ফরচুন বরিশালে নাজমুল হোসেন শান্ত টিম কম্বিনেশনের কারণে পরের দিকে ম্যাচ না পেলেও রিজার্ভ বেঞ্চে বসেও রিশাদ হোসেনকে সাপোর্ট করে গেছেন। তিনি মনেপ্রাণে চেয়েছেন, রিশাদ ভালো করুক। জাতীয় দলের একমাত্র লেগি ভালো করেছেনও। ফাইনাল ম্যাচে ‘ফিনিশিং টাচ’ তাঁর ব্যাটেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে দুবাই যাওয়ার সন্ধ্যায় বিপিএল, জাতীয় দল, বোলিংয়ে উন্নতি ও ভেরিয়েশন নিয়ে বলা রিশাদ হোসেনের কথাগুলো শুনেছেন সেকান্দার আলী।
সমকাল: বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচের ‘আনসাং হিরো’ আপনি। শেষের দিকে দুটি ছয় না মারলে বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হয় না। ফাইনালের মতো ম্যাচে দলের প্রত্যাশা মেটাতে পেরে কতটা আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন?
রিশাদ: যে কোনো জয় আত্মবিশ্বাস দেয়। ভালো করলে নিজের উপকারে আসে। ফাইনাল জেতার মধ্য দিয়ে আমিও একটা আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে কী করতে হয়, নার্ভ কতটা শক্ত রাখতে হয়; তা বুঝতে পেরেছি। আমরা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই আন্তর্জাতিকের জন্য প্র্যাকটিস করি। এবারের ফাইনালের অভিজ্ঞতা জাতীয় দলে কাজে লাগাতে চেষ্টা করব পরিস্থিতি তৈরি হলে।
সমকাল: আগের বিপিএলে আপনি অনিয়মিত ছিলেন। এবার বরিশালে নিয়মিত খেলেছেন। এই সুযোগ পাওয়া নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই।
রিশাদ: আলহামদুলিল্লাহ, পুরো টুর্নামেন্ট ভালোই গেছে। আগেরবার অন-অফ ছিলাম। চারটি ম্যাচ খেলেছি। এবার মানসিকভাবে শক্ত ছিলাম। সুযোগ পেলে ভালো খেলার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ফরচুন বরিশালের টিম ম্যানেজমেন্টকে। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য।
সমকাল: সিনিয়র ক্রিকেটারদের সহযোগিতা কেমন ছিল?
রিশাদ: সিনিয়র খেলোয়াড়রা অনেক হেল্প করেছেন। আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। আমিও বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ।
সমকাল: নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, আপনার কাছে আরও বেশি আশা করেন। আপনার কাছে জাতীয় দলের অধিনায়কের প্রত্যাশা আসলে কী?
রিশাদ: আশা তো থাকবেই। তারা আশা করেন, আমি একা হাতে যেন ম্যাচ জেতাতে পারি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং; তিন বিভাগে ভালো খেলি। তাদের প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
সমকাল: দেশে লেগস্পিনার ছিল না। আপনি এখন লেগস্পিনারদের আইকন। ভাবতে কেমন লাগে?
রিশাদ: এভাবে ভাবি না। আমার চেষ্টা থাকে ভালো খেলা। ধারাবাহিক উন্নতি করা। বোলিং ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ করছি। দেশের জন্য ভালো কিছু করতে চাই। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং দিয়ে ভালো করতে পারলে, দলকে জেতাতে পারলেই খুশি।
সমকাল: মুশতাক আহমেদ কী শেখাচ্ছেন?
রিশাদ: তাঁর সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয়। তাঁর কাছ থেকে যতটা পারা যায়, নেওয়ার চেষ্টা করছি। বড় দলের বিপক্ষে, বড় ইভেন্টে কীভাবে ভালো খেলা যায়, সেগুলো নিয়ে কথা বলছি। তাঁর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, কীভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেন, সেগুলো শুনছি।
সমকাল: টেকনিক্যালি, না ট্যাকটিক্যাল বিষয় নিয়ে বেশি কথা হয়?
রিশাদ: বেশির ভাগ মনস্তাত্ত্বিক দিক নিয়ে কথা বলি। অভিজ্ঞতা জানতে চাই। টেকনিক্যালি যা আছে, সেগুলো নিয়ে চলতে পারব। এখান থেকে মেন্টালি সাপোর্ট দিয়ে সেগুলো এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
সমকাল: বোলিংয়ের কোন কোন বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করছেন?
রিশাদ: কিছু ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ করছি। এক-দুই মাসে সেগুলো কার্যকর হবে না। ধাপে ধাপে উন্নতি করে, নিখুঁত করা গেলে সফল হতে পারব। ভেরিয়েশন শেখা খুব সহজ। শেখার পর সেগুলোকে নিখুঁতভাবে কাজে লাগাতে পারা চ্যালেঞ্জিং। ঘরোয়া ক্রিকেটে নতুন স্কিল প্রয়োগ করতে হবে। এক-দু’বার সফল হলেই আত্মবিশ্বাস পাব। আশা করি, সেগুলো সামনে আপনারা দেখতে পাবেন।
সমকাল: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আপনাদের প্রত্যাশা কী?
রিশাদ: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আশা হলো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমাদের এই একটাই বিশ্বাস।
সমকাল: দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু। বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা কেমন?
রিশাদ: ইনশাআল্লাহ ভারতের বিপক্ষেই জিতব। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে প্রতিটি ম্যাচ জিততে হবে। সব ম্যাচ সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে হবে। ভারতের বিপক্ষে জয় পাব ইনশাআল্লাহ।
সমকাল: নিউজিল্যান্ড উপমহাদেশের বাইরের দল। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাদের বিপক্ষে জয়ের অভিজ্ঞতাও আছে। তাদের সঙ্গে কৌশলটা কী থাকবে?
রিশাদ: আসলে কোনো কৌশল কাজে দেবে না নিজেরা ভালো করতে না পারলে। আমরা ভালো করতে চাই। নির্দিষ্ট দিনে ভালো খেলতে পারলে জিতব। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিকে নিজেদের করার চেষ্টা থাকবে। যেহেতু তাদের বিপক্ষে ভালো স্মৃতি আছে, সেটা ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে সাহায্য করবে।
সমকাল: আপনার নিজের পরিকল্পনা?
রিশাদ: সুযোগ পেলে সর্বোচ্চটা দিয়ে ভালো খেলার চেষ্টা করব। নার্ভ শক্ত রেখে খেলব।
সমকাল: পাকিস্তানকে হারাতে পারবেন?
রিশাদ: আমরা ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান সবাইকে হারাব, ইনশাআল্লাহ।
সমকাল: টি২০ বিশ্বকাপে ভালো খেলেছেন। বৈশ্বিক ওয়ানডে টুর্নামেন্টে প্রথম খেলবেন। কোনো একসাইটমেন্ট?
রিশাদ: সবাই সাপোর্ট দিচ্ছেন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে বলছেন। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাই ভালো একটা বিশ্বাস আছে। এর বাইরে কোনো একসাইটমেন্ট নেই।
সমকাল: দলের পরিবেশ কেমন?
রিশাদ: দলের পরিবেশ খুব ভালো। একটি মিশন সফল করার জন্য যে ধরনের মানসিকতা থাকতে হয়, সে রকম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল পর ব শ র জন য ফ ইন ল বর শ ল সমক ল আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস