ছাত্র সংসদ নির্বাচনসহ ১৯ দাবি আদায়ে সরকারি তিতুমীর কলেজ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল এবং উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। 

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম যিয়াদ বলেছেন, “তিতুমীর কলেজে দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক হল চালু না হওয়ায় মেসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যাদের আর্থিক সমস্যা আছে, তারা ঢাকা শহরে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছেন না। ফলে, তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে এনে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায়, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নামাজ আদায়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা নেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের জন্য দ্রুত আলাদা নামাজের জায়গা বরাদ্দ করা প্রয়োজন।”

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ১৯ দাবি হলো—

১.

দ্রুত শহীদ মামুন হল চালু ও আঁখি হল ভেঙে নতুন ১০ তলা ভবন করতে হবে। 

২. অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি করতে পারবেন না। 
৩. দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। অনিয়মিত ও সাবেক শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। 

৪. আধুনিক সুবিধাসম্বলিত শ্রেণিকক্ষ ও আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। 

৫. ক্যাম্পাসে বাহিরগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। 

৬. ক্যাম্পাসের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। 

৭. ক্যাম্পাসের মূল ফটকে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। 

৮. ছাত্রাবাসগুলোর খাবারের মান ভালো করার পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। 

৯. ক্যাম্পাসে জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সেবার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ফটোকপির দোকান চালু করতে হবে। 

১০. হল পাড়ায় সাইকেল ও মোটরসাইকেল রাখার জন্য গ্যারেজের ব্যবস্থা করতে হবে। 

১১. লাইব্রেরির জন্য আলাদাভাবে নতুন ভবন করতে হবে। বর্তমানে লাইব্রেরি, রিডিং রুম ও সেমিনার গ্যালারিতে পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করতে হবে। 

১২. মসজিদের উন্নয়ন, ইসলামী সাংস্কৃতিক চর্চা ও ইসলামী লাইব্রেরি স্থাপন করতে হবে এবং মসজিদের পরিবেশ রক্ষায় প্রাঙ্গণের মাঠে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া যাবে না। 

১৩. শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সফর এবং বিষয়ভিত্তিক সভা-সেমিনারসহ শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি আয়োজন করতে হবে। 

১৪. ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রক্ষায় যত্রতত্র পোস্টারিং নিষিদ্ধ করতে হবে এবং পোস্টার লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ করতে হবে। 

১৫. সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় ক্যাম্পাসে ধূমপান নিষিদ্ধ করে ‘মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস’ ঘোষণা করতে হবে। 

১৬. শেখ হাসিনার স্বামীর নামে নির্মিত ‘ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন’ এর নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মীর নিছার আলী তিতুমীরের বাবা সৈয়দ হাসান আলীর নামে করতে হবে। ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাস’ এর নাম পরিবর্তন করে তিতুমীরের মা আদিবা রুকাইয়া খাতুনের নামে করতে হবে। 

১৭. সৈয়দ মীর নিছার আলী তিতুমীরের জন্মবার্ষিকী এবং মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করতে হবে। 

১৮. প্রতিটি ভবনে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

১৯. মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইমরান হোসেন নূর, সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম যিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহসহ শাখা কমিটির নেতারা।

ঢাকা/হাফছা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ত ম র কল জ র ব যবস থ পর ব শ র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জরুরি পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা

প্রতিনিয়ত জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় আমাদের। অনেক সময় ভ্রান্ত ধারণায় পড়ে এ পরিস্থিতিতে আরও বড় ধরনের ভুল করে ফেলি আমরা। সে ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতিতে কী করবেন আর কী করবেন না, তা জেনে রাখা ভালো।

যেমন–

পুড়ে গেলে : গরম তেল পড়ে হোক বা  আগুনে পুড়ে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে পোড়া স্থানে পেস্টের আস্তরণ দিই। অনেকে ডিম ভেঙে দেন, কেউ বা লাগান চুন। এগুলো ক্ষতিকর। পুড়ে গেলে ঠান্ডা পানির ধারা রাখতে পারেন ১০ মিনিট; অন্য কোনো কিছু নয়। 

ব্যথা পেলে : হাড় ভাঙলে নড়াচড়া না করে ভাঙা স্থানের দু’পাশে কাঠ দিয়ে বেঁধে হাসপাতালে আনতে হবে।

রক্ত ধুয়ে ফেলা নয় : রক্তপাত হতে থাকলে পরিষ্কার কাপড় বা গজ-ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিন। বেশি কেটে গেলে বা রক্তপাত ১০ মিনিটের মধ্যে বন্ধ না হলে হাসপাতালে নিতে ভুলবেন না।

নাক দিয়ে রক্ত পড়লে : আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে বসাতে হবে। বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল ও অনামিকা দিয়ে নাসারন্ধ্র টানা ১০ মিনিট বন্ধ রাখতে হবে। এ সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হবে। বরফ নাকের ওপরে দেওয়া যেতে পারে। যদি একটানা ১০ মিনিট নাসারন্ধ্র চেপে ধরে রাখার পরও রক্ত বন্ধ না হয়, দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

সাপে কাটলে : সাপে কাটার স্থানের কিছু ওপরে আমরা শক্ত বাঁধন দিই। এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে হাত-পা পচে যেতে পারে। বাঁধন দিতে হবে, তবে রশি দিয়ে নয়; গামছা, কাপড় দিয়ে ঢিলে করে বাঁধলেই চলবে। 

বিষপানে নয় গোবরপানি : বিষ পান করলে অনেকে গোবরমিশ্রিত পানি পান করিয়ে বমি করার চেষ্টা করেন। এটি ভ্রান্ত ধারণা। যদি বিষপান করা ব্যক্তি অচেতন বা অবচেতন থাকে, তাহলে বমি ফুসফুসে চলে যেতে পারে; যা গুরুতর। বিষপানের এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি, নিনস

সম্পর্কিত নিবন্ধ