শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ রোববার সকাল ১০টায় গাজীপুর নগরের বাসন এলাকায় তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বেলা একটার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।

শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসন এলাকায় হা–মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট নামের কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। কিছুদিন আগে ওই কারখানায় এক কর্মীর সঙ্গে কয়েকজন শ্রমিকের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে।

আজ রোববার সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়ে জানতে পারেন ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। পরে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে কারখানার পাশে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাসন এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকেরা সকাল ১০টার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে বেলা একটার দিকে শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান। এরপর সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

শ্রমিকেরা জানান, আজ ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের তালিকা গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এটা কেন করল, তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। ইচ্ছেমতো শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না।
এদিকে গাজীপুর নগরের বাসন থানার অ্যাপারেলস প্লাস ইকো লিমিটেডের শ্রমিকেরা একই এলাকায় অবস্থান নিয়ে কারখানা খোলার দাবি ও দুই মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক বলেন, হা–মীম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে ৭২ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। ওই ঘটনায় শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও অবরোধের কারণে আজ সকালে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার পর বেলা একটার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান। শ্রমিক ও কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ