়লা ফেলতে হবে না।”
এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, “ময়লার দুর্গন্ধে বাড়িতে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।”
ব্যাটারি চালিত টমটম চালক বাচ্চু মিয়া বলেন, “ময়লার দুর্গন্ধে এ পথে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত এর প্রতিকার দেখতে চাই।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “রঘুনন্দন পাহাড়টি পরিবেশ রক্ষায় বিরাট ভূমিকা পালন করছে। পাহাড়, সড়ক ও রেলপথের পাশে খোলা স্থানে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলা ঠিক হচ্ছে না। এতে পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরাট প্রভাব পড়ছে। এছাড়া দুর্গন্ধে পথচারী ও আশপাশের লোকজন নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ময়লা ফেলার জন্য অন্যত্র ডাম্পিং স্টেশন করে ময়লা ফেলা হোক।”
শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পথ) ফিরোজ আহমেদ বলেন, “শুনেছি রেলপথের পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পূর্ত) কর্মকর্তা মিঠুন দাস।”
ময়লা ফেলানোর ফলে পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরাট প্রভাব পড়ছে।
ঊর্ধ্বতন উপ-প্রকৌশলী (পূর্ত) কর্মকর্তা মিঠুন দাস বলেন, “বিষয়টি জেনে পরবর্তীতে জানানো যাবে। এর আগে সঠিক করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত শাহজিবাজার রাবার বাগানের ব্যবস্থাপক নন্দী গোপাল রায় জানান, ময়লা রেলওয়ের জায়গায় ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে এ পাহাড়ের আশেপাশেও। তাই বাগানে শ্রমিকরা কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহন মিয়া বলেন, “এখানে ময়লা ফেলানোর কথা উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি বরাদ্দে দ্রুত ডাম্পিং স্টেশন করে দেওয়া হবে। তাহলে স্থায়ীভাবে এখানের সমস্যার সমাধান আসবে।”
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পল্লব হোম দাস বলেন, “বিষয়টি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কারো ক্ষতি করে ময়লা ফেলা যাবে না।”
ঢাকা/মামুন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ অবস থ র লওয় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।