মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন ২৫ লাখ কোটি ছাড়িয়ে যাবে: গভর্নর
Published: 25th, February 2025 GMT
মুঠোফোনে আর্থিক সেবা বা এমএফএসে লেনদেন চলতি বছর ২৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এখন এমএফএসে বছরে ১৭ লাখ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এ বছর হয়তো সেটি ২৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তার মানে, এমএফএসে লেনদেনের পরিমাণ জাতীয় বাজেটের প্রায় তিন গুণ অর্থ হবে।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ মঙ্গলবার ‘লেনদেনব্যবস্থার রূপান্তর: বিবর্তনের যুগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৫ সালে চালু হওয়া ডিজিটাল মাধ্যমে তাৎক্ষণিক লেনদেনব্যবস্থা আরটিজিএসের হালনাগাদ সংস্করণ এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন আরটিজিএসের মাধ্যমে সপ্তাহের সাত দিনই লেনদেন করা যাবে। উভয় পক্ষকে লেনদেনের বার্তা প্রদান, বিভিন্ন মুদ্রায় লেনদেন, নথি সংরক্ষণ ব্যবস্থাসহ আরও অনেক সুবিধাও নতুন করে যুক্ত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আরটিজিএস ব্যবস্থা চালু করেন সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। তখন আমরা গুরুত্ব দিইনি। তবে পরে দেখলাম এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ এ সময় নিজের একটি অভিজ্ঞতাও শোনান।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ডিজিটাল লেনদেনব্যবস্থায় ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সুফল পাচ্ছেন। এতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম অনেক উন্নতি হয়েছে। আরটিজিএস ব্যবস্থা হালনাগাদ করার দরকার ছিল, সেটি আমরা করেছি।’ ভবিষ্যতে আরও হালনাগাদ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো.
খায়রুল আনাম জানান, টাকা, ডলার পাউন্ডসহ সাতটি মুদ্রায় আরটিজিএস করা যায়। এখন পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১১ হাজার ৬২০টি শাখা আরটিজিএসের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ব্যবস্থায় বর্তমানে দিনে ৪৮ হাজার ৪১০টি লেনদেন হয়। দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ২২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।
আরটিজিএস ব্যবস্থা লেনদেন দ্রুত, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ করেছে বলে মন্তব্য করেন ইস্টার্ণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সাইবার হামলার হুমকি পাচ্ছি। আমরা যত ডিজিটাল ব্যবস্থার দিকে যাব, তত হুমকি বাড়বে। সে জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থার আপডেটের পাশাপাশি সুরক্ষা ব্যবস্থাও উন্নত ও শক্তিশালী করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মনট্রান করপোরেশন ইউএসএর জুলিয়া এলিজাবেথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান, পরিচালক মো. শারাফাত উল্লাহ খান, এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মাহবুব উর রহমান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
জানুয়ারি-জুন ছয় মাসে বিকাশের মুনাফা বেড়ে ৩০৮ কোটি টাকা
মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা বা এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩০৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর এই মুনাফা অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ চলতি বছরের অর্ধবর্ষ (জানুয়ারি–জুন) শেষে যে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিকাশ ৩ হাজার ২০৬ কোটি টাকার ব্যবসা বা আয় করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিকাশের ব্যবসা বেড়েছে ৭৪৪ কোটি টাকা বা প্রায় ৩০ শতাংশ। আয়ে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও মুনাফা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিকাশ মুনাফা করেছে ৩০৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১০৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়েছে। গত বছরই প্রথমবারের মতো বিকাশের মুনাফা ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। এবার ৬ মাসেই ৩০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১১ সালে যাত্রা শুরুর পর গত বছরই ৩০০ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা করেছিল বিকাশ। তার আগে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ মুনাফা ছিল ২০২৩ সালে, ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি ৯৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। গত বছরের শেষে তা এক লাফে ৩০০ কোটি টাকা ছাড়ায়। আর চলতি বছরের প্রথমার্ধেই ৩০৮ কোটি টাকার মুনাফা করেছে বিকাশ। বছর শেষে তা ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এদিকে বিকাশের গত ১০ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৪ সালে বিকাশের আয় ছিল ৫৭৩ কোটি টাকা। আর ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছিল ১৯ কোটি টাকা। দুটোই এখন বেড়ে বিকাশকে বড় অঙ্কের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।
২০১১ সালে এমএফএস প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করা বিকাশের এখন গ্রাহক প্রায় ৮ কোটি। দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার এজেন্ট ও সাড়ে ৫ লাখ মার্চেন্ট পয়েন্ট। আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি বিকাশে রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ, ন্যানো ঋণ ও ডিপোজিট সুবিধা। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানার সঙ্গে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানি ইন মোশন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বা আইএফসি, গেটস ফাউন্ডেশন, অ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ও সফটব্যাংক।