ইউক্রেনে স্বঘোষিত রুশ ভূখণ্ড দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, জাপোরিঝঝিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিরল খনিজ সম্পদের উন্নয়নে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

গতকাল সোমবার রাশিয়া-১ টিভির সাংবাদিক পাভেল জারুবিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন এ কথা বলেন।

সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তির জন্য ইউক্রেনকে মার্কিন প্রশাসন যে চাপ দিচ্ছে, সে বিষয়ে উদ্বিগ্ন নয় মস্কো। দেশটিতে মজুত বিরল খনিজ সম্পদের প্রকৃত মূল্য কত, সেটি এখনো বোঝার বাকি আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পুতিন বলেন, অর্থনীতির একাধিক ক্ষেত্রে বিরল খনিজের গুরুত্ব বিবেচনা করে মস্কো এ সম্পদের উন্নয়নে মনোনিবেশ করবে।

সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে পুতিন জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের মার্কিন অংশীদারদের কাছে বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত থাকব.

..যদি তারা একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখায়।’

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘বিরল খনিজ সম্পদসমৃদ্ধ দেশগুলোর একটির নেতা হিসেবে রাশিয়া এ সম্পদের ভূগর্ভস্থ মজুতের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। এ ক্ষেত্রে নতুন অঞ্চলগুলোও (ইউক্রেনে দখল করে নেওয়া ভূখণ্ড) অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আমাদের নতুন ঐতিহাসিক অঞ্চলগুলো, যা রুশ ফেডারেশনে ফেরত এসেছে, সেগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিরল খনিজের মজুত রয়েছে।’

২০২২ সালে গণভোটের পর দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক প্রজাতন্ত্র এবং খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল রুশ ফেডারেশনে যোগ দেয়।

ফোর্বসের অনুমান, ২০২৩ সালে ইউক্রেনে প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদের মজুত ছিল। দেশটির মোট খনিজ সম্পদের প্রায় অর্ধেকই দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে অবস্থিত।

আরও পড়ুনখনিজ নিয়ে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র১৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ