Samakal:
2025-05-01@09:39:45 GMT

ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর হলে কার লাভ

Published: 16th, February 2025 GMT

ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর হলে কার লাভ

সিলেটের ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে ২০ বছর ধরে আমদানি হয়ে আসছে চুনাপাথর। আমদানি করা পাথর রাখা হতো সেখানকার খালি জায়গায়। স্থানীয় কাস্টমস অফিস সনাতন পদ্ধতিতে বিষয়টি দেখভাল করছে। ভারত অংশে স্টেশন না থাকার পরও ২০১৯ সালে শুল্ক স্টেশনটি ‘ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে ভোলাগঞ্জ ঘোষণার পর চার বছর চলে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট নিয়ে টানাপোড়েন। সব ঝামেলা চুকিয়ে গত জুনে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন স্থলবন্দর নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলেছেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাহাব উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেন, লুটপাটের জন্যই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ভারত থেকে শুধু চুনাপাথরের জন্য এত বড় বন্দরের প্রয়োজন নেই। ভারতের স্বার্থে লুটপাটের জন্য স্থলবন্দর করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি মানতে নারাজ অনেকেই। ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম সমকালকে বলেন, বন্দর চালু হলে শুধু রাজস্ব বাড়বে না, এলাকার পরিবেশও বদলে যাবে। পাশের সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের ঘাট হয়ে উঠবে আরও সুশৃঙ্খল ও মনোরম। বন্দরের ভেতর রেস্তোরাঁ, গেস্ট হাউস, মসজিদসহ অনেক স্থাপনা হচ্ছে। বন্দরে কার লাভ হবে– এ বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু চুনাপাথর নয়, পাথর ছাড়া অন্য পণ্যও আসবে। ভবিষ্যতে রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে। 
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, ৫২ একর জায়গাজুড়ে কাজ চলছে। বন্দরে স্টিলের তিনটি ভবন ও আরও দুটি স্থাপনা দৃশ্যমান। কোথাও চলছে মাটি ভরাট ও দেয়ালের কাজ। কাস্টমস পাড়ি দিয়ে ভারতের ট্রাকগুলোকে রাস্তার আশপাশের এলাকায় পণ্য খালাস করতে দেখা গেছে। স্থলবন্দরের নির্মাণকাজ করছে অনিক ট্রেডিং করপোরেশন ও মাসুদ স্টিল নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা ১৮ মাস মেয়াদে কাজটি পেয়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করলে জমি নিয়ে বিরোধের কারণে জুনে কাজ শুরু করে তারা। তবে গত ৫ আগস্ট স্থলবন্দর থেকে কয়েক কোটি টাকার নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি লুট হয়। অনিক ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী আজম জানান, তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে তারা কাজ শুরু করেছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০০৫ সাল থেকে ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়। এতে ভোলাগঞ্জের ওপারে ভারতের খাসি হিলস জেলার মাজাই এলাকার ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানি করছেন। তারা ১৬০ কিলোমিটার পথ ঘুরে সিলেটের আরেক স্থলবন্দর তামাবিল ব্যবহার না করে সহজে ভোলাগঞ্জ ব্যবহার করতে পারছেন। সে জন্য স্টেশনটি চালু করা হয়। তবে ২০ বছর পর স্থলবন্দর ঘোষণা হলেও ভারত অংশে কোনো স্টেশন বা বন্দর গড়ে ওঠেনি। নিয়ম অনুযায়ী, সেখানেও বন্দর থাকার কথা। চুনাপাথর ছাড়া অন্য কোনো পণ্য আমদানি বা রপ্তানি হয় না ভোলাগঞ্জ দিয়ে। সে ক্ষেত্রে ভারতের ব্যবসায়ীরা একচেটিয়া চুনাপাথর রপ্তানি করছেন। শুধু বাংলাদেশ পাথরের বিপরীতে রাজস্ব পাচ্ছে। চুনাপাথর কিনতে আমদানিকারকদের ডলারে দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে। তামাবিল স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা দিদারুন নবী সমকালকে বলেন, বন্দর হওয়ার পর সেখানে তারা স্থানান্তরিত হবেন। তখন স্কেলসহ অন্য সুবিধাও থাকবে। এখন আমাদের পণ্যের চালান যাচাই করা ছাড়া কাজ নেই। তিনি জানান, বর্তমানে ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক পাথর নিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। কোনো দিন আরও বেশিও হয়। 
এদিকে স্থলবন্দরের নির্মাণকাজ শুরুর পর সিলেটের আমদানিকারকরা যোগাযোগ করেন ভারতের ইউনাইটেড নিউ মাজাই আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে। সেখানে স্টেশন কেন হচ্ছে না, সে বিষয়ে তারা জানতে চান। ১০ ফেব্রুয়ারি মাজাই আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি  সি  রাজী তাদের লিখিত জানান। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘তাদের এলাকায় বন্দর করার জন্য উপযুক্ত জমি নেই। আমদানি অব্যাহত রাখতে তিনি অনুরোধও করেন।’
ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাহাব উদ্দিন গত ২৯ জানুয়ারি নৌপরিবহন সচিব বরাবর আবেদন করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বার্থে ও ভারতকে খুশি করতে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারত অংশে কোনো স্টেশন বা বন্দর না থাকার পরও মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে চুনাপাথর ছাড়া অন্য কিছু আমদানি করা হয় না। তা জানার পরও স্থলবন্দর করতে গিয়ে লোকজনকে উচ্ছেদ ও কর্মসংস্থান ধ্বংস করা হয়েছে।’ 
স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল জলিল সমকালকে বলেন, ‘আমাদের চেয়ে ভারতের বেশি লাভ হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা চুনাপাথর খালাসের জন্য তিন কিলোমিটার পর্যন্ত 
জমি চেয়েছি। সে বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র আমদ ন র ব যবস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আখাউড়া দিয়ে ভারত থেকে এলো সাড়ে ১২ টন জিরা

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে  ভারত থেকে জিরা আমদানি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২ টন জিরা বন্দরে খালাস করা হয়। এর আগে সোমবার ১২ টন জিরা নিয়ে একটি ট্রাক বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।

জানা গেছে, সারা এগ্রো এনিমাল হেলথ এবং সততা ট্রেডিং নামে দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই জিরা আমদানি করেছে। কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে আখাউড়া স্থলবন্দরের মেসার্স আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

আখাউড়া কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতি কেজি জিরা প্রায় ৩ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২৭ টাকায় আমদানি করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে মোট ৩৬.৫ টন জিরা আমদানি হয়েছে, যার মাধ্যমে ৯৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান বলেন, চলতি বছরে এর আগেও কয়েকবার এই বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি হয়েছে। ঈদুল আজহা সামনে রেখে আরও আমদানির সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে এল ২১ টন কচুর মুখি
  • ভারত থেকে এল ১২ টন কচুরমুখি 
  • তেঁতুলিয়ায় বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার
  • আখাউড়া দিয়ে ভারত থেকে এলো সাড়ে ১২ টন জিরা