ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া
Published: 18th, February 2025 GMT
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আজ সৌদি আরবে বৈঠকে বসছেন। খবর বিবিসির।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর এটিই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার বিষয়ে সম্মত হওয়ার পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠক আজ সৌদি আরবের স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি মূলত ‘প্রাথমিক পদক্ষেপ’- যার মাধ্যমে রাশিয়া সত্যিই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আগ্রহী কিনা, তা যাচাই করা। অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, আলোচনার মূল লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরবে পৌঁছালেন মার্কো রুবিও
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জরুরি সম্মেলনে বসছেন ইউরোপীয় নেতারা
এই বৈঠকের আরেকটি লক্ষ্য হলো, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বৈঠকের ব্যবস্থা করা।
রিয়াদে রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য হিসেবে রয়েছেন রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিভ।
আলোচনার আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মস্কো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনকে ‘সমস্যা সমাধানকারী’ হিসেবে দেখে।
দিমিত্রিভ আরো বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বড় বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ খুব দ্রুত, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ও অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবেলা করেছে।”
মূল আলোচনার বাইরে, দিমিত্রিভের অর্থনৈতিক আলোচনার জন্য মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে।
ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা গতকাল প্যারিসে এক জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া তাদের বৈঠকের ঘোষণা দেওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা দ্রুত বৈঠকে বসেছিলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে গ্যারান্টি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যাকস্টপ’ প্রয়োজন হবে। তবে এটি কেমন হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। তবে যুক্তরাজ্যের মিত্রদের মতে, এটি ইউক্রেনের জন্য মার্কিন বিমান সহায়তা, রসদ বা গোয়েন্দা ক্ষমতা হতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।