Samakal:
2025-05-01@02:51:09 GMT

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি

Published: 16th, February 2025 GMT

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি

বিসিএসের প্রথম ধাপ হচ্ছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। একটি অসাধারণ প্রস্তুতি আপনাকে পৌঁছে দিতে পারে অভীষ্ট লক্ষ্যে। কেমন এবং কীভাবে শুরু হওয়া উচিত এই পরীক্ষার প্রস্তুতির কৌশল, জানাচ্ছেন এম. এ. মান্নান 

বিসিএস একটি দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষা। তাই এখানে সফল হতে হলে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হচ্ছে ধৈর্য। ধৈর্যের সঙ্গে নিয়মিত প্রস্তুতির জন্য আত্মবিশ্বাসী হতে শিখুন। পরিশ্রম করলে আপনি সফল হবেন– এই বিশ্বাস রাখতে চেষ্টা করুন। প্রথমেই বিসিএস প্রিলিমিনারির সিলেবাসটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। সিলেবাস ধরে বিগত প্রশ্নগুলো পড়ে আপনি আপনার স্ট্রং জোন আর উইক জোন বের করুন। সিলেবাসের টপিক ধরে ধরে বিগত বছরের বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রশ্নগুলো অ্যানালাইসিস করুন এবং আপনি যে টপিকগুলো পড়েছেন, তার থেকে কী ধরনের প্রশ্ন আগের বিসিএসগুলোতে এসেছে, তা খেয়াল করুন।

বিসিএস সিলেবাসে এমন অনেক টপিক আছে, যা আপনি আগে থেকেই জানেন বা ধারণা আছে। আবার কিছু কিছু বিষয় আপনার জন্য একেবারেই নতুন। এই নতুন বিষয়গুলো থেকে নিজের মতো করে কিছু বিষয় নির্বাচন করে পড়া শুরু করে দিন। একটি অসাধারণ অলরাউন্ড প্রস্তুতি আপনাকে পৌঁছে দেবে আপনার অভীষ্ট লক্ষ্যে। আপনি হয়ে যাবেন বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য। আর সে জন্য আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে রুটিন করে। বিসিএসের সিলেবাস বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।  আপনাকে জানতে হবে কীভাবে পরিকল্পিতভাবে প্রস্তুতি শুরু করবেন। বিসিএস ক্যাডার হওয়া অনেকের কাছেই স্বপ্নের মতো। পরীক্ষার  প্রস্তুতি যদি পরিকল্পনামাফিক হয়ে থাকে, তাহলে হাজার হাজার প্রার্থীর মধ্যেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজেকে এগিয়ে রাখা সম্ভব। বিসিএস হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরীক্ষা। তাই এখানে সফল হতে হলে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হচ্ছে ধৈর্য। কারণ, এখানে এসে আপনি জীবনে প্রথম অনেক বিষয়ের খুঁটিনাটি জানতে শুরু করেন। যেমন বাণিজ্য ও বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা সংবিধান সম্পর্কে জানতে শুরু করেন। তাই এমন বিষয় আয়ত্ত করতে বেশি পরিশ্রম করতে ধৈর্যের সঙ্গে নিয়মিত প্রস্তুতির জন্য আত্মবিশ্বাসী হতে শিখুন। আজ আলোচনা করা হলো ইংরেজি বিষয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে।  

 Noun, Adjective, Verb, Preposition, adverb, Conjunction থেকে প্রশ্ন আসবেই। এ অংশে আপনি অবশ্যই ৪-৫ নম্বরের প্রশ্ন পাবেন। Gerund ও Participle অংশে ২-৩ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। Parts of Speech-এর পরিবর্তন, অর্থাৎ Noun থেকে Adjective, Adjective থেকে Adverb রূপান্তর শনাক্তকরণে ২-৩ নম্বর থাকবে।
নম্বর পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ভোকাবুলারি। Synonyms, Antonyms, One Word Substitutions, Idiom Phrases, Group Verbs, Misspelling অংশ থেকে ৬-৭ নম্বর অবশ্যই থাকবে। এ জন্য পড়ার কৌশল হচ্ছে বিগত বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রশ্ন ও তার ব্যাখ্যার সঙ্গে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন চাকরির ভোকাবুলারি পড়ে নেওয়া। 
গ্রামার রুলস; যেমন Condition, Narration, Voice, Right form of verbs, Transformation of Sentencesসহ প্রতিটি অংশ থেকে প্রশ্ন থাকে। গ্রামার রুলস অংশে এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের প্রশ্ন থাকে। তাই যত্ন করে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রম উদাহরণগুলো পড়তে হবে।
Article, Degree, Tag Question, Parallelism পরীক্ষায় সরাসরি না এলেও Pin point error ধরনের প্রশ্ন সমাধানে কাজে লাগে। তাই এসব বিষয় এড়িয়ে যাবেন না।
ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। এই বিষয়গুলো আমাদের সবার কাছেই মোটামুটি নতুন। ইংরেজি সাহিত্যের খুঁটিনাটি পড়তে গিয়ে অনেকেই সময় নষ্ট করেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলী হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম এবং কিছু কোটেশন শিখলে ১৫-তে অন্তত ১০-১২ নম্বর সহজেই পেতে পারেন। শুরুতেই আগের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা ইংরেজি সাহিত্যের প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে পড়তে হবে। এর পর বিখ্যাত সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

ইংরেজি সাহিত্যের যুগ বিভাজন সম্পর্কে জানা আবশ্যক। এলিজাবেথীয় যুগ, রোমান্টিক যুগ, ভিক্টোরিয়ান যুগ ও আধুনিক যুগ থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। তাই এ যুগগুলোর সাহিত্যিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। ইংরেজি সাহিত্যের কিংবদন্তি উইলিয়াম শেক্সপিয়রের সব সাহিত্যকর্ম বিস্তারিত পড়তে হবে। তাঁর বিখ্যাত সব ট্র্যাজেডি ও কমেডির চরিত্র ও কোটেশন ভালোমতো শিখতে হবে। তাঁর সাহিত্যকর্ম থেকে প্রতি বিসিএসেই একাধিক প্রশ্ন কমন পাওয়া যায়।
ইংরেজি সাহিত্যে কিছু পরিভাষা ব্যবহৃত হয়, যেগুলোকে ‘লিটারেরি টার্মস’ বলা হয়। এই পরিভাষাগুলো থেকে প্রতিনিয়তই প্রশ্ন আসে। এ ছাড়া বিখ্যাত লেখকদের উপাধি, ছদ্মনাম ও একই নামের একাধিক সাহিত্যকর্ম গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। ইংরেজি সাহিত্যের বিভিন্ন পদক-পুরস্কার, বিভিন্ন দেশের জাতীয় কবি, প্রসিদ্ধ লেখকদের দেশ-পরিচয় সম্পর্কেও জেনে রাখতে পারেন।

নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়া
ইংরেজি পরীক্ষায় ভালো করার প্রধান শর্ত নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়া। প্রতিদিন তিন থেকে চারটি সংবাদ পড়তে হবে। নতুন শব্দগুলো নোট করে বারবার রিভিশন দিতে হবে। কোনো সংবাদ খুব বেশি কঠিন মনে হলে মূলভাব বুঝে নিতে হবে। ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, আন্তর্জাতিক, বাংলাদেশ, প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠার সংবাদগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। পড়ার সময় কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলে সেগুলো লিখে রাখবেন। এতে রচনা ও বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতিতে কাজে লাগবে। নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করলে রিডিং কমপ্রিহেনশন খুব সহজেই বোঝা যাবে। অনুবাদ করার দক্ষতা বাড়বে। রচনা লেখার মান বেড়ে যাবে।

শব্দভান্ডার বাড়ানো
ইংরেজির শব্দভান্ডার দু-এক দিনে বাড়বে না, নিয়মিত ১০টি করে নতুন নতুন শব্দ শিখুন। অনেকেই অভিযোগ করেন ইংরেজি শব্দ মনে থাকে না বা খুব দ্রুত ভুলে যান। এ ক্ষেত্রে সমাধান হচ্ছে, প্রতিটি ইংরেজি শব্দ পড়ে বাক্যে ব্যবহার করতে হবে। কিছু ভোকাবুলারির বই আছে, যেগুলোয় প্রতিটি ইংরেজি শব্দের সঙ্গে এর ব্যবহার দেওয়া আছে। শব্দটি বাক্যে কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি বুঝতে পারলে তা মনে থাকবে। ইংরেজি ভোকাবুলারিতে ভালো দখল না থাকলে অনুচ্ছেদ বুঝতে যেমন সমস্যা হবে, তেমনি অনুবাদ ও রচনা লিখতেও বারবার হোঁচট খেতে হবে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব স এস প র ল ম ন র স হ ত যকর ম পর ক ষ ব যবহ প রথম আপন ক

এছাড়াও পড়ুন:

নেই নিয়োগপত্র, আইডি কার্ড ও ছুটি

নিয়োগপত্র নেই। এ কারণে চাকরির নিশ্চয়তাও নেই। দেওয়া হয় না পরিচয়পত্র। নেই কর্ম ঘণ্টার হিসাব। তবে রয়েছে মজুরিবৈষম্য ও জীবনের ঝুঁকি। এ চিত্র খুলনার বরফকলে কর্মরত বরফ শ্রমিকদের।

অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত বরফকলের শ্রমিকেরা জানেন না মে দিবসের অর্থ। তারা শুধু এটুকু জানেন, কাজ থাকলে মজুরি পাবেন, অন্যথায় জুটবে না কিছু। খুলনার নতুন বাজার, রূপসা, শিপইয়ার্ড ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বরফ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে উঠে এসেছে ঝুঁকি ও বৈষম্যের এই চিত্র।

সরেজমিনে জানা গেছে, লবণ পানি এবং অ্যামোনিয়া গ্যাসের সংমিশ্রণে বরফের প্রতিটি ক্যান তৈরি হয়। এ কাজে প্রচণ্ড ঝুঁকি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যুসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এছাড়াও অধিকাংশ সময় হাত-পা ভিজে ঠান্ডা থাকায় ক্ষত থেকে ইনফেকশন হয়। এর বাইরে বুকে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভোগেন এখানকার শ্রমিকেরা। পাতলা বরফে অনেক সময় হাত-পা কেটে যায়। কিন্তু মালিক বা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কোন ধরনের অ্যাপ্রোন বা নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করেন না। তবে দুর্ঘটনায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

আরো পড়ুন:

ফুড ডেলিভারিম্যান: খাবারের রাজ্যে অতৃপ্ত দিনরাত

মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার, নিউমার্কেট, শিপইয়ার্ড, রায়েরমহল এবং রূপসা উপজেলার পূর্ব রূপসা এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টি বরফকল রয়েছে। এর মধ্যে নতুন বাজার ও পূর্ব রূপসায় সর্বাধিক বরফকল রয়েছে। এসব কলে গড়ে দশ জন হিসেবে দেড় শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন।

রূপসার নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করেন মোহাম্মদ রাসেল হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি হলেও পরিবার নিয়ে রূপসার জাবুসা এলাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘ সাত বছর ধরে এই বরফকলে কাজ করছেন তিনি। রাসেল জানান, তাদের মাসিক বেতন নেই। নেই নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র। মূলত উৎপাদনের উপর প্রতি পিস বরফের ক্যান অনুযায়ী ১২ টাকা হারে মজুরি পান। নামমাত্র এ মজুরিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সংসার ঠিকমতো চলে না।

‘‘তিন বছর আগে নির্ধারণ করা মজুরি এখনো চলছে। লোকসানের অজুহাতে মালিকপক্ষ মজুরি বাড়াতে চান না। তাদের মতো শ্রমিকদের কোন বেতন-বোনাস নেই। নো ওয়ার্ক, নো পে অর্থাৎ কাজ থাকলে মজুরি আছে কাজ না থাকলে নেই। মালিকদের এ সিদ্ধান্ত না মানলে চাকরিও থাকে না।’’ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন রাসেল হোসেন।

একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘গড়ে প্রতিমাসে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা মজুরি পাই। কিন্তু মাসিক খাবার খরচ প্রায় ৩ হাজার টাকা। বাসা ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা চলে যায়।’’

তবে জাকির হোসেন ব্যাচেলর হওয়ায় কারখানার মধ্যেই থাকেন। বিয়ের পর এ কাজ করার ইচ্ছা নেই বলে জানান তিনি।

বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১-এ অপারেটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন মোঃ সেলিম শেখ। তার জন্ম নড়াইলের লক্ষ্মীপাশা হলেও কর্মসংস্থানের কারণে রুপসার বাগমারা গ্রামে বসবাস করছেন। তিনি জানান, বর্তমান বয়স ৮৪। ২০ বছর বয়স থেকেই বরফ কারখানার সঙ্গে জড়িত। প্রথমে হেলপার হিসেবে ২৫০০ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে অপারেটর হিসেবে মাসিক ১৫ হাজার টাকা পান। প্রতিদিন ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে কাজ শুরু করতে হয়। তবে সবসময় উৎপাদন না থাকলেও ২৪ ঘণ্টা কারখানায় থাকতে হয়। ছুটি পান না।

‘অ্যামোনিয়া গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে সিলিন্ডার লিকেজ হলে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। তবে তিনি কখনো বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হননি বলে জানান তিনি।

‘মায়ের দোয়া আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজে’র শ্রমিক জাকারিয়া হাওলাদার বলেন, ‘‘চার বছর বরফকলে কাজ করছি। চাকরির ভবিষ্যৎ নেই। শ্রম দিতে পারলে মজুরি হয়, না হলে হয় না। নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেন না মালিকপক্ষ। বেতন বাড়ানোর কথা বললে তারা আমলে নেন না।’’

একই এলাকার ‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’ কাজ করছেন মোঃ মুন্না গাজী ও মোঃ হাসান শেখ। তারা নগরীর জিন্নাপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। তারা দুজনেই মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন পান। এর বাইরে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই।

‘ব্রাইট অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজে’র ম্যানেজার আশিকুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে জানান, কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সুরক্ষায় উদাসীন। এখানে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার মাঝেমধ্যেই লিক হয়। তবে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৩২টি আইস উৎপাদনের ক্যানের প্লান্ট রয়েছে। তবে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ ক্যান বরফ উৎপাদন হয়। ছয়জন শ্রমিক কাজ করে বলে জানান তিনি।

‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ- ২'র ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বলেন, ‘‘বরফের মূল ক্রেতা চিংড়ি ও সাদা মাছের ব্যবসায়ীরা। এর বাইরে গ্রীষ্ম মৌসুমে ভ্রাম্যমাণ ও দোকানে শরবত বিক্রেতারাও কারখানা থেকে বরফ কিনে নেন। গ্রীষ্ম মৌসুমের ৬ মাস চাহিদা থাকে এবং কিছুটা লাভের মুখ দেখা যায়। তবে শীত মৌসুমের ছয় মাস বরফের চাহিদা কম থাকে। তখন কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ও মজুরি দিয়ে লোকসান গুণতে হয়।’’

জামাল উদ্দিন স্বীকার করেন কারখানায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলেও তা এড়াতে কোন সরঞ্জাম নেই। তবে অপারেটরদের অ্যামোনিয়া গ্যাসের ঝুঁকি প্রতিরোধে মাক্স সরবরাহ করা হয়।

‘বেঙ্গল আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ-১'র মালিকপক্ষের প্রতিনিধি রিয়াদ-উল-জান্নাত সৈকত বলেন, ‘‘ব্যবসা খুব ভালো যাচ্ছে না। কখনো লাভ, কখনো লোকসান এভাবেই চলছে। গত বছর কারখানা ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৯ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।’’

তবে লাভ হলে শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে শ্রমিকদের সংগঠন রূপসা বেড়িবাঁধ হ্যান্ডলিং শ্রমজীবী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিপন শেখ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘‘নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি বরফকলের ৪০ জন শ্রমিক তাদের ইউনিয়নের সদস্য। বিগত দেড় বছর আগে মজুরির সমস্যা নিয়ে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে দুই একজন শ্রমিক অভিযোগ করলে ইউনিয়নের মাধ্যমে সেটির সমাধান করে দেন তারা। কিন্তু বর্তমানে অভিযোগ নিয়ে কেউ আসে না।’’

বরফকলের শ্রমিকদের নিয়ে তারা মে দিবসের কর্মসূচি পালন করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তারা//

সম্পর্কিত নিবন্ধ