৫ দফা দাবিতে রংপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সড়ক অবরোধ
Published: 22nd, February 2025 GMT
এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার বন্ধ, ম্যাটসের কার্যক্রম বন্ধ, বিসিএস পরীক্ষায় বয়স বৃদ্ধিসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুরে ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শনিবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কর্মসূচিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ, কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও আর্মি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অংশ নেন।
তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবেন না। বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। বিএমডিসি থেকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট এবং এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওষুধ লিখতে পারবেন না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সব শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো ষষ্ঠ গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।
প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে এবং ডাক্তারদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে। সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহ বন্ধ করে দিতে হবে।
এরই মধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুনভাবে ম্যাটসে ভর্তি বন্ধ করতে হবে। ম্যাটস শিক্ষার্থীদের প্যারামেডিকলে প্রবেশ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে ম্যাটস বন্ধ করতে হবে এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও আন্দোলনকারী ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ম ড ক ল কল জ ম য টস
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন
কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।
মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপমুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)
নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।
আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)
এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে