এআই প্রযুক্তি দিয়ে প্রতারণা বাড়ছে জিমেইলে, নিরাপদ থাকবেন যেভাবে
Published: 19th, February 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জিমেইলে প্রতারণার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে গুগলের নামে ভুয়া ফোনকল করে ব্যবহারকারীদের জিমেইল অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে একদল হ্যাকার। এ ধরনের সাইবার হামলা থেকে নিরাপদ থাকতে এরই মধ্যে সব জিমেইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, জিমেইল ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে হ্যাকাররা প্রথমে স্বয়ংক্রিয় (রোবোকল) ফোনকলের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফোনে জানানো হয়, আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কার্যক্রম শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর সতর্ক করে বলা হয়, সমস্যা সমাধানে শিগগিরই একটি ই–মেইল পাঠানো হবে এবং সেখানে অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। তবে ই–মেইলে থাকা লিংকে ক্লিক করলেই গুগলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের আদলে তৈরি অন্য একটি ওয়েবসাইট চালু হয়। সেখানে জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড লিখলেই অ্যাকাউন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা।
আরও পড়ুনএআই দিয়ে তৈরি নকল কণ্ঠের ফোনকল থেকে নিরাপদ থাকবেন যেভাবে০৫ জানুয়ারি ২০২৪সাইবার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ম্যালওয়্যারবাইটস জানিয়েছে, হ্যাকাররা বর্তমানে কম খরচে অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের বোকা বানিয়ে সহজেই জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি রিকভারি কোডও সংগ্রহ করছে হ্যাকাররা। এ ধরনের সাইবার হামলায় জিমেইল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ক্লাউড স্টোরেজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেবার অ্যাকাউন্টও হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
আরও পড়ুন‘ডিপফেক’ ভিডিও কী, যেভাবে বুঝবেন এটা ভুয়া০৭ নভেম্বর ২০২৩অনলাইনে নিরাপদ থাকতে জিমেইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অপরিচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পাঠানো ই–মেইল বা এসএমএস বার্তায় থাকা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোনো ফাইল ডাউনলোড করা যাবে না। এর পাশাপাশি যেকোনো ওয়েবসাইটে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার আগে সেটির গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতারকদের ফোনকল পেলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্টফোনের কোনো বাটনে ক্লিক করা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
আরও পড়ুনজিমেইলে প্রতারণা বেশি হয় যে ৩ কৌশলে০৩ ডিসেম্বর ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র পদ থ ব যবহ র ফ নকল
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।