৭ বিয়ে করা সেই রবিজুলের নামে থানায় মানব পাচারের অভিযোগ
Published: 17th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার সেই ৭ বিয়ে করা রবিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সিরাজ শেখ নামে এক ভুক্তভোগী যুবকের বাবা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা অভিযোগে রবিজুল, তার বাবা আয়নাল এবং স্ত্রী রুবি খাতুনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রবিজুল ইসলাম (৪০) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় মাইক্রোবাস চালক ছিলেন। জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন লিবিয়ায়। ১৫ বছর লিবিয়ায় থাকার পর দেশে ফিরে ৭ বিয়ে করে আলোচনায় আসেন তিনি।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, দুই বছর আগে সদর উপজেলার জগতি কৃষকপাড়ার সিরাজ শেখের ছেলে তানজিলকে ইতালিতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠিয়ে দেন রবিজুল। সেখানে সাত-আট মাস কাজ করানোর পর তানজিলকে মানব পাচারকারী চক্রের হাতে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সিরাজ শেখ। পরে তিনি ছেলেকে মুক্ত করতে ধারদেনা করে ৩৪ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু দফায় দফায় টাকা নেওয়ার পরও দালালরা ছেলেকে মুক্ত করেনি বলে তিনি জানান। অবশেষে প্রায় ১০ মাস পর ১১ ফেব্রুয়ারি বন্দিশালা থেকে ছাড়িয়ে ছেলেকে লিবিয়ায় এক পরিচিত জনের কাছে তানজিলকে তিনি রেখেছেন। এখন ছেলেকে দেশে ফেরাতে বিমানভাড়া জোগাড় করতে পারছেন না তিনি।
পেশায় মোটর মেকানিক সিরাজ শেখ বলেন, ‘‘আমার সুখের সংসার ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে রবিজুল। তানজিল কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। প্রলোভন দেখিয়ে ছেলেকে ইতালি পাঠানোর নাম করে লিবিয়া পঠিয়েছে। মাফিয়া চক্রের কাছ থেকে ছেলেকে ছাড়াতে ভিটেমাটি বিক্রি করে দিয়ে এখন জগতির রেলের জায়গায় থাকতে হচ্ছে।’’
সিরাজ শেখ বলেন, ‘‘ছেলেকে ছাড়াতে দফায় দফায় মোট ৩৪ লাখ টাকা দালালকে দিয়েছি। এরপর টাকা চাইলেও আর দিতে পারিনি। অবশেষে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তানজিল বন্দিশালা থেকে মুক্তি পেয়েছে।’’
‘‘মানব পাচারকারী চক্রের হোতা রবিজুল একসময় লিবিয়ায় থাকলেও বর্তমানে বাংলাদেশেই সক্রিয়। তার ৭টি বিয়ে হয়েছে এবং বর্তমানে ৫ স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে আছে।’’ বলেও জানান ভুক্তভোগী বাবা।
এ বিষয়ে জানতে রবিজুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘‘ভুক্তভোগী এক যুবকের বাবা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিজুলের বাবা ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।’’
কাঞ্চন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।