রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি এ সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক হাসিনা বেগম, কামরান উল বাসেত, আবদুল্লাহ মো.

ফেরদৌস খান এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান এই যৌথ বিবৃতি দেন। সেখানে বলা হয়, রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ ও টেকসই সমাধান ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিশেন অথরিটির (ডিটিসিএ) অধীনে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে কোম্পানিভিত্তিক গণপরিবহন পরিচালনা করা। রাজধানীর সব পুরোনো বাস প্রত্যাহার করে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে মাত্র তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার হাজার আধুনিক সুবিধাসংবলিত নতুন বাস পরিচালনা করলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারকারী বহু মানুষ বাসে চলাচল করবেন। এতে প্রাইভেট গাড়ি নিরুৎসাহিত হবে। ফলে যানজট নিয়ন্ত্রণে আসবে। যানজট কমলে মোটরসাইকেলও কমে যাবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে বাস সার্ভিস পরিচালনা ছাড়া রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণের সহজ কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে এ জন্য সরকারের নিজস্ব বাস থাকতে হবে। নগরের পরিবহন ব্যবস্থা সব সময় সরকারের নিয়ন্ত্রণেই থাকতে হয়। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রিত হলে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, জ্বালানি সাশ্রয় হবে, অর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আসবে, মানুষের মানসিক এবং শারীরিক অসুস্থতা কমবে। সবকিছু মিলিয়ে একটি স্বস্তির পরিবেশ গড়ে উঠবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিশেন অথরিটির (ডিটিসিএ) রাজধানীতে রুট ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে বাস সার্ভিস পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও পরিবহনসংশ্লিষ্ট ক স্বার্থবাদী গোষ্ঠী রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে বিআরটিএ এবং ডিটিসিএর পাশে দাঁড়িয়ে উদ্যোগটি সফল করা। রাজনৈতিক দলসমূহ ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারি উদ্যোগে সমর্থন জানালে স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা ব্যর্থ হবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলাজনিত সমস্যাটি আসলে রাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর বহন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিতে হতো: নাহিদ ইসলাম

মানবিক করিডরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ বুধবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় শেষে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির নাহিদ এ কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই দলের বৈঠক হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, এই সরকার একটি ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে এবং পরিচালিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি একটা সমর্থন আছে। ফলে জাতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এই করিডর বা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি কীভাবে থাকবে, তা তারা (এনসিপি) এখনো স্পষ্ট নয়। তবে মানবিক করিডরের বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দল যে বক্তব্য–বিবৃতি দিচ্ছে, তার সঙ্গে তারা একমত।

জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যের জায়গাটা ধরে রাখতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, সে উদ্দেশ্যই মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসা। ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন নিম্ন ও উচ্চ উভয় কক্ষেই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু এনসিপি উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেছে। ইসলামী আন্দোলন নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য কেন গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন, আমরা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছি। উনারা বলেছেন, বিষয়টি ভেবে দেখবেন।’

বৈঠকে দলগতভাবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার চলার সময় তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধন স্থগিত করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়ে দুই দল একমত।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সারা দেশে চাঁদাবাজি, লুটপাট এবং জনগণের অধিকার হরণের মতো কর্মকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশের জন্য, রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্যই জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে এসেছিল। যদি পুরোনো বন্দোবস্তের জন্য কেউ চেষ্টা করে, জনগণ তা মেনে নেবে না।

সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য হয় জাতীয় নাগরিক পার্টির।

বিষয়গুলো হলো দ্রুত স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন; গণহত্যা ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও বিচার চলাকালে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা এবং সর্বশেষ মৌলিক সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।

মতবিনিময় সভায় এনসিপির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, আতিক মুজাহিদ, সরোয়ার তুষার, আশরাফ উদ্দিন মাহদী, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমীন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিতে হতো: নাহিদ ইসলাম
  • স্পেন ও পর্তুগালে ভয়াবহ বিদ্যুৎবিভ্রাট, সব ধরনের গণপরিবহনে বিপর্যয়