‘মৃত্যুঞ্জয়ী’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি যেন ফিনিক্স পাখি
Published: 19th, February 2025 GMT
পুড়ে ছাই, সেই ছাই থেকে পুনর্জন্ম। গ্রিক পুরাণ বলবে, বুঝতে পেরেছি, বুঝতে পেরেছি, ফিনিক্স পাখির কথা বলছ তো!
গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখির ক্রিকেটীয় প্রতিরূপ খুঁজে পাওয়াটা একটুও কঠিন নয়। কেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। কতবার যে এর ‘মৃত্যু’ হয়েছে, কতবার পুনর্জন্ম—হিসাব রাখাই দায়। এতবার রূপ বদলানো টুর্নামেন্টও সম্ভবত আর নেই। সম্ভবত কেন, আসলেই নেই। ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে দিলেও বোধ হয় কথাটা সত্যি।
দেখতে দেখতে মৃত্যুঞ্জয়ী সেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বয়স এখন ২৭। মনুষ্য জীবনের সঙ্গে মেলালে টগবগে এক যুবক। অথচ কৈশোরেই থামিয়ে দেওয়া হচ্ছিল এর জীবনচক্র। থেমে গেলে তা স্বাভাবিক মৃত্যু হতো না, বলতে হতো অপঘাতে মৃত্যু। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সপ্তম আসরটি শুরুই হয়েছিল এই টুর্নামেন্টের অবিচুয়ারি লিখে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বয়স তখন ১৫।
এই টুর্নামেন্টটার অসীম জীবনীশক্তি। ফিনিক্স পাখির মতো ছাই থেকে আবারও প্রাণ ফিরে পাওয়ার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা। ২০১৩ সালে অবিচুয়ারি লিখে ফেলার পরের বছরই তাই পুনর্জন্মের ঘোষণা। চার বছর পর আবার হবে। সেই চার বছরের তিন বছর যেতে না যেতেই আবারও ঢং ঢং বাজতে শুরু করল মৃত্যুঘণ্টা। না, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আর হবে না। তারপরও হলো। ২০১৭ সালের টুর্নামেন্টের প্রায় পুরোটা জুড়েই বেজে গেল বিদায় রাগিণী—বিদায়, হে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, তোমাকে বিদায়!যে আইসিসিকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি বলে প্রায়ই বিদ্রূপ করা হয়, হঠাৎ তাদের মনে হয়েছিল, ইভেন্ট বোধ হয় একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে একটি করে আইসিসি টুর্নামেন্টই তো যথেষ্ট। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি আগে থেকেই ছিল, চার বছর পর যোগ হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও। ৫০ ওভারের একটা বিশ্বকাপ যেখানে আছেই, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নামের অনাসৃষ্টির তাহলে আর কী দরকার! না, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আর হবে না।
পাকিস্তানই কি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শেষ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৭ সালে এমনটাই মনে হচ্ছিল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র বছর
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী