যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ পাওয়ার জন্য কিয়েভের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। মার্কিন আলোচকেরা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে দেশটিতে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছেন। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রাথমিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তখন থেকেই স্টারলিংকের ভবিষ্যৎ নিয়ে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনায় হয়। 

আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে,গত বৃহস্পতিবার মার্কিন বিশেষ ইউক্রেনবিষয়ক দূত কিথ কেলোগ জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সময় বিষয়টি আবারো তোলা হয়।

আরো পড়ুন:

ভারতে অন্য কাউকে ক্ষমতায় বসাতে অর্থ ঢেলেছিল বাইডেন: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে আবারো মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ষ, নিহত ২

বৈঠকে ইউক্রেনকে জানানো হয়, যদি তারা গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে না আসে, তাহলে স্টারলিংক সেবা শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে। আলোচনাটি গোপন ছিল বলে সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথাগুলো বলেছে।

সূত্রটি জানায়, ‘ইউক্রেন স্টারলিংকের ওপর নির্ভরশীল। তারা এটিকে তাদের নর্থ স্টার বলে মনে করে। স্টারলিংক হারানো .

.. একটি বিশাল আঘাত তাদের কাছে।’

যুদ্ধকালীন সাহায্যের জন্য ওয়াশিংটনকে ফেরত দেওয়ার জন্য ইউক্রেন থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদের দাবি করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

কিন্তু এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকা কোনো নির্দিষ্ট নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেয়নি।’

গতকাল শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনীয় দল একটি চুক্তিতে কাজ করছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি আশা করেন শিগগিরি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।’

ট্রাম্প চান ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরল মৃত্তিকা ধাতু ও অন্য খনিজ পদার্থ সরবরাহ করুক। এসব পদার্থের মধ্যে আছে গ্রাফাইট, ইউরেনিয়াম, টাইটানিয়াম এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লিথিয়াম। যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তার প্রতিদান হিসেবে তিনি এসব পদার্থ চেয়েছেন।

২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পরই কিয়েভের ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন কিয়েভের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ইলন মাস্ক। তিনি হাজার হাজার স্টারলিংক টার্মিনাল ইউক্রেনে পাঠিয়েছিলেন।

ইলন মাস্ক বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্ব পূর্ণ পদে রয়েছেন। 

আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো মেলিন্ডা হারিংয়ের মতে, ইউক্রেনের ড্রোন হামলা ও সামরিক বাহিনীর কৌশলের জন্য স্টারলিংক মূল চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্টারলিংককে হারানো মানে যুদ্ধে তারা হেরে যাওয়া।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ