প্রেম-ভালোবাসা ঘিরে কিংবদন্তীর শেষ নেই। সেসব আজো গল্পে কিংবা গানে আমাদের রোমাঞ্চিত করে। অনেক প্রেম অবশ্য যুদ্ধও ডেকে এনেছে।
সবচেয়ে বিখ্যাত ‘সমকামী যুগল’
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ও তার উপদেষ্টা হেফায়েস্টিয়নের সম্পর্ক নিয়ে আছে অনেক গল্পগাঁথা। বলা হয়, তারা একই বিছানায় ঘুমাতেন। আর এ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে রয়েছে মতপার্থক্য। ঐতিহাসিকদের দাবি, হেফায়েস্টিয়নের মৃত্যুতে আলেকজান্ডার ভেঙে পড়েন। রাজ্যে উৎসব বাতিল করেন, শোকে একটি নৃ-গোষ্ঠীর উপর গণহত্যা চালান, হেফায়েস্টিয়নের ব্যক্তিগত চিকিৎসককে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেন। যদিও এসব তথ্য ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত নয়।
ক্লিওপেট্রা ও সিজার: প্রেম ও রাজনীতি
৪৮ খ্রিষ্টপূর্বে প্রাচীন মিশরে সাম্রাজ্য নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বে জড়ান ক্লিওপেট্রা। রোমের সমর্থন আদায় করতে গিয়ে জেনারেল জুলিয়াস সিজারের সঙ্গে প্রেমে জড়ান তিনি। সিজার তার সেনাদের দিয়ে গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ক্লিওপেট্রাকে বিজয় এনে দেন। রোমে দুজন একইসঙ্গে বসবাস করতে থাকেন। সম্পর্কের ইতি ঘটে ৪৪ খ্রিষ্টপূর্বে সিজার হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে৷ ক্লিওপেট্রা অবশ্য রোমে আরেক প্রেমে জড়িয়ে পড়েন পরে।
হেলোইস-অ্যাডেলার্ড: মধ্যযুগের খ্যাতনামা যুগল
পিটার আডেলার্ড ১২ শতকে গোটা ইউরোপের সবচেয়ে প্রাজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সে সময়ের প্যারিসের সুন্দরী ও বুদ্ধিমান তরুণী হেলোইসের প্রেমে পড়েন তিনি। তার ব্যক্তিগত শিক্ষক হয়ে শুধু বিজ্ঞান নয়, প্রেমের শিল্পকলায়ও দীক্ষা দেন আডেলার্ড। তার বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ অ্যাডেলার্ড ছাত্রদের কাছে গল্প করেন। আডেলার্ড আর হ্যালোইসের প্রেম ও বিয়ের গল্প গোটা প্যারিসে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও শেষটায় এই সম্পর্ক বিয়োগান্তক রূপ নেয়।
শাহজাহান-মমতাজ: প্রেমের সৌধ
১৫ বছর বয়সে প্রথম দেখায় আরজুমান্দ বানু বেগমের প্রেমে পড়েন রাজপুত্র খুররাম, যিনি পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান হিসেবে খ্যাতি পান। আরজুমান্দ বানুর বয়স তখন ১৪। পাঁচ বছর পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আরজুমান্দ পরিচিত হন মমতাজ মহল নামে। ১৪ তম সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তিনি মারা যান। আগ্রায় মমতাজের জন্য যে স্মৃতিস্তম্ভ গড়েন শাহজাহান তা আজও বিশ্বের মানুষের কাছে বিষ্ময় আর ভালোবাসার অনিন্দ্য প্রতীক।
বাডার-এনস্লিন: আমৃত্যু প্রেম
১৯৬৭ সালে বার্লিনে ছাত্র আন্দোলনে পরিচয় গুড্রুন এনস্লিন ও আন্দ্রেয়াস বাডার। ১৯৬৮ সালে দুটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তার হন তারা। বিচার ছাপিয়ে এই যুগলের প্রেম তখন গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়। ৭০-এর দশকে বাডার-মাইনহোফ গ্রুপের সন্ত্রাস পশ্চিম জার্মানিকে কাঁপিয়ে দেয়। ১৯৭২ সালে আবার গ্রেপ্তার হয় এই যুগল। ১৯৭৭ সালের অক্টোবরে কারাপ্রকোষ্ঠে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা