নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপারেলসের এক নারী শ্রমিক অসুস্থ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চেয়েও পাননি। অবশেষে কর্মস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই কারখানার শ্রমিকরা ইপিজেডের মধ্যে শ্রমিক লিমা আক্তারের (২৪) মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বিক্ষোভ করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে। 

অনন্ত অ্যাপারেলসের শ্রমিক কাজল, ফাতিমা, রাহিমা, নয়ন, নজরুলসহ বেশ কয়েকজন জানান, মঙ্গলবার কারখানায় কাজ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন লিমা আক্তার। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসাসেবা নিতে ছুটি দেয়নি। ফলে লিমা কাজ করতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টার পর তাঁকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সহকর্মীর মৃত্যুর খবর পেয়ে ক্ষোভে গতকাল বুধবার সকালে শত শত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, অসুস্থ হওয়ার পরও লিমাকে ছুটি না দিয়ে কর্তৃপক্ষ অমানবিক কাজ করেছে। এমনকি তাঁকে চিকিৎসাসেবাও দেওয়া হয়নি। তাই কর্মস্থলে কাজ করতে করতেই মৃত্যু হয় লিমার। 

অনন্ত অ্যাপারেলসের এইচআর (প্রশাসন) ম্যানেজার নাজমুল হক দাবি করেন, তারা অসুস্থ শ্রমিক লিমাকে ছুটি দেননি বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সঠিক নয়। লিমা অসুস্থ হওয়ার পরপরই তাঁকে খানপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। এর পর সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। 

লিমা আক্তারের স্বামী মো.

কাউসার বলেন, তাঁর স্ত্রী লিমা অসুস্থ থাকায় কাজে যেতে চাননি। কিন্তু গত মঙ্গলবার আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপারেলস থেকে ফোনে কল করে তাঁকে কাজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লিমা কাজ করার সময় আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চান। কিন্তু তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়নি। অসুস্থ লিমা কাজ করতে করতে কারখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন বলে খবর পান তিনি। 

এ বিষয়ে আদমজী ইপিজেডের (বেপজার) জিএম মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই নারী শ্রমিক অসুস্থ হলে তাঁকে খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছেন তিনি। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও মালিকপক্ষ লিমাকে ছুটি দিতে অসম্মতি জানানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালের চিকিৎসক ফরহাদ হোসেন বলেন, লিমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে কী রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা তিনি জানেন না বলে জানান। 

লিমার স্বামী কাউসার বলেন, কয়েক দিন ধরে লিমা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিল। 

লিমা আক্তারের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারের চরবকল এলাকায়। তিনি ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই সিনিয়র সুইং অপারেটর হিসেবে অনন্ত অ্যাপারেলসে যোগ দেন। সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর কদমতলীতে স্বামীর সঙ্গে তিনি বসবাস করতেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
  • সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
  • ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
  • সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিলে দিনে দুপুরে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই
  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার