বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করাসহ ৮ দফা নির্দেশনা
Published: 21st, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ৯টার পর কোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। গত বুধবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে আয়োজিত একটি উন্মুক্ত কনসার্ট একদল শিক্ষার্থীর বাধায় পণ্ড হওয়ার পর এ নির্দেশনা জারি করা হলো।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টর সোনিয়া খানমের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিকনিক ও খেলাধুলার আয়োজন গভীর রাত পর্যন্ত চলে, যা ক্লাস ও পরীক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন ঘটায়। এ ছাড়া হলে থাকা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও নামাজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। এসব নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হলো। নির্দেশনায় বিভিন্ন বিভাগের অনুষ্ঠান, সামাজিক–সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রমসহ সব ধরনের আয়োজন রাত ৯টার মধ্যে সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়।
অন্য নির্দেশনার মধ্যে আছে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে; অনুষ্ঠানটি অনুমতিপ্রাপ্ত নির্ধারিত স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; বিকেল সাড়ে ৪টার আগে কোনো ধরনের শব্দযন্ত্র বাজানো যাবে না; একাডেমিক কার্যক্রম চলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে যেকোনো অনুষ্ঠান করা থেকে বিরত থাকতে হবে; অন্য বিভাগের একাডেমিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটে, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ ও হলগুলোর আজান-নামাজের সময়ের সঙ্গে মিল রেখে শব্দযন্ত্র ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে; শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে রাত ৯টার মধ্যে সব ধরনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক এবং অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তার দায়দায়িত্ব আয়োজকদের বহন করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারুকলা সংসদ (ববিচাস) একটি উন্মুক্ত কনসার্টের আয়োজন করে। এতে কৃষ্ণপক্ষ নামের একটি ব্যান্ড গান পরিবেশন করে। রাত ১টা পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান চলছিল। হঠাৎ শেরেবাংলা হল ও বিজয়-২৪ হলের একদল ছাত্র পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ তুলে হইচই শুরু করেন। একপর্যায়ে দুই হলের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মুক্তমঞ্চের দিকে আসেন। এ সময় বেশ কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
হামলার আশঙ্কায় কনসার্টের আয়োজক সংগঠনের সদস্যরা অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলে যান। পরে রাত দেড়টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সোনিয়া খানম ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ইয়ামিন ইসলাম জানান, হলগুলোতে পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলার কারণে এত দিন এ দাবি বাস্তবায়িত হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতাকে বেধড়ক পেটানোর পর পুলিশে সোপর্দ
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বেগ লিয়াকত আলীকে (৭২) পেটানোর পর পুলিশে দিয়েছেন একদল লোক। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে নগরের ফুলবাড়ি গেট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেগ লিয়াকত আলীর বাড়ি খান জাহান আলী থানার বাদামতলা এলাকার পুলিশ প্রশিক্ষণকেন্দ্রের সামনে। তিনি খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ফুলবাড়িগেট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেগ লিয়াকত আলী সমিতির কার্যালয়ে বসে বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নাম সংগ্রহ করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করতেন। ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি নিয়মিত চাঁদাও আদায় করতেন বলে অভিযোগ। একটি মামলায় ঈদের কয়েক দিন আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন। আজ শনিবার নিজের বাড়ি থেকে ফুলবাড়ি গেট বাজারে মুঠোফোন মেরামতের জন্য এলে সেখানে একদল লোক তাঁকে ঘিরে ফেলেন ও বেধড়ক মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন বেগ লিয়াকত আলী। তাঁর বিরুদ্ধে দৌলতপুর, দিঘলিয়া, খান জাহান আলী এবং সাভার থানার কয়েকটি মামলা আছে। তাঁর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা একটি অভিযোগও আছে। কিছুদিন আগে তিনি একটি মামলায় জামিনে মুক্ত হন।
খানজাহান আলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সনজিৎ কুমার ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, বেগ লিয়াকত আলীকে স্থানীয় জনগণ পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন। তিনি বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে আছেন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।