ছুটির দিনে জমজমাট চট্টগ্রাম বইমেলা, বাড়বাড়ন্ত ভিড়
Published: 14th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে অমর একুশে বইমেলা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে মেলায় বাড়বাড়ন্ত ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লেখক, পাঠক, সংস্কৃতিকর্মী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ মেলায় ভিড় জমিয়েছেন। বিকেলের পর থেকে স্টলগুলোর সামনে দীর্ঘ সারি, লেখকদের সঙ্গে আড্ডা, অটোগ্রাফ সংগ্রহ, সেলফি এবং মুখরোচক খাবারের আয়োজন মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
মেলায় শিশুদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। মা-বাবা বা শিক্ষকের হাত ধরে বইমেলায় আসছে ছোট্ট সোনামনিরা। শিশুতোষ বইয়ের বিক্রি বাড়ছে, পাশাপাশি গল্প-উপন্যাসের বইও পাঠকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে, কবিতার বইয়ের বিক্রি তুলনামূলক কম থাকলেও কবিতাপ্রেমীরা স্টল ঘুরে দেখছেন।
এবারের বইমেলায় মোট ১৪১টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্য, ইউপিএল, কথাপ্রকাশ, অন্যপ্রকাশ, অনন্যা, ঝিনুক, গ্রন্থরাজ্য, অ্যাডর্ন, শিখা, সিয়ান, জ্ঞানকোষ, বেঙ্গল বুকস, পাঞ্জেরী, স্বাধীন, মনন, বিদ্যানন্দ, তৃতীয় চোখ, রোদেলা, আদর্শ, জলধি, কিংবদন্তীসহ দেশবরেণ্য অনেক প্রকাশনা সংস্থা। ইসলামিক বইয়ের মধ্যে তরজুমান, দ্বীন দুনিয়া, মাইজভাণ্ডারী, আলোকধারা, রাহনুমা, মাকতুবাতুল আসলাফ, রুহানা, আয যিহান ইত্যাদির স্টলে ভক্তদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থার বিশেষায়িত স্টলগুলোর মধ্যে স্বাধীন, খড়িমাটি, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব, মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র, জিয়া স্মৃতি পাঠাগার উল্লেখযোগ্য।
চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি ও বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন হাসান বাবু বলেন, “মেলায় প্রতিদিন পাঠকের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সামনের দিনগুলোতেও এই ভিড় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাঠকদের মধ্যে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গবেষণা, শিশুতোষ, ক্যারিয়ার ও মোটিভেশনাল বইয়ের চাহিদা বেশি। প্রকাশকরাও বেশ সন্তুষ্ট। কারণ, বই বিক্রি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হচ্ছে।”
গত ১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় ও সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এক লাখ বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত এ বইমেলা চট্টগ্রামের সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য হয়ে উঠেছে এক মহামিলনের কেন্দ্রস্থল।
আগামী দিনগুলোতে পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আয়োজকদের আশা। বইপ্রেমীরা মেলায় এসে প্রিয় লেখকের বই সংগ্রহের পাশাপাশি নিজেদের জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছেন।
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইয় র বইম ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় এক নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিকের চেয়ারম্যান ও আবাসিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নবজাতকসহ তাদেরকে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়া হয়। ওই রাতেই শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম হাসপাতালে) নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসক পার্থ সমদ্দার কলাপাড়া পৌর শহরের জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক এবং চেয়ারম্যান।শিশুটির
স্বজনদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রসব বেদনা নিয়ে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন লালুয়ার ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে ও রফিকুলের স্ত্রী মিম বেগম। ওই রাতেই মিমের সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. পার্থ সমদ্দার। সিজারের কিছুক্ষণ পরই টিকার কথা বলে নবজাতকের পায়ে একটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরের দিন থেকেই নবজাতকের বাম পা ফুলতে শুরু করে এবং কান্না বাড়তে থাকে। বিষয়টি চিকিৎসক ও নার্সদেরকে অবহিত করলে তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো ওই ক্লিনিকের কর্মী ও নার্সরা নবজাতকের স্বজনদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি তাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন। পরে অন্যত্র এক্সরে করে জানা যায়, সিজারের সময় নবাজতকের পা ভেঙে ফেলেছেন চিকিৎসক।
নবজাতকের মা মিম আক্তার বলেছেন, বাচ্চা অনবরত কান্না করলে প্রথমে নার্স ও পরে চিকিৎককে অবহিত করা হয়। বাচ্চার বাম ফুলে গেলে তা জানানো হয়। কিন্তু, তারা এর কোনো প্রতিকার না করে আমাদের ধমকাতে থাকেন। ক্লিনিক ছেড়ে চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন।
নবজাতকের নানা সিদ্দিক বলেন, টিকার কথা বলে আমার নাতিকে শরীর অবশ করার ইনজেকশন দিয়েছিল নার্সরা। ইনজেকশনের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার পরপরই আমার নাতি অনেক কান্না করে। আমার স্ত্রী নার্সদের বললে তারা তাকে মারধরের চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে ক্লিনিকের সবাই অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্মকর্তারাও যদি অসদাচরণ করে, তাহলে আমরা কোথায় যাব?
সিজারের সময় নবজাকের পা ভাঙেনি, দাবি করে জমজম ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ সমদ্দার বলেছেন, আমি শিশু বিশেষজ্ঞ নই। নবজাতককে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেছেন, যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রশিক্ষণ থাকে, তাহলে এনেস্থেসিস্টও সিজার করতে পারেন। তবে, এনেস্থেসিস্ট একাই সিজারিয়ান অপারেশন করতে পারেন না।
ঢাকা/ইমরান/রফিক