এইচএসসি পরীক্ষায় রসায়ন প্রথম পত্রে ভালো নম্বর কীভাবে পাবে
Published: 10th, July 2025 GMT
এবারের এইচএসসিতে রসায়ন বিষয়ের পুনর্বিন্যাস সিলেবাসে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার সিলেবাসে মোট চারটি অধ্যায় আছে। বহুনির্বাচনি অংশে থাকবে ২৫টি প্রশ্ন, নম্বর থাকবে ২৫। আর রচনামূলক অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে পাঁচটি উত্তর করতে হবে। যার পূর্ণমান ৫০।
রচনামূলক অংশের প্রতিটি প্রশ্নে চারটি অংশ। এগুলো হলো—ক, খ, গ ও ঘ। এদের থাকবে ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর। প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান সমান। প্রতিটি প্রশ্নে ১০ নম্বর করে। অধ্যায়গুলো হলো পরিবেশ রসায়ন, জৈব রসায়ন, পরিমাণগত রসায়ন ও তড়িৎ রসায়ন।
এক.
পরিবেশ রসায়ন অধ্যায়ে বিভিন্ন সূত্র গ্যাস-সংশ্লিষ্ট। তাই এখান থেকে জ্ঞানমূলক প্রশ্নের অংশ হতে পারে, আবার রচনামূলক অংশের প্রশ্নও হতে পারে। যদি রচনামূলক অংশের গ বা ঘ প্রশ্ন হয়, তাহলে ওই সূত্রের আলোকে প্রমাণ করতে হবে গ্যাসটি বাস্তব নাকি অবাস্তব। আবার তা সংকোচনশীলতা গুণাঙ্কের (z) সাহায্যেও বের করা যেতে পারে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উত্তর লেখার ক্ষেত্রে নিয়ম সঠিকভাবে জেনে নিতে হবে।
এ অধ্যায়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এককগুলো রূপান্তর। যে সমীকরণে যে একক প্রযোজ্য এবং প্রতিটি টার্ম মানে—গ্যাসের চাপ, আয়তন এদের একই ফরম নিয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কী শর্তে বাস্তব গ্যাস আদর্শ গ্যাসের মতো এবং আদর্শ গ্যাস বাস্তব গ্যাসের মতো আচরণ করবে, তা ব্যাখ্যা করতে হবে।
দুই.
প্রশ্নে বেগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ‘R’ যেহেতু S ইউনিটে ব্যবহৃত হয়, তাই ভরকে কেজিতে রূপান্তর করতেই হবে। যেমন করে জানতে ব্যাপনের হার তুলনা করার ক্ষেত্রে, ‘R’-এর মান কোন একক প্রযোজ্য। আংশিক চাপ, STP, SATP, DO, BOD, COD, TDS, PH পানির ক্ষমতা, দূরীকরণ বিভিন্ন মতবাদে অম্ল-ক্ষার ব্যাখ্যা করা জানতে হবে। পারতে হবে কিছু আয়ন ও অণু কীভাবে উভধর্মী বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। এসব বিষয় সুন্দরভাবে আয়ত্তে থাকলে রচনামূলক ও বহুনির্বাচনি দুটি অংশেই সহজভাবে উত্তর দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অধ্যায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ অধ্যায় নিয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই টেনশন করে। টেনশন করা যাবে না।
তাই যাদের এ অধ্যায়ে একটু কম প্রস্তুতি আছে, তারা অন্য অধ্যায়গুলোর রচনামূলক শেষ করে তারপর এ অধ্যায়ে যাবে। এবার SN 1 বা SN 2 সেটজেকের সূত্র, গ্রিগনার্ড বিকারক থেকে বিভিন্ন যৌগ প্রস্তুতি, তাদের পার্থক্যকরণ, শনাক্তকরণ অন্য যৌগে রূপান্তর প্রণালি ভালো করে পড়তে হবে।
আবার অ্যালকাই অম্লীয় কেন? অ্যালকিন ও অ্যালকাইনের পার্থক্য মার্কনিকফের সূত্র ও বিপরীত অবস্থা জানা থাকতে হবে। যেমন করে জানতে হবে যুক্তমূলক, আয়ন, সুষম বিভাজন, বিষম বিভাজন, লুকাস বিকারক, ফরমালিন ভিনেগার, আয়োডোফর্ম পরীক্ষা। মনে রেখো, অ্যালডল ঘনীভবন ও ক্যানিজারো বিক্রিয়া দুটি ভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া, যা কার্বনিল যৌগের সঙ্গে সম্পর্কিত। অ্যারোফেটিক অংশ থেকে বিভিন্ন বিক্রিয়ার ক্রিয়া কৌশল, আগত গ্রুপের প্রভাব।
তিন.
পরিমাণগত রসায়নের অধ্যায়ে বিভিন্ন অংশে রয়েছে অঙ্ক। এগুলো করার সময় বিভিন্ন মানের এককের রূপান্তর ও তাদের এককগুলো উল্লেখ করতে ভোলা যাবে না। তবে বিভিন্ন দ্রবণের মিশ্রণের প্রকৃতি, তাদের টাইট্রেশনে উপযুক্ত নির্দেশক, অবশিষ্ট পদার্থ দ্বারা কতটুকু ধাতু (যেমন-ca, zn) প্রশমন সম্ভব, তা শিখলে প্রশ্নের উত্তর করা সহজ হবে। আবার জারণ-বিজারণ অংশের জারক-বিজারক, জারণ সংখ্যা নির্ণয় এগুলো খুবই জরুরি। বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতাকরণ জানতে হবে, সেই সব বিক্রিয়া ব্যবহার করে অঙ্ক করতে হবে।
চার.
সবশেষে চতুর্থ অধ্যায়। এটি তড়িৎ রসায়ন অধ্যায়। এ অধ্যায় থেকে উত্তর করলে তুলনামূলকভাবে কম সময় লাগবে। এখানে বেশির ভাগ প্রশ্নই অঙ্ক-সংশ্লিষ্ট, তাই এগুলোর উত্তর করলে বেশি নম্বর পাওয়া সহজ।
তড়িৎ পরিবাহিতার শর্ত, পরিবাহিতার প্রকারভেদ, পরিবহন ক্ষমতা, তাপের প্রভাব, তড়িৎ বিশ্লেব্য কোষ ও তড়িৎ রাসায়নিক কোষ। কোষ বিভব নির্ণয়। কোন পাত্রে কোন দ্রবণ রাখা যাবে কিংবা যাবে না, তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা জানতে হবে। তড়িৎ রাসায়নিক তুলাঙ্ক নির্ণয় পদ্ধতি, লবণ সেতুর ব্যবহার ও এর বৈশিষ্ট্য, হাইড্রোজেনের ব্যবহার ও এর শর্তগুলো অবশ্যই পারতে হবে। বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে দ্রবণের ঘনমাত্রা পরিবর্তন, ক্যাথোড জমাকৃত ধাতুর ভর, ধাতব পরমাণুর ব্যাখ্যা, প্রয়োজনীয় সময় নির্ণয় করতে পারতে হবে। এগুলো সব ক্ষেত্রেই অর্থাৎ বহুনির্বাচনি ও রচনামূলক অংশে প্রশ্নের অংশ হবে বিভিন্ন আঙ্গিকে এবং বিভিন্ন মানের। উল্লিখিত চারটি অধ্যায় থেকে ২৫ নম্বর থাকবে বহুনির্বাচনির জন্য। সেখানে সবগুলোই উত্তর করতে হবে। প্রতিটির জন্য নম্বর এক। সর্বমোট নম্বর ২৫। তোমরা যদি চারটি অধ্যায় ভালো করে রিভিশন দিয়ে যেতে পারো, তবে পূর্ণ নম্বর উত্তর করা সহজ হবে।
লেখক: তাপসী বণিক, সহযোগী অধ্যাপক, কোডা কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প ন তর পর ক ষ ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে
জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।