শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনে ইউক্রেনে সেনা পাঠানো হবে
Published: 17th, February 2025 GMT
যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ইউক্রেনে শান্তি রক্ষার জন্য সেনা পাঠাতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেন, এটি সহজ সিদ্ধান্ত নয়, তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আরও আগ্রাসন থেকে বিরত রাখতে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
স্টারমার ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লেখেন, যদি প্রয়োজন পড়ে, তবে ইউক্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হলেও সেটি শুধুমাত্র একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত নয়, বরং এটি হতে হবে একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটি হালকাভাবে বলছি না। আমি গভীরভাবে এই দায়িত্ব নিয়ে ভেবেছি। এটি করতে গিয়ে ব্রিটিশ সেনাসদস্যদের ঝুঁকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি ইউক্রেনের স্থায়ী নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবার প্যারিসে একটি সম্মেলনে বসতে চলেছেন ইউরোপের দেশগুলোর নেতারা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এই সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন, যেখানে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক, ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার আশা করা হচ্ছে। স্টারমারেরও ওই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে এতে ইউরোপকে রাখার পরিকল্পনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনবিষয়ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ। তার মন্তব্যের পরই ফ্রান্স জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করে।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, মস্কোর যুদ্ধ বন্ধ করতে যদি সত্যিকারের আলোচনা শুরু হয়, তবে ইউক্রেন ও ইউরোপ তার অংশ হবে।
এই আলোচনার অংশ হিসেবে এ সপ্তাহে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এই আলোচনার মাধ্যমে বোঝা যাবে, রাশিয়া আদৌ শান্তি চায় কি না।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সাম্প্রতিক বক্তব্য ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী শান্তি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ইউরোপের ভূমিকা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। তবে ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে এটি রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বকে আরও সরাসরি সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র- রয়টার্স
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫