Samakal:
2025-07-31@21:57:06 GMT

ইউক্রেনে ট্রাম্পের পরিকল্পনা

Published: 16th, February 2025 GMT

ইউক্রেনে ট্রাম্পের পরিকল্পনা

ইউক্রেনের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ‘শান্তি পরিকল্পনা’ উস্কে দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের কাছ থেকে সব কিছু আলোচনার টেবিলে আছে, শুনে খুব ভালো লাগছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট পুতিন কি আলোচনা আয়োজনে ইচ্ছুক? আমি মনে করি, হেগসেথ আলোচনা চালিয়ে যেতে খুব ইচ্ছুক। সৌদি কারিগরদেরও তা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই শান্তি আলোচনা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মাধ্যমে আয়োজন করা যেতে পারে। 

আলোচনার একটি মোটামুটি নির্ভরযোগ্য নীতি রয়েছে। আপনি যদি প্রথমে একটি সংখ্যা বলেন, তবে সেটি ধরে দরকষাকষি শেষ করবেন। আবার যদি অন্য দিক থেকে প্রথমে একটি নম্বর আসে, আপনি সেটি ধরে আলোচনায় এগিয়ে যান। যে কারণেই হোক, আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর আগেই হেগসেথ ইতোমধ্যে ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখল করা বেশির ভাগ বা সব জমি ফিরিয়ে দেওয়া, ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বাদ দিয়েছেন। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের সম্ভাবনা বাতিল করেছে এবং ভবিষ্যতে ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার হুমকি এড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমি মনে করি, ভ্লাদিমির পুতিন সব কিছু মেনে নেবেন এই বলে, ‘আপনাকে আমি ভাড়া করেছি!’

অন্য আগ্রহী পক্ষগুলোকে আরও জোরালোভাবে আত্মসমালোচনা করা উচিত। আমি গতকাল পড়েছি এবং শুনেছি, ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধাবাদী তৎপরতার কারণে কতটা ‘ব্যথিত’ ও বিস্মিত হয়েছেন এবং ভোগান্তিতে পড়েছেন। কিন্তু .

.. কীভাবে? কী ঘটতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে তারা কী ভেবেছিলেন? ট্রাম্প কিন্তু বিষয়গুলো নিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় কথা বলছেন। তিনি বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। কেবল এটুকু বলা যায়, ট্রাম্প হয়তো প্রক্রিয়া শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব করেছেন। উপরন্তু, আমি বলব না, হেগসেথকে বোঝা কঠিন ছিল। আসলে যেসব ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, তাতে আপনি তাঁকে বেশ অক্ষরে অক্ষরে পড়তে পারেন। তাঁর বাহুর বৃহৎ মাংসপেশিতে একটি অ্যাসল্ট রাইফেলের সঙ্গে মার্কিন পতাকা আঁকা এবং চিন্তা-ভাবনার বেশ কয়েকটি সহজ সূত্র তাঁর উভয় হাতের নিচে লেখা। তিন বছর আগে পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইইউ নেতারা ভার্সাইয়ে মিলিত হন। আপনি মনে করতে পারেন, এই স্থানের বৈঠক মানে নেতাদের মনে এই ভাবনার উদয় হয়েছিল, ‘আসুন, আর বাজে কিছু না করি।’ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ঘোষণা করেছিলেন, ১৯১৯ সালের ভার্সাই ইউরোপকে বিভক্ত করছিল, কিন্তু ২০২২ সালের  ভার্সাই ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ করছে। কিন্তু এটি বাস্তবে তেমনটাই ঘটেছে, তা বলা যেতে পারে না। বরং তা বিস্ময়কর কিছু নয়, সেই সভা থেকে যে ঘোষণাটি প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে স্পষ্ট হয়– ইউরোপ তার সুন্দর কথা এবং চিরকালের সুখী সুখী ভাবের মধ্যেই ঢুকে রয়েছে।

এখন মার্কিন প্রশাসন ও পুতিন ছাড়া কারও অবস্থা সুখকর নয়; বাকিরা ইউক্রেনের ব্যাপারে সবচেয়ে অখুশি। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই জোরালো দরকষাকষির আলোচনায় রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সমান অংশীদার কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, হ্যাঁ, এটি একটি আকর্ষণীয় প্রশ্ন। আমার অনুমান, আপনার প্রশ্নের উত্তর হলো, ইউক্রেন চালকের আসনে বসা দূরের কথা, যেমনটা বিভিন্ন লোক নরম সুরে বলে থাকেন, দেশটি গাড়িতেই উঠতে পারেনি। এমনকি হয় ইউক্রেন গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছে অথবা সবচেয়ে বাজেভাবে বললে, গাড়িটা তার ওপর দিয়েই চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

মেরিনা হাইড: কলাম লেখক; দ্য গার্ডিয়ান থেকে ভাষান্তর 
ইফতেখারুল ইসলাম

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ