আগামী নির্বাচনে একই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রার্থী ও প্রতীক দেওয়ার বিষয়ে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদ। আজ শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে দলটির জেলা ও মহানগরের কর্মী সম্মেলনে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাছিত আজাদ বলেন, ‘আমরা মতানৈক্য না করে সবকিছু ভুলে এ দেশের মানুষের স্বার্থে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে ঐক্য চাই। আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলো একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রার্থী ও মার্কা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। যাতে ভোটারদের ভোটদান সহজ হয়।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের উদ্দেশে খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও তাঁর দল ব্যতীত আমরা সব সংগঠনের সঙ্গে ঐক্য চাই। ঐক্যের মাধ্যমে আমরা একটি সফল রাষ্ট্র কায়েম করতে চাই। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে আমাদের কিছু মতবিরোধ থাকলেও আমরা সবাই এক।’

ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য প্রসঙ্গে খেলাফত মজলিসের এই নেতা বলেন, ‘যেখানে জামায়াতে ইসলামী থাকবে, সেখানে আর কোনো ইসলামি দল থাকতে পারবে না। যে জায়গায় খেলাফত মজলিস থাকবে, সেখানে আর কোনো ইসলামি দল থাকতে পারবে না। যেখানে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন থাকবে, সেখানে একটাই প্রার্থী থাকবে, আর কেউ সেখানে থাকবে না। যেখানে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ও ফিল্ড ভালো, সেখানে অন্য কেউ যাতে না দাঁড়ায়। আবার যেখানে জামায়াতে ইসলামীর ফিল্ড ভালো ও প্রার্থী ভালো, সেখানে শুধু জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী থাকবে। এগুলো আমরা এক টেবিলে বসে আলোচনা করে প্রার্থী ঘোষণা করব।’

সম্মেলনে খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আহমদ আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম সিরাজুল মামুন। মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ শাব্বীর আহমেদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবু তাহের, জামায়াতে ইসলামী কর্ম পরিষদ সদস্য মঈনুদ্দিন আহমদ, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল জব্বার, ঢাকা মহানগর খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক আবু হোসাইন, নারায়ণগঞ্জ জেলা উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হুসাইন কাসেমী প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ইসল ম দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরাই প্রস্তাব করেছি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’

তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।’

সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়।’

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন দাবি কেউ করেননি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’

বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের বৈঠক: ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় হুড়োহুড়ি করে বের হলেন সবাই৫৪ মিনিট আগেবিএনপির ওয়াকআউট

কমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টার পর বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তাঁরা আলোচনায় অংশ নেবেন না।

পরে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় থাকবে না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।

আজ আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।

আরও পড়ুনজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াক আউট, পরে যোগদান২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
  • মানিব্যাগ তুলতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে বড় ভাইয়ের মৃত্যু, ছোট ভাই হাসপাতালে
  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
  • ৪ কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১টি স্থাপনার নাম বদল
  • ২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
  • জুলাই সনদের খসড়ায় ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের চিত্র নেই: ইসলামী আন্দোলন
  • কক্সবাজারের সোনাদিয়া উপকূলে ভেসে এল অজ্ঞাতনামার লাশ, এখনো নিখোঁজ অরিত্র
  • তাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ
  • মানবাধিকার মিশন নিয়ে উদ্বেগ, আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন