না’গঞ্জ প্রেসক্লাবের সাথে হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত পরিষদের মতবিনিময়
Published: 15th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত পরিষদ। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপু ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েনের নব-নির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান বদু, সহ-সভাপতি (জেনারেল) আব্দুস সবুর খান সেন্টু, সহ-সভাপতি (এসোসিয়েট) সাঈদ আহম্মেদ স্বপন, পরিচালক মো.
সাংবাদিকদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, কার্যকরী সদস্য আবু সাউদ মাসুদ, মাহফুজুর রহমান,আব্দুস সালাম, প্রেসক্লাব সদস্য তমিজ উদ্দিন আহমেদ, এম আর কামাল, নাফিজ আশরাফ, আমির হোসাইন স্মিথ, প্রণব কৃষ্ণ রায়, মো. সাইফুল ইসলাম সায়েম, এমরান আলী সজীব প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েনের যে কোনো ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সর্বদা তাঁদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব। বিপরীতে, ব্যবসায়ী সংগঠনটির নেতারাও সর্বদা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান বদু বলেন, দীর্ঘ সময় স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে বন্দি ছিলো হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। অনেকে আমাকে বলেছিলো এসোসিয়েশনটি আমার দখলে নিতে এবং পরিচালনা করতে।
আমি ব্যবসায়ীদের বলেছি, আপনারা যদি ভোটে আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলেই আমি এসোসিয়েশনের দায়িত্ব নিবো। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাররা আমাকেসহ আমার পুরো প্যানেলকেই জয়ী করেছে, এজন্য আমি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
এছাড়া, ভোটে যাতে কেউ কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও সাংবাদিক ভাইদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা হতো বলে জেনেছি। ভোটার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কারণে আমরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে হোসিয়ারি এসোসিয়েনের এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও আমি সরাসরি ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা যে গুরু দায়িত্ব আমার কাঁধে দিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় আমি সেই দায়িত্ব পালনে প্রেসক্লাবসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। এছাড়া, সর্বদা প্রেসক্লাবের পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রেসক্লাব কার্যকরী পরিষদ সদস্য আবু সাউদ মাসুদ বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এই প্রথম একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এসেছে।
প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন বলেন, বিগত সময়ে সারা দেশের মতো হোসিয়ারী এসোসিয়েশনেও আমরা নির্বাচন হতে দেখিনি। একটি পক্ষ নিজেদের লোক দ্বারাই বিনা ভোটে বারবার এই সংগঠনটিকে পরিচালনা করতো।
তবে, এবার অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিজয়ী প্রার্থী এবং পরাজিত প্রার্থী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে নির্বাচিত পরিষদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দীপু। একইসাথে, হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের যে কোনো ভালো উদ্যোগে প্রেসক্লাব সর্বদা পাশে থাকবে বলে জানান এই সাংবাদিক নেতা।
মতবিনিময় সভা শেষে হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত পরিষদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ত ব যবস য় র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।