বীরগঞ্জে হিমাগারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
Published: 23rd, February 2025 GMT
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে হিমাগারে অন্যায্য ও অযৌক্তিক ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
আজ রোববার সকাল ১০টায় উপজেলা শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে চাষি ও ব্যবসায়ীরা সমাবেশ করেন। পরে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে আলু ফেলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন। এতে রাস্তার উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলার আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে চারটি হিমাগার সিলগালা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী।
সিলগালা করা হিমাগারগুলো হলো উপজেলার চাকাই এলাকায় হিমাদ্রী কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেড, হাবলুর হাটে শাহী কোল্ডস্টোরেজ-৪, বটতলীতে রাহবার কোল্ডস্টোরেজ ও দলুয়া এলাকায় শাহী কোল্ডস্টোরেজ-২।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক। এ সময় বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুন্দর রায়, আলুচাষি রেজাউল ইসলাম, কছিমউদ্দিন, ব্যবসায়ী ইরফান আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।
আলুচাষিরা জানান, গত কয়েক বছর হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পুঁজি হারিয়েছেন। গত দুই বছরে অনেকে আলু চাষ বন্ধ করেছেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সমাবেশে বীরগঞ্জ আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক বলেন, ‘আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে পুঁজি হারাচ্ছি। অন্যদিকে হিমাগারমালিকেরা আলুর বস্তা সংরক্ষণে একচেটিয়া মুনাফা করছেন। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের জন্য বীজ আলু ও সার বেশি দামে কিনতে হয়েছে। আগে প্রতি বিঘা জমি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকায় লিজ পাওয়া যেত। এবার সেটা ২৫ হাজারের বেশি টাকা দিয়ে লিজ নিতে হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি আলুর হিমাগার চার্জ ছিল তিন থেকে পাঁচ টাকা। এবার একলাফে সেটা আট টাকা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইউএনও ফজলে এলাহী বলেন, কয়েক দিন ধরে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করে আসছেন। হিমাগারের মালিকপক্ষ এ বিষয়ে চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেনি। দ্বিতীয়বারের মতো তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। জনদুর্ভোগ এড়ানো ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উপজেলার চারটি হিমাগার সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও ব যবস য় র আল চ ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে