গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকদের তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
Published: 23rd, February 2025 GMT
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ রোববার সকাল ১০টায় গাজীপুর নগরের বাসন এলাকায় তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বেলা একটার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসন এলাকায় হা–মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট নামের কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। কিছুদিন আগে ওই কারখানায় এক কর্মীর সঙ্গে কয়েকজন শ্রমিকের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে।
আজ রোববার সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়ে জানতে পারেন ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। পরে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে কারখানার পাশে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাসন এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকেরা সকাল ১০টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে বেলা একটার দিকে শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান। এরপর সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
শ্রমিকেরা জানান, আজ ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের তালিকা গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এটা কেন করল, তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। ইচ্ছেমতো শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না।
এদিকে গাজীপুর নগরের বাসন থানার অ্যাপারেলস প্লাস ইকো লিমিটেডের শ্রমিকেরা একই এলাকায় অবস্থান নিয়ে কারখানা খোলার দাবি ও দুই মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক বলেন, হা–মীম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। ওই ঘটনায় শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও অবরোধের কারণে আজ সকালে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার পর বেলা একটার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান। শ্রমিক ও কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫