বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ও সহসমন্বয়ক রুদ্রকে মানিকগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন সংগঠনের জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করা নেতারা। গতকাল শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলা কমিটি স্থগিত করা না হলে তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা অভিযোগ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন জেলা কমিটিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
মানিকগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই বিপ্লবী-আহতদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগী যুগ্ম সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম রাজু অভিযোগ করেন, সাত লাখ টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা নতুন কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি অফিসিয়াল পেজে প্রকাশিত কমিটিকে পকেট কমিটি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
ওই কমিটির আহ্বায়ককে বহিরাগত উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, সদস্য সচিব ও যুগ্ম সদস্য সচিব ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলে ১৮ জুলাই হামলা করেছে। মুখপাত্র ছাত্রলীগের ও আহমেদ অনিক যুবলীগের কর্মী। ওই কমিটিতে অন্তত ২০ জন ছাত্রলীগের অনুসারী।
পদত্যাগ করা আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব মো.
২০ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি মানিকগঞ্জ জেলার জন্য ৪২১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে। এতে ওমর ফারুককে আহ্বায়ক ও নাহিদ মনিরকে সদস্য সচিব করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নবগঠিত কমিটি থেকে পদত্যাগ করা যুগ্ম সদস্য সচিব মো. নাসিম খান, সংগঠক কাউসার আহম্মেদ, সদস্য শাকিল হোসেন, কায়সার আহমেদ, বনি আহমেদ, আরমান হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ওমর ফারুক বলেন, টাকা-পয়সা দিয়ে পকেট কমিটি করার যে কথা বলা হয়েছে, তা মনগড়া কথা। প্রমাণ ছাড়া ভিত্তিহীন কথা মিডিয়ায় বলা সহজ, কিন্তু প্রমাণ করা যায না। প্রতিটি উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেই কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে। এদের কেউ যদি ছাত্রলীগ-যুবলীগের থাকেন, তাদের নাম প্রকাশ করুক। সেটি না করে, এসব অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণাও মিডিয়ার মনোযোগের জন্যই করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় কম ট ম ন কগঞ জ অব ঞ ছ ত য বল গ কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।
হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।