বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালেও ট্রাম্পের প্রশংসায় রিপাবলিকানরা, জেলেনস্কির পাশে ইউরোপীয় মিত্ররা
Published: 1st, March 2025 GMT
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের বৈঠকে নজিরবিহীন বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার দুই নেতার বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজনার পারদ চড়ায় যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। এতকিছুর পরও প্রশংসায় ভাসছেন ট্রাম্প। আর জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স ও স্পেনের মতো ইউরোপের দেশগুলো।
যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল হওয়ার পর জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পরপরই ট্রাম্পের প্রশংসায় সরব হয়ে ওঠেন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকেই।
আরও পড়ুনহোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে এক পোস্টে চারবার ‘ধন্যবাদ’ দিলেন জেলেনস্কি৪৯ মিনিট আগেযুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট ব্যাসেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, বিশ্বমঞ্চে আমেরিকান জনগণ এবং আমাদের জাতির পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
দেশটির কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রলিন্স এক্স পোম্টে লিখেন, ‘আমেরিকান নেতৃত্ব ফিরে এসেছে—ওভাল অফিসে ও বিশ্ব মঞ্চে। নির্ভীক, সাহসী, অবিচল; আমরা আমেরিকাকে রক্ষা করব।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান রাল্ফ নরম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করছে, আমরা আমেরিকান জনগণকেই এগিয়ে রাখি।’
আরও পড়ুনট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠকে বাগ্বিতণ্ডা-উত্তেজনা, হয়নি চুুক্তি, যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল১ ঘণ্টা আগেএদিকে জেলেনস্কির পক্ষে দাঁড়িয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এ বিষয়ে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘প্রিয় জেলেনস্কি, ইউক্রেনের প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা একা নন।’
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সেনচেজ এক্স পোস্টে লিখেন, ‘স্পেন ইউক্রেনের পাশে আছে।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও ইউক্রেন ও জেলেনস্কির প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া আগ্রাসনকারী এবং ইউক্রেনের মানুষ এই আগ্রাসনের ভুক্তভোগী। ইমানুয়েল মাখোঁ আরও বলেন, ‘শুরু থেকে যাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে।’
আরও পড়ুনচুক্তির শর্ত নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি৩ ঘণ্টা আগেসামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল এক্স পোস্টে বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চয়তা ছাড়া পুরো ইউরোপ মহাদেশের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধবিরতি হতে পারে না।
এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া একে পোস্টে লিখেছেন, ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘যুক্তরাষ্ট্র ও এ দেশের শ্রদ্ধার জায়গা ওভাল অফিসকে (হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) অসম্মান’ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেদিন তিনি (জেলেনস্কি) শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, আবার (হোয়াইট হাউসে) ফিরে আসতে পারেন।’
আরও পড়ুনপুতিনে আস্থার কথা শোনালেন ট্রাম্প, ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান স্টারমার২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প আম র ক ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’