তিতুমীর কলেজ প্রশাসনের কাছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ১৯ দাবি
Published: 28th, February 2025 GMT
ছাত্র সংসদ নির্বাচনসহ ১৯ দাবি আদায়ে সরকারি তিতুমীর কলেজ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল এবং উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম যিয়াদ বলেছেন, “তিতুমীর কলেজে দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক হল চালু না হওয়ায় মেসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যাদের আর্থিক সমস্যা আছে, তারা ঢাকা শহরে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছেন না। ফলে, তাদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে এনে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায়, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে।”
তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নামাজ আদায়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা নেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের জন্য দ্রুত আলাদা নামাজের জায়গা বরাদ্দ করা প্রয়োজন।”
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ১৯ দাবি হলো—
১.
২. অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি করতে পারবেন না।
৩. দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। অনিয়মিত ও সাবেক শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
৪. আধুনিক সুবিধাসম্বলিত শ্রেণিকক্ষ ও আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. ক্যাম্পাসে বাহিরগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৬. ক্যাম্পাসের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. ক্যাম্পাসের মূল ফটকে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে।
৮. ছাত্রাবাসগুলোর খাবারের মান ভালো করার পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে।
৯. ক্যাম্পাসে জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সেবার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ফটোকপির দোকান চালু করতে হবে।
১০. হল পাড়ায় সাইকেল ও মোটরসাইকেল রাখার জন্য গ্যারেজের ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. লাইব্রেরির জন্য আলাদাভাবে নতুন ভবন করতে হবে। বর্তমানে লাইব্রেরি, রিডিং রুম ও সেমিনার গ্যালারিতে পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. মসজিদের উন্নয়ন, ইসলামী সাংস্কৃতিক চর্চা ও ইসলামী লাইব্রেরি স্থাপন করতে হবে এবং মসজিদের পরিবেশ রক্ষায় প্রাঙ্গণের মাঠে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
১৩. শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা সফর এবং বিষয়ভিত্তিক সভা-সেমিনারসহ শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি আয়োজন করতে হবে।
১৪. ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রক্ষায় যত্রতত্র পোস্টারিং নিষিদ্ধ করতে হবে এবং পোস্টার লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ করতে হবে।
১৫. সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় ক্যাম্পাসে ধূমপান নিষিদ্ধ করে ‘মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস’ ঘোষণা করতে হবে।
১৬. শেখ হাসিনার স্বামীর নামে নির্মিত ‘ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন’ এর নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মীর নিছার আলী তিতুমীরের বাবা সৈয়দ হাসান আলীর নামে করতে হবে। ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাস’ এর নাম পরিবর্তন করে তিতুমীরের মা আদিবা রুকাইয়া খাতুনের নামে করতে হবে।
১৭. সৈয়দ মীর নিছার আলী তিতুমীরের জন্মবার্ষিকী এবং মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করতে হবে।
১৮. প্রতিটি ভবনে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১৯. মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইমরান হোসেন নূর, সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম যিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহসহ শাখা কমিটির নেতারা।
ঢাকা/হাফছা/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ত ম র কল জ র ব যবস থ পর ব শ র জন য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
ঢাকা/শরিফুল/রফিক