কমপ্লিট শাটডাউনের চতুর্থ দিনে সড়ক অবরোধ, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন
Published: 20th, February 2025 GMT
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক পদায়নের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনের চতুর্থ দিনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার কলেজ গেটের সামনে বিক্ষোভ করে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাঁরা। এর পর থেকে গত চার দিন এই মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বরিশাল শহরের ব্যস্ততম বান্দরোডে অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় ওই সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ছয়জন কনিষ্ঠ চিকিৎসককে এখানে পদায়ন করে দেওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবারের একটি প্রজ্ঞাপন শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ৬০ ভাগের বেশি শিক্ষকের পদ শূন্য। এতে মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে ভবিষ্যতে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এখানে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এতে অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
শিক্ষক পদায়নের দাবিতে তাঁরা গত সোমবার কলেজের প্রশাসনিক ভবন, অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন। কিন্তু এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন।
সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, তাঁরা নিরুপায় হয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাঁরা যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে শিক্ষক–সংকটের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ এবং ডেন্টাল ইউনিটে শিক্ষক–সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে সাধারন শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করে। আজ দুপুরে বরিশাল নগরের বান্দরোডে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ সড়ক অবর বর শ ল শ
এছাড়াও পড়ুন:
জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।
হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।