‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’ হলো ‘জুলাই-২৪ স্কয়ার’, ২ হলের নামেও পরিবর্তন
Published: 1st, March 2025 GMT
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শেখ পরিবারের’ নামে থাকা দুই আবাসিক হলের নাম ও একটি চত্বরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সভায় নতুন নামকরণও করা হয়েছে।
‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের’ নাম পরিবর্তন করে ‘বিদ্রোহী হল’ ও ছাত্রীদের ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের’ নাম পরিবর্তন করে ‘শিউলিমালা হল’ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যসংবলিত ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’–এর নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই-২৪ স্কয়ার’ করা হয়েছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে দেওয়া হয়। পরে হল দুটির নাম কবি কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম ‘বিদ্রোহী’ কবিতা ও ‘শিউলিমালা’ গল্পগ্রন্থের নামে পরিবর্তন করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো.
নাম পরিবর্তনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, দুটি হলের নাম পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সারা দেশের কোনায় কোনায় ‘শেখ পরিবারের’ ছাপ রেখে গেছে। এমন পরিবারতন্ত্রের চর্চা যেন ভবিষ্যতে আর কোনো প্রতিষ্ঠানেই না হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।