খনিজ নিয়ে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র
Published: 24th, February 2025 GMT
খনিজ চুক্তি নিয়ে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন। এর আগে এ মাসের শুরুতে মার্কিন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনের খনিজে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা অত্যন্ত গঠনমূলক হয়েছে। চুক্তির বিস্তারিত সব চূড়ান্ত। শিগগিরই চুক্তি সই হওয়ার বিষয়টি সম্পন্ন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের নেতারা এতে সই করবেন।’
এদিকে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি শান্তিচুক্তি চায়।
গতকাল ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর তিন বছর পূর্তি হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ইউক্রেন কিয়েভ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। দেশটির রাজধানীর এ সম্মেলনে ইউরোপের বেশ কয়েকজন নেতা সেখানে গেছেন। এ ছাড়া অনেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়েছেন। ইউরোপের নেতারা ইউক্রেনকে আরও বেশি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেন বলেছেন, ইউক্রেনে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ আরও দ্রুত করতে হবে। ইউরোপের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে এ যুদ্ধ রয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনের শীর্ষ সম্মেলনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বলেন, এই যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে সব কার্ড নেই। উল্লেখ্য, এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, এ যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে সব কার্ড রয়েছে।
সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিন আমাদের শান্তি দেবেন না, কোনো কিছুর বিনিময়ে তা পাওয়া যাবে না। আমাদের শক্তি, প্রজ্ঞা, ঐক্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তি অর্জন করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।