মানুষ শখের বশে কত কিছুই না সংগ্রহ করে। কেউ ডাকটিকিট জমায়, কেউ মুদ্রা। যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার বাসিন্দা ক্লেম রেইনকেমেয়ারের শখও খানিকটা একই রকম। তবে তিনি যে জিনিস সংগ্রহ করেন, তা শুনে আপনার খানিকটা অদ্ভুত মনে হতে পারে।
রেইনকেমেয়ার ৪০ বছর ধরে নানা প্রকারের ইট সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে ৮ হাজার ৮৮২ ধরনের ইট। সেগুলোর কোনো কোনোটি কয়েক শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী।
রেইনকেমেয়ারের বয়স ৮৭ বছর। ওকলাহোমার টুলসা শহরে তিনি বসবাস করেন। সেখানেই একটি ঘরে তিনি জমিয়েছেন একের পর এক ইট।
বাবাকে চমক দিতে রেইনকেমেয়ারের মেয়ে সেলিয়া এবং জামাতা ড্যান বিসেট দারুণ এক উদ্যোগ নেন। নিজেদের বন্ধুবান্ধব নিয়ে তাঁরা রেইনকেমেয়ারের জমানো ইট গুনে ফেলেন এবং প্রতি ইট সম্পর্কে আলাদাভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন। তারপর সেসব প্রমাণপত্র তাঁরা পাঠিয়ে দেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে।
একদিন রেইনকেমেয়ার বাড়িতে ফিরে একটি সনদ দেখে রীতিমতো বিস্মিত হন। ওই সনদে লেখা আছে, তাঁর সংগ্রহেই এখন সবচেয়ে বেশি ধরনের ইট রয়েছে এবং তিনি এখন একটি বিশ্ব রেকর্ডের মালিক।
পরে রেইকেমেয়ার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে বলেন, ‘আমি শহরে ফিরে এটা জানতে পারি। এটা অনেক বড় চমক ছিল এবং আমি এই সনদ পেয়ে খুবই খুশি।’
রেইনকেমেয়ারের সংগ্রহে যে ইট আছে, সেগুলোর মধ্যে যিশুখ্রিষ্টের জন্মের ১০০ বছর পরের থেকে গত কয়েক শ বছরের পুরোনো ইটও রয়েছে।
কেন অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে ইট সংগ্রহ করেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে রেইনকেমেয়ার বলেন, ইট অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। এ কারণে ইটের প্রতি তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
রেইনকেমেয়ার আরও বলেন, ‘ইট সম্পর্কে আমার কাছে যে বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয় তা হলো, সেগুলোর নাম আছে, ইতিহাসের পাতা ধরে আপনি সেগুলো কোথা থেকে এসেছে, তা খুঁজে বের করতে পারবেন এবং এটা সব সময় আমাকে আগ্রহী করে তুলেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ইনক ম য় র র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ