সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে ফারুকের বৈঠকে কী হয়েছে
Published: 17th, February 2025 GMT
প্রথম কোনো অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) শীর্ষ পদে (সভাপতি) বসেছেন ফারুক আহমেদ। এবার বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কদের ডেকে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে অনন্য এক নজির স্থাপন করলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।
সময়টা ভালো যাচ্ছে না ফারুক আহমেদের বোর্ডের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নানা অনিয়মে বেহাল অবস্থা বিসিবির। সবকিছু মিলিয়ে দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতসহ বিপিএল নিয়ে সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে আলোচনা করেন ফারুক।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিসিবি কার্যালয়ে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন, রাজিন সালেহ থেকে শুরু করে এই প্রজন্মের অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ-লিটন দাস উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জাতীয় দলের নির্বাচক হান্নান সরকারের পদত্যাগ
বিপিএলে দল কমানোসহ সূচি পরিবর্তনের প্রস্তাব তামিমের
সাবেক অধিনায়কদের এই বৈঠকে কয়েকজন জুমেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। দেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা কিংবা সাকিব আল হাসানরা এখানে কি যুক্ত ছিলেন? এমন প্রশ্নে বৈঠকে থাকা বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম উলটো খেপে যান সাংবিদকদের উপর।
“আর কোনো প্রশ্ন সাকিবকে নিয়ে?, ধন্যবাদ”-সাকিবকে নিয়ে প্রশ্নের পর এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বেরিয়ে যান ফাহিম।
ফাহিমের মতে ক্রিকেটাররাই ভালো জানে বর্তমান অবস্থা, “মিটিং বলতে কিছুটা মত বিনিময় আমরা আলাপ করেছি। বিপিএলটা হয়ে গেল, সেটা নিয়ে আলাপ করেছি। সামনের বছরে খেলাটা কীভাবে সাজাতে পারি, তাদের মতামত কী.
“প্রত্যেক অধিনায়কই তাদের মতো করে নিজেদের মতামতগুলো দিয়েছে যে কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে পারি, কোথায় পরিবর্তন দরকার বা কোথায় তেমন ভালো করছি না। এসব কিছু নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এই বোর্ড অবশ্যই এই আলোচনাকে খুবই গুরুত্ব দেবে এবং এটার ভিত্তিতে কিছু সিদ্ধান্ত হবে। যেটা সামনে ক্রিকেট মাঠে বা সূচিতে হয়তো দেখতে পাব।”
বৈঠক নিয়ে উচ্ছ্বসিত সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফিস, “এখানে সদ্য সমাপ্ত বিপিএল ও আমাদের বিভিন্ন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নিয়ে কথা হয়েছে। অধিনায়কদের সঙ্গে বিপিএল ও অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আরও কীভাবে উন্নত ও আকর্ষণীয় করা যায় সেই ব্যাপারে কথা বলেছেন সভাপতি। বাংলাদেশের অধিনায়কেরা বিভিন্ন সময় যেভাবে তাদের যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তারা তাদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন। মিটিংটা খুবই ফলপ্রসু ছিল।”
সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ মনে করেন এমন আলোচনা হবে ভুলগুলো বেরিয়ে আসে, “অবশ্যই এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। বিগত দিনেও যদি এরকম করে ডাকা হতো বা আলোচনা করা হতো, তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট আরও এগিয়ে যেত। আলোচনার পরই যে কোনো একটা উত্তর বের হয়। আমি মনে করি, এখান থেকে ইতিবাচক উত্তর অনেক কিছুই বের হয়েছে। এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছি এবং সামনে যেন এটা ধারাবাহিক থাকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট যদি এগোতে চায়, বিভিন্ন নীতি-নির্ধারকরা আছেন, তারা যদি নিজেদের ভাবনা শেয়ার করেন, তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট এগোবে।”
ঢাকা/রিয়াদ
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি