বিভাজনের রাজনীতি নয়, ঐক্য ধরে রাখতে চায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
Published: 1st, March 2025 GMT
বিভাজনের রাজনীতি নয়, ঐক্য ধরে রেখে স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় নতুন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। সংগঠনটি বলছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর যে সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরি হয়েছে, সেই সহাবস্থানের রাজনীতির পক্ষে তাদের অবস্থান।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পরিচিতি সভায় সংগঠনটির নেতারা এ কথাগুলো বলেন। শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিন প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নতুন সংগঠনের নেতাদের জন্য শুভকামনা জানান।
সভায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী। পরিচিতি সভা পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম ও মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে রোববার টিএসসিতে গণ-ইফতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার সভায় বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি নয়; বরং লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়েছিলাম। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর যেই সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরি হয়েছে, আমরা সেই সহাবস্থানের রাজনীতির পক্ষে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের যে বাইনারি পলিটিকস ছিল, সেখানকার বাইরে গিয়ে আমরা এখানকার ছাত্রদের, এখানকার জনগণের রাজনীতির প্রস্তাব করেছি। আমরা আশাবাদী আমরা যে মধ্যপন্থী রাজনীতির প্রস্তাব দিচ্ছি, সেখানে সবাইকে বাংলাদেশ প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারব।’
সভার সূচনা বক্তব্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘আমি আজ আবেগাপ্লুত। সব ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ আজ একসঙ্গে বসে আছেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ, এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই চেয়েছিলাম। আমরা এমন একটা ক্যাম্পাস গড়ে তুলব, যে ক্যাম্পাস আমাদের শহীদ ভাইয়েরা স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন। আমরা বিভাজনের রাজনীতি আর চাই না। আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণে ঐক্য ধরে রেখে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।’
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সহাবস্থান তত দিন থাকবে, যত দিন পর্যন্ত আমরা অন্যায়ের বিপক্ষে আছি, যত দিন পর্যন্ত আমাদের রাজনীতি হবে শিক্ষার্থীদের কল্যাণ ও মুক্তির স্বার্থে।’ তিনি বলেন, ‘ভুল করলে আমাদের সমালোচনা করবেন। কারণ, আপনাদের যৌক্তিক সমালোচনা আমাদের চলার পথে পাথেয় হবে।’
বিরাজনীতিকরণ কোনো কিছুর সমাধান নয় উল্লেখ করে পরিচিতি সভায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেন, অভ্যুত্থানের সাত মাসে নানাভাবে বিভিন্ন কিছু মেরুকরণ হয়েছে, হওয়াটাই স্বাভাবিক। মেরুকরণের ফলে বিভিন্ন জায়গায় বিবাদ-বিভাজন হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক যে অধিকার, তা রক্ষায় এক হতে হবে।
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম বলেন, নবগঠিত এ ছাত্রসংগঠন ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিপরীতে মুক্তির আশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁরা আশা, নতুন সংগঠনটি দেশের সব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে। তিনি বলেন, ‘আমরাও তাদের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাব। তারা সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি করবে, এটাই প্রত্যাশা রাখছি।’
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন খান বলেন, জুলাইয়ের আন্দোলনের বড় একটি আবেদন ছিল সবাই কথা বলতে পারবে, মতামত প্রকাশ করতে পারবে। সেই জায়গা থেকে নতুন এই সংগঠ তাদের কাজ করার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তারা অবদান রেখেছে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্যসচিব মহির আলম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী। এ ছাড়া ছাত্র পক্ষ, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংসদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও তাঁদের বক্তৃতায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জন্য শুভ কামনা জানান।
গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। শনিবার পরিচিতি সভার মাধ্যমে ছাত্রসংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক ন দ র য় কম ট র র জন ত র প স গঠনট ক জ কর ব ভ জন আম দ র পর চ ত স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপসহ ৫ সুপারিশ
‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ দ্রুত জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৫ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতেই মহোৎসবে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
বেড়ায় রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা
অ্যাসোসিয়েশনের সুপারিশগুলো হলো
১. নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করে ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ গঠন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা।
২. প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদন, নতুন পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ নিশ্চিতকরণ।
৩. জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর।
৪. আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ভবনে সব কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন।
৫. নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ আয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কমিটি গঠন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ