রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তী ও ওয়াশিংটন সুন্দর—চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে ভারতের বোলিং বিভাগে আছেন এই পাঁচ স্পিনার। ১৫ জনের দলে এত বেশি স্পিনার রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সদ্য সাবেক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

তাঁর মতে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত এমন কোনো ভেন্যুতে খেলবে না, যেখানে স্পিনাররা বেশি টার্ন পাবেন। যশস্বী জয়সোয়ালের মতো ব্যাটসম্যানকে জায়গা না দিয়ে বেশি স্পিনার রাখার কারণ বুঝতে পারছেন না বলে মন্তব্য অশ্বিনের।

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হলেও ভারত তাদের সব ম্যাচ খেলবে দুবাইয়ে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের পর সম্ভাব্য সেমিফাইনাল, ফাইনালও। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘অ্যাশ কি বাত’–এ অশ্বিন ভারতীয় দলে স্পিনারদের আধিক্য নিয়ে বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না আমরা কেন এত বেশি স্পিনার দুবাইয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ৫ স্পিনারকে দলে জায়গা দিয়েছি, জয়সোয়ালকে বসিয়ে রেখেছি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বাইরে সফরে গেলে আমরা ৩–৪ জন স্পিনার নিয়ে যাই। কিন্তু দুবাইয়ে ৫ স্পিনার? আমি জানি না। আমার মনে হয়, দুজন না হলেও অন্তত একজন স্পিনার বেশি হয়ে গেছে।’

কেন দুবাইয়ের জন্য ৫ জন স্পিনার বেশি হয়ে যায়, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা অশ্বিন, ‘কুলদীপ যাদব তো খেলবেই। তাহলে বরুণের জন্য কীভাবে জায়গা বের করবেন? সে বোলিং ভালো করে। দুজনকে একসঙ্গে খেলানো যায়। যেটা আমার কাছে ভালোই মনে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দুবাইয়ে বল কি খুব বেশি টার্ন করে? কিছুদিন আগে আইএলটি–টোয়েন্টি শেষ হলো। তখন তো দুবাইয়ে বল তেমন একটা টার্ন করতে দেখলাম না। দলগুলো ১৮০ রানও খুব সহজে তাড়া করেছে। (ভারতের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির) দল নিয়ে আমার অস্বস্তি হচ্ছে।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে। গ্রুপ পর্বে রোহিত শর্মাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে বাংলাদেশ স্কোয়াডে স্পিনার আছে তিনজন—মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন।

পেসনির্ভর পাকিস্তান দলে একমাত্র নিয়মিত স্পিনার আবরার আহমেদ। আর নিউজিল্যান্ড দলে নিয়মিত স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। অবশ্য ভারত ছাড়া অন্য দলগুলো পাকিস্তানের মাটিতেও খেলবে।

পাকিস্তানের তুলনায় দুবাই তুলনামূলক স্পিনবান্ধব হলেও সেখানে ৫ জন স্পিনারের যৌক্তিকতা দেখেন না অশ্বিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন স প ন র

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ