হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসের বৈঠকে নজিরবিহীন বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার দুই নেতার বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজনার পারদ চড়ায় যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। এতকিছুর পরও প্রশংসায় ভাসছেন ট্রাম্প। আর জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স ও স্পেনের মতো ইউরোপের দেশগুলো। 

যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল হওয়ার পর জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। এর পরপরই ট্রাম্পের প্রশংসায় সরব হয়ে ওঠেন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকেই।

আরও পড়ুনহোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে এক পোস্টে চারবার ‘ধন্যবাদ’ দিলেন জেলেনস্কি৪৯ মিনিট আগে

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট ব্যাসেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, বিশ্বমঞ্চে আমেরিকান জনগণ এবং আমাদের জাতির পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’

দেশটির কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রলিন্স এক্স পোম্টে লিখেন, ‘আমেরিকান নেতৃত্ব ফিরে এসেছে—ওভাল অফিসে ও বিশ্ব মঞ্চে। নির্ভীক, সাহসী, অবিচল; আমরা আমেরিকাকে রক্ষা করব।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান রাল্ফ নরম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করছে, আমরা আমেরিকান জনগণকেই এগিয়ে রাখি।’

আরও পড়ুনট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠকে বাগ্‌বিতণ্ডা-উত্তেজনা, হয়নি চুুক্তি, যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল১ ঘণ্টা আগে

এদিকে জেলেনস্কির পক্ষে দাঁড়িয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। এ বিষয়ে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘প্রিয় জেলেনস্কি, ইউক্রেনের প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা একা নন।’

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সেনচেজ এক্স পোস্টে লিখেন, ‘স্পেন ইউক্রেনের পাশে আছে।’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও ইউক্রেন ও জেলেনস্কির প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া আগ্রাসনকারী এবং ইউক্রেনের মানুষ এই আগ্রাসনের ভুক্তভোগী। ইমানুয়েল মাখোঁ আরও বলেন, ‘শুরু থেকে যাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে।’

আরও পড়ুনচুক্তির শর্ত নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি৩ ঘণ্টা আগে

সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল এক্স পোস্টে বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চয়তা ছাড়া পুরো ইউরোপ মহাদেশের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধবিরতি হতে পারে না।

এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া একে পোস্টে লিখেছেন, ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘যুক্তরাষ্ট্র ও এ দেশের শ্রদ্ধার জায়গা ওভাল অফিসকে (হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) অসম্মান’ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেদিন তিনি (জেলেনস্কি) শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, আবার (হোয়াইট হাউসে) ফিরে আসতে পারেন।’

আরও পড়ুনপুতিনে আস্থার কথা শোনালেন ট্রাম্প, ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান স্টারমার২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প আম র ক ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ