যুদ্ধবিরতি হবে ছাড় ও মিথ্যার প্রতিশ্রুতিতে পূর্ণ
Published: 17th, February 2025 GMT
চলতি মাসেই চতুর্থ বছরে পদার্পণ করবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি তা রক্ষা করতে পারেননি। এখন যুদ্ধ বন্ধে উভয়পক্ষকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে তাঁর এই পদক্ষেপ নিয়ে ভয়ে আছেন ইউক্রেনীয়রা। তাদের ধারণা, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ইউক্রেনের জন্য অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে পরিপূর্ণ হবে। ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া অঞ্চল ফিরে পাওয়ার আশাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে। খবর সিএনএন ও আলজাজিরার।
চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিনি যে শান্তি আলোচনা করতে চান, সেখানে ইউক্রেনের দখলকৃত জমির বেশির ভাগ অংশ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি অসম্ভব। গত বুধবার পুতিনের সঙ্গে ৯০ মিনিটের ফোনালাপের পর ট্রাম্পের এই মন্তব্য ইউক্রেনজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। দেশটির খুব কম মানুষই বিশ্বাস করেন, পুতিন সৎ বিশ্বাসে আলোচনা করবেন।
ইউক্রেনীয় প্রিজম নামে একটি থিঙ্কট্যাঙ্কের পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ ইউলিয়া কাজডোবিনা বিশ্বাস করেন না যে, রুশ নেতা শান্তি চান। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে রুশ পক্ষের সঙ্গে অনেক বছর ধরে আলোচনা করেছি।
রাশিয়ার ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘন করার ইতিহাস রয়েছে কয়েক দশক ধরে। ১৯৯৪ সালে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যারান্টির বিনিময়ে তার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে সম্মত হয়েছিল। সেখানে প্রতিশ্রুতি ছিল, তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করবে। তবে ২০১৪ সালে অবৈধভাবে ক্রিমিয়াকে দখল এবং পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত ছড়িয়ে দেওয়ার পর মস্কো একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। কিন্তু সেই চুক্তিও তারা বারবার লঙ্ঘন করেছে। এর পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে।
কাজডোবিনা বলেন, আমরা জানি রাশিয়া খুবই দ্বিচারী। যখন ছাড় দেওয়া এবং শান্তি স্থাপনের কথা আসে, তখন তারা বেঁকে বসে। তারা কোনো ছাড় দেয় না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্প-পুতিনের আহ্বানের জবাবে বলেছেন, কিয়েভের সম্পৃক্ততা ছাড়া তাঁর দেশ আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে হওয়া শান্তি চুক্তি মেনে নেবে না। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আমরা আমাদের ছাড়া কোনো চুক্তি মেনে নিতে পারি না। আমাদের ছাড়া ইউক্রেনের বিষয়ে কোনো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা মেনে নেব না।
রুশ বাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করে আছে। তিন বছর আগে বিনা উস্কানিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করার আগে তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল প্রায় ৭ শতাংশ। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ৬০ লাখ মানুষ, রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলে বাস করছে। সেখানকার ‘মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি’ হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা শিগগির সৌদি আরবে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ও হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সৌদি আরব সফর করবেন বলে মার্কিন প্রতিনিধি মাইকেল ম্যাককল রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে জরুরি সম্মেলনে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপের নেতারা। এ যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ওই আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ। এ নিয়ে উদ্বেগ থেকে ইউরোপের দেশগুলো জরুরি ওই সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় জেলেনস্কি ‘ইউরোপের সেনাবাহিনী’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে পুরোনো সম্পর্ক ‘শেষ’ হয়ে যাচ্ছে এবং মহাদেশটিকে এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র ইউক র ন য ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট পরিসংখ্যান
২০২১ সালের পর শ্রীলঙ্কায় টেস্ট খেলতে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। গল ও কলম্বোতে হবে দুই দলের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। যা দিয়ে দুই দলই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৫-২৭ চক্রে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। যেহেতু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ, দুই দলই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়বে বলাই যায়। মুখোমুখি লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে তাদের আগের পরিংস্যান কেমন ছিল সেগুলোতে চোখ দেয়া যাক—
‘‘১৩’’
দুই দল এর আগে ১২টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে। এবারের সিরিজটি হতে যাচ্ছে ১৩তম। আগের ১২ সিরিজে বাংলাদেশ একটিতেও জিততে পারেনি। ড্র করেছে কেবল একটি। বাকি ১১টিতেই জয় শ্রীলঙ্কার।
‘‘১’’
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত একবারই শ্রীলঙ্কাকে টেস্টে হারাতে পেরেছে। ২৬ মুখোমুখি লড়াইয়ে ২০টিতে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ড্র হয়েছে ৫ ম্যাচ।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের বিপক্ষে হোম সিরিজে টেস্ট দল ঘোষণা শ্রীলঙ্কার
বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি
‘‘৭৩০/৬’’
বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা দুইবার সাতশর বেশি রান করেছে। দুটিই বাংলাদেশের মাটিতে। ২০১৪ সালে ৭৩০ রান করেছিল ৬ উইকেটে। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে করেছিল ৭১৩ রান, ৯ উইকেটে। মুখোমুখি লড়াইয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
‘‘৬২’’
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বনিম্ন রান ৬২। বাংলাদেশ ২০০৭ সালে কলম্বোতে এই রানে অলআউট হয়েছিল।
‘‘ইনিংস ও ২৪৮ রানে জয়’’
শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে আট ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় ইনিংস ও ২৪৮ রানে, ২০১৪ সালে মিরপুরে। রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয় ৪৬৫ রানের। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে এই জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা।
‘‘১৮১৬’’
দুই দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন কুমার সাঙ্গাকারা। ১৫ ম্যাচে ১৮১৬ রান করেছেন ৭টি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে।
‘‘৩১৯’’
সাঙ্গাকারা তার একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে। ৩১৯ রান করেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যা দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
‘‘৭’’
সর্বাধিক রান, সর্বোচ্চ রানের সঙ্গে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিতেও সাঙ্গাকারা এগিয়ে। ৭ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। জয়াবর্ধনে ও চান্দিমালের রয়েছে ৫টি করে সেঞ্চুরি।
‘‘০’’
ডাকের রেকর্ডে সবার ওপরে যৌথভাবে রয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও তামিম ইকবাল। দুজন ৪টি করে ডাক পেয়েছেন।
‘‘৪৯৯’’
এক সিরিজে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসটিও সাঙ্গাকারার দখলে। ২০১৪ সালের সফরে ২ ম্যাচে ৩ ইনিংসে ৪৯৯ রান করেছিলেন।
‘‘৮৯’’
মুত্তিয়া মুরালিধরন বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১ ম্যাচে ৮৯ উইকেট নিয়েছেন। যা দুই দলের ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ।
‘‘৮৯/৭’’
রঙ্গনা হেরাথ দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড নিজের কাছে রেখেছেন। ৮৯ রানে ৭ উইকেট পেয়েছিলেন ২০১৩ সালে।
‘‘১২’’
হেরাথ ও মুরালিধরন ম্যাচে ১২টি করে উইকেট পেয়েছেন এক টেস্টে। ২০০৭ সালে ক্যান্ডিতে মুরালিধরণ ৮২ রানে ১২ উইকেট এবং ২০১৩ সালে হেরাথ ১৫৭ রানে ১২ উইকেট পেয়েছিলেন।
‘‘১১’’
সর্বোচ্চ ১১বার মুরালিধরন ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন।
‘‘২১৯’’
তাইজুল ইসলাম ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে ২১৯ রান দিয়েছিলেন ৬৭.৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে। যা এক ইনিংসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বোলিং ফিগার।
‘‘২৬’’
এক সিরিজে সর্বোচ্চ ২৬ উইকেট পেয়েছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। ২০০৭ সালে ৩ ম্যাচের সিরিজে ২৬ উইকেট নিয়েছিলেন কিংবদন্তি অফস্পিনার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল