তিতির নামের এক ছোট্ট মেয়ে দাদু বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বিশাল গাছের ডালপালার আড়ালে একটি গোপন পথ খুঁজে পায়। সাহস করে সেই পথ ধরে এগিয়ে যায় সে এবং সেই পথটি চলে গেছে এক বনে। সেখানে হাজার রকম ফুল, পাখি, প্রজাপতির মেলা! তারা খুব মজা করছে। নানান রকম গাছের রাজত্ব যেন।

গাছের পাতা যে বেগুনি হতে পারে, লাল হতে পারে, তার ভাবনায় ছিল না। ফুল যে সবুজ হতে পারে কোনোদিন ভাবেনি। 

বনের পথ ধরে যেতে যেতে একপর্যায়ে সে ভিন্নরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। দেখা হয় এক ঈগলের সঙ্গে, যে তিতিরের কাছে সাহায্য চায়।

ঈগল জানায়, বনে ভয়ংকর কিছু একটা ঘটেছে। প্রাণীরা বন ছেড়ে চলে যাচ্ছে, গাছগুলোও মরতে বসেছে। বনের যেন কোনো প্রাণ নেই। 
তিতিরও বনকে রক্ষায় সাহায্য করতে রাজি হয়।

কারণ সাহায্য করতে তার খুব ভালো লাগে। বনের ভয়ংকর সমস্যার সমাধানে নেমে পড়ে তিতির ও ঈগল। সেখানে একে একে দেখা হয়, সাদা শিংওয়ালা হরিণ, কাঠবিড়ালি ও খরগোশের সঙ্গে। কিন্তু কেউ সমস্যার উৎস সম্পর্কে কিছুই জানে না। সবশেষে দেখা হয়, সারাদিন একা একা গুহার ভেতরে থাকা এক ড্রাগনের সঙ্গে।

তিতিরের অনুরোধে ড্রাগনও যোগ দেয় তাদের সঙ্গে— এটি ‘জাদুর বনে তিতিরের একদিন’ বইয়ের গল্পের অংশ। লিখেছেন তানজিল রিমন। অমর একুশে বইমেলায় ‘হুল্লোড়’ প্রকাশ করেছে এই বইটি। 

ছোটদের জন্য লেখা বইটির ছবি এঁকেছেন লাবিব হাসান। আর প্রচ্ছদ এঁকেছেন লেখক নিজেই।

বইটির প্রকাশক মনোয়ারা সুলতানা বলেন, “এটি একটি ফ্যান্টাসি গল্প এবং গল্পের মধ্য দিয়ে ছোটরা শিক্ষণীয় কিছু পাবে বলে আমার বিশ্বাস। যারা পড়তে পারে, তারা তো বটেই কিন্তু তিন বছর বা এর আশপাশে যাদের বয়স, পড়তে পারে না, অথচ গল্প পছন্দ করে, তাদের কাছেও ভালো লাগবে। অভিভাবকরা তাদের বইটি পড়ে শোনাতে পারেন। ভেতরে রঙিন ছবি রয়েছে।”

তানজিল রিমন পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। তবে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাংবাদিকতাকে। মূলত ছোটদের জন্য লিখেন তিনি। ছড়া, কিশোর কবিতা, গল্প ও কিশোর উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ছোটদের নিয়ে কাজ করতেও ভালোবাসেন। নিজ এলাকা শেরপুরের শ্রীবরদীতে গড়েছেন শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ফুটতে দাও ফুল’। ছোটদের জন্য বছরব্যাপী নানান কাজ করে থাকে সংগঠনটি।

নতুন বই সম্পর্কে তানজিল রিমন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আবারও লিখতে শুরু করেছি। আশা করছি, নতুন বইটি ছোটদের কল্পনার জগতকে আরও রঙিন করবে এবং গল্পে গল্পে কিছু শিখতেও পারবে!’

‘জাদুর বনে তিতিরের একদিন’ লেখকের পঞ্চম বই। বইটির গায়ের মূল্য ২০০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। পাওয়া যাচ্ছে মেলার শিশু চত্বরে হুল্লোড়ের ৮৭৯ নম্বর স্টলে এবং সাহস পাবলিকেশন্সের ৭৫৪ ও ৭৫৫ নম্বর স্টলে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ