রূপগঞ্জের ভোলাভো ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড গুতুলিয়া এলাকায় পূর্বায়ন সিটি নামের এক আবাসন প্রকল্পের নিয়োজিত লোকজন স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি না কিনেই জোরপূর্বক জমিতে বালু ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে।

বালু ভরাটে বাঁধা দেওয়ায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছে ওই আবাসন কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে শনিবার (০১ মার্চ) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার মঠের ঘাট এলাকায় অবস্থিত রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে ভুক্তভোগী কৃষকরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে কৃষক কামরুল হাসান ওরফে রিপন মাস্টারসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, গুতুলিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার জুয়েল, জাকারিয়া ও পলাশসহ কয়েকজন মিলে পূর্বায়ন সিটি নামের এক আবাসন প্রকল্পের নামে কৃষকদের কাছ থেকে জমি ক্রয় না করেই জোরপূর্বক ভাবে প্রভাব খাটিয়ে জমিতে রাতের আধারে বালুভরাট শুরু করে।

শুধু তাই নয়, বালুর পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষি জমি। জমি না কিনেই ৮০ বিঘা জমি বালু ভরাটের দায়িত্ব দেওয়া হয় আলতাব হোসেন নামের এক প্রভাবশালীকে।  কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ছনপাড়া-চান টেক্সটাইল সড়ক কেটে বালুর পাইপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কামরুল হাসান ওরফে মাস্টারের  ৭ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে পানিতে তলিয়ে গেছে।

একই এলাকার মাসুম মোল্লার দুই বিঘা জমিতে বালু ভরাট করা হয়েছে। সজীব মিয়ার তিন বিঘা জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করা হয়েছে।

মিলন মিয়ার এক বিঘা, আনিস মিয়ার ৫ শতাংশ, আবু তাহেরের দেড় বিঘা, রেনু মিয়ার আড়াই বিঘা, আব্দুর রাজ্জাকের ৭ শতাংশ, তোফাজ্জল মোল্লার পৌনে তিন বিঘা, ফজর আলীর চল্লিশ শতাংশ , আনোয়ার আলীর মোল্লার ৫৬ শতাংশসহ কৃষকদের জমিতে বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করা হয়েছে।

এদিকে, জোরপূর্বক কৃষকদের জমিতে বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করার প্রতিবাদ করায় এবং বাধা দেওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে ওই আবাসন প্রকল্পের লোকজন।

কৃষকদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করা থেকে বিরত না থাকলে স্থানীয় কৃষকরা সম্মিলিতভাবে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন। 

এ বিষয়ে পূর্বায়ন সিটি নামের এক আবাসন প্রকল্পের নিয়োজিত সাবেক মেম্বার জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করার পরেও তিনি রিসিভ করেননি। 

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কৃষকরা আমার কাছে অভিযোগ করলে আমি আমার ভোলাবো ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে ওই আবাসন প্রকল্পের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেই। এখন যদি আবারও তারা কার্যক্রম চালায় তাইলে আমি ব্যবস্থা নেবো।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন ম র এক র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ