নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত পরিষদ। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপু ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েনের নব-নির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান বদু, সহ-সভাপতি (জেনারেল) আব্দুস সবুর খান সেন্টু, সহ-সভাপতি (এসোসিয়েট) সাঈদ আহম্মেদ স্বপন, পরিচালক মো.

দুলাল মল্লিক, আতাউর রহমান, মো. মিজানুর রহমান, মো. মনির হোসেন, হাজী মো. শাহীন, মো. আব্দুল হাই, বৈদ্যনাথ পোদ্দার, মো. মাসুদুর রহমান, মো. পারভেজ মল্লিক।

সাংবাদিকদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, কার্যকরী সদস্য আবু সাউদ মাসুদ, মাহফুজুর রহমান,আব্দুস সালাম, প্রেসক্লাব সদস্য তমিজ উদ্দিন আহমেদ, এম আর কামাল, নাফিজ আশরাফ, আমির হোসাইন স্মিথ, প্রণব কৃষ্ণ রায়, মো. সাইফুল ইসলাম সায়েম, এমরান আলী সজীব প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েনের যে কোনো ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সর্বদা তাঁদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব। বিপরীতে, ব্যবসায়ী সংগঠনটির নেতারাও সর্বদা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত সভাপতি বদিউজ্জামান বদু বলেন, দীর্ঘ সময় স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে বন্দি ছিলো হোসিয়ারী এসোসিয়েশন। অনেকে আমাকে বলেছিলো এসোসিয়েশনটি আমার দখলে নিতে এবং পরিচালনা করতে।

আমি ব্যবসায়ীদের বলেছি, আপনারা যদি ভোটে আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলেই আমি এসোসিয়েশনের দায়িত্ব নিবো। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটাররা আমাকেসহ আমার পুরো প্যানেলকেই জয়ী করেছে, এজন্য আমি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এছাড়া, ভোটে যাতে কেউ কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও সাংবাদিক ভাইদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা হতো বলে জেনেছি। ভোটার, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কারণে আমরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে হোসিয়ারি এসোসিয়েনের এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও আমি সরাসরি ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা যে গুরু দায়িত্ব আমার কাঁধে দিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় আমি সেই দায়িত্ব পালনে প্রেসক্লাবসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। এছাড়া, সর্বদা প্রেসক্লাবের পাশে থাকারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রেসক্লাব কার্যকরী পরিষদ সদস্য আবু সাউদ মাসুদ বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এই প্রথম একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এসেছে।

প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন বলেন, বিগত সময়ে সারা দেশের মতো হোসিয়ারী এসোসিয়েশনেও আমরা নির্বাচন হতে দেখিনি। একটি পক্ষ নিজেদের লোক দ্বারাই বিনা ভোটে বারবার এই সংগঠনটিকে পরিচালনা করতো।

তবে, এবার অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিজয়ী প্রার্থী এবং পরাজিত প্রার্থী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে নির্বাচিত পরিষদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দীপু। একইসাথে, হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের যে কোনো ভালো উদ্যোগে প্রেসক্লাব সর্বদা পাশে থাকবে বলে জানান এই সাংবাদিক নেতা।

মতবিনিময় সভা শেষে হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের নব-নির্বাচিত পরিষদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ত ব যবস য় র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ