‘আমার স্বামী রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ ও মানুষের উপকার করতেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করে মানুষের আরও বেশি সেবা করবেন। কিন্তু ওরা আমার স্বামীকে বাঁচতে দিল না। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নূরে আলমের পরিকল্পনায় আর বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস গোলাম জাকারিয়া বাদলের স্ত্রী পপি বেগম এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীর বাড়িতে বসে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলেন তিনি।

বিএনপি নেতা গোলাম জাকারিয়া সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে। তাঁকে হত্যার অভিযোগে এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে সদর থানার পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ‍দুজনকে আটক করেছে।

গোলাম জাকারিয়ার স্ত্রী পপি বেগম আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকীর বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতেন তাঁর স্বামী। এ জন্য নূরে আলম বিভিন্ন সময় তাঁর স্বামীকে হুমকি দিতেন। এমনকি কয়েক মাস আগে তাঁর স্বামীর ওষুধের দোকান ভাঙচুরও করেন। বিভিন্ন মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নূরে আলম সিদ্দিকী সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমানে শেরপুর জেলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান কারাগারে গিয়ে নূরে আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এরপর নূরে আলমের নির্দেশে লুৎফর রহমান ও তাঁর ১৫-১৬ জন সহযোগী তাঁর (পপি বেগম) স্বামী জাকারিয়া বাদলকে কুপিয়ে হত্যা করেন। নূরে আলমের নির্দেশে তাঁর (জাকারিয়া) ওপর হামলা করার কথা মৃত্যুর আগে জাকারিয়া স্বজনদের কাছে বলে গেছেন।

তবে নূরে আলম সিদ্দিকী কারাগারে আটক থাকায় ও লুৎফর রহমান পলাতক থাকায় বিএনপি নেতা পপি বেগমের স্বামী গোলাম জাকারিয়াকে হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে গোলাম জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জাকারিয়া হত্যাকাণ্ডে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী মধ্যে শোকে মুহ্যমান। বাড়ির আঙিনায় অনেক প্রতিবেশী ও স্বজন ভিড় করে আছেন। জাকারিয়া বাদলের স্ত্রী পপি বেগমকে জড়িয়ে ধরে বড় ছেলে তানভীর আহমেদ কাঁদছেন। আর ছোট ছেলে গোলাম তাহসিনুর তাবিব অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছে।

শেরপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত বিএনপি নেতা গোলাম জাকারিয়ার বড় ছেলে তানভীর আহমেদ মা পপি বেগমকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ৎফর রহম ন সদর উপজ ল আম র স ব ম ব এনপ আলম র

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।

মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।

ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।

তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।

এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ