হলুদ নাকি কমলা, কোন রঙের ডিমের কুসুম বেশি ভালো
Published: 18th, February 2025 GMT
ডিম দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই, কুসুমের রং কী হবে। তবে কোথা থেকে ডিম নেওয়া হলে সেটির কুসুমের রং কেমন হয়, কেনাকাটা করতে করতেই এ সম্পর্কে একটা ধারণা হয়ে যেতে পারে আপনার। তাহলে কোথা থেকে কেনা ডিম সবচেয়ে ভালো হবে, তা আপনি নিজেই বুঝে নিতে পারবেন, যদি কুসুমের রঙের গুরুত্ব আপনার জানা থাকে। এ বিষয়ে জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
কেন হয় রঙের তারতম্যমুরগি বা হাঁসের খাবারের ওপর নির্ভর করে ডিমের কুসুমের রং। খাবার যদি হয় গম, তাহলে ডিমের রং হয় হালকা হলুদ। ভুট্টা বা সয়াজাতীয় খাবার খাওয়ানো হলে ডিম হয় হলুদ রঙের। বাণিজ্যিকভাবে খামারগুলোতে এ–জাতীয় খাবার দেওয়া হয়। তবে যেসব মুরগি ও হাঁস বাড়ির কাছে চড়ে বেড়ায়, বাগান কিংবা রান্নাঘরের বহুবিধ উচ্ছিষ্ট খায়, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। নানান ধরনের বীজ, ঘাস, আগাছা ও খুদে পোকামাকড় খাওয়ার কারণে তারা খাবার থেকে ক্যারোটিনজাতীয় উপাদান বেশি পায়। আর এই ক্যারোটিনের জন্য কুসুমের রং হয় উজ্জ্বল সোনালি, কমলা বা লালচে।
আরও পড়ুনভাজা ডিম নাকি সেদ্ধ, কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর? ২৩ আগস্ট ২০২৪পুষ্টিগুণে সেরা কুসুম কোনটিনানান ধরনের খাবার থেকে পাওয়া ক্যারোটিন যে কেবল ডিমের কুসুমের রংই দেয়, তা কিন্তু নয়। বিটা ক্যারোটিন হলো ভিটামিন ‘এ’। তার মানে উজ্জ্বল সোনালি, কমলা বা লালচে রঙের ডিমে আপনি কিছুটা বেশি ভিটামিন ‘এ’ পেতে পারেন। নানা ধরনের খাবার খাওয়া মুরগি বা হাঁসের ডিমে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও বেশি থাকে। তবে আকারটাও গুরুত্বপূর্ণ। ডিমের আকার যদি খুবই ছোট হয়, তাহলে কিন্তু সেটির কুসুমে সব পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ আর অতটা বেশি পাবেন না। সে ক্ষেত্রে রোজকার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে দেড়টি বা দুটি ডিম খেতে হতে পারে আপনাকে। অন্যদিকে হলুদ কুসুমের একটা মোটামুটি বড়সড় ডিম থেকেই আপনি প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবেন।
আরও পড়ুনপ্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো না মন্দ০৪ নভেম্বর ২০২৪তাহলে কোন ডিম খাবেনবাণিজ্যিকভাবে পালা হাঁস ও মুরগির ডিম আকারে বড় বলেই যে সেটি বেছে নেওয়া ভালো, ব্যাপারটা কিন্তু এমনও নয়। এসব হাঁস ও মুরগির খাবারে নানান ধরনের রাসায়নিক যুক্ত হতে পারে। দ্রুত বেড়ে ওঠার জন্য গ্রোথ হরমোন দেওয়া হতে পারে। নিয়মবহির্ভূতভাবে অ্যান্টিবায়োটিকও প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। তাই হলুদ কুসুমের ডিম খেতে হলেও এমন জায়গা থেকে নিতে চেষ্টা করুন, যেখানে বিধিমালা মেনেই হাঁস-মুরগি পালা হয়। অর্গানিক খাবার খাওয়ানো হয়, এমন কোনো জায়গাই বেছে নিতে পারেন।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়া মুরগি ও হাঁসের ডিম দারুণ পুষ্টিকর। তুলনামূলক নিরাপদও বটে। তাই চেষ্টা করুন, খোলা উঠানে পোষা মুরগি বা হাঁসের ডিম কিনতে। অবশ্য আপনি চাইলেই যে সব সময় পোষা হাঁস বা মুরগির ডিম পাবেন, সেটাও তো নয়। আবার কুসুমের রং সোনালি, কমলা বা লালচে করার জন্য যে লালচে ধরনের রাসায়নিক মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয় না, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই নির্ভরযোগ্য মানুষের কাছ থেকে পোষা হাঁস বা মুরগির ডিম কেনাই সবচেয়ে ভালো।
আরও পড়ুনডিম কীভাবে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার২৩ ডিসেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।