দুই পেরিয়ে আজ সোমবার তিন বছরে প্রবেশ করছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের চরম মাশুল গুনতে হচ্ছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে। অস্তিত্ব রক্ষায় এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কিয়েভ। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেন নিয়ে নরম সুর থাকলেও সম্প্রতি দেশটির প্রতি ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব এবং মস্কোঘেঁষা নীতিতে বাঁকবদল হয়েছে যুদ্ধের। উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে।

সিনহুয়া জানায়, ট্রাম্পের ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টাকে নেতিবাচকভাবে দেখছেন ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতারা। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনকে ভরসা দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা আজ সোমবার কিয়েভে যাচ্ছেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বৈঠকে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক ফোন কলে স্টারমার একথা বলেন। ইউক্রেনের প্রতি ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব এবং মস্কোঘেঁষা নীতি নিয়ে ইউরোপে উদ্বেগের মধ্যে স্টারমারের সঙ্গে ওয়াশিংটনে বসতে চলেছেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকের আগে শনিবার জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলার সময় ইউক্রেনের প্রতি ফের দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন স্টারমার। বর্ষপূর্তিতে রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। শনিবার যুদ্ধের তিন বছর পূর্তির আগে দিয়ে লন্ডনের পশ্চিমাংশে রুশ দূতাবাস অভিমুখে ইউক্রেনের সমর্থনে পদযাত্রা করেছে ২ হাজার মানুষ। 

এদিকে রুশ সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে তাঁর দেশের সেনারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় লড়াই করছে। কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কোর অভিযানের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে রোববার এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই মন্তব্য করেন। 

অন্যদিকে রোববার এক রাতেই ইউক্রেনে আড়াই শতাধিক ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তিন বছর আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ ড্রোন হামলার ঘটনা। বছর পূর্তির ঠিক আগে ভয়াবহ এ  হামলা হলো। বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলেছেন, সমন্বিত এক হামলায় ‘রেকর্ড সংখ্যক’ ২৬৭টি রুশ ড্রোন উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ব্যাপক ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে, ভবনে আগুন লেগেছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ