‘কেন স্যুট পরে আসেননি’, সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে কী বলেছিলেন জেলেনস্কি
Published: 2nd, March 2025 GMT
‘কেন আপনি স্যুট পরে আসেনি? আপনার কি একটি স্যুটও নেই? অফিসের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ায় অনেক আমেরিকানের আপনাকে নিয়ে সমস্যা আছে।’
হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে ওভাল অফিসে ঢোকার আগেই এভাবে এক রক্ষণশীল সাংবাদিকের প্রশ্নবাণ ও মন্তব্যের মুখে পড়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
গত শুক্রবার ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘কৃতজ্ঞ না থাকা ও সম্মান না দেখানো’ নিয়ে অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছিল। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের তোপের মুখে পড়েন জেলেনস্কি। উত্তপ্ত বাগ্বিতণ্ডা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়।
জেলেনস্কিকে বেশির ভাগ সময় গলাবন্ধ সোয়েটশার্ট পরতে দেখা যায়। সাধারণত সেই শার্টের বুকের কাছে ইউক্রেনের ত্রিশূল প্রতীক থাকে। এমনকি বিশ্বনেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সব বৈঠকেও তাঁকে এ পোশাকেই দেখা গেছে। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি একই পোশাক বেছে নেন।
ওভাল অফিসে বৈঠকের আগে নিজের পোশাক নিয়ে যখন প্রশ্নের মুখোমুখি হন, জেলেনস্কিকে তখন বিচলিত মনে হয়নি। তিনি হয়তো এ প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিলেন।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আমি একটি যথাযথ পোশাক পরব। হয়তো আপনি যেমনটা পরেছেন তেমন কিছু.
জেলেনস্কিকে প্রশ্নটি করেছিলেন ‘রিয়াল আমেরিকাস ভয়েস’–এর হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি ব্রায়ান গ্লেন। ডানপন্থী এ নেটওয়ার্ক ট্রাম্পের মিত্র হিসেবে পরিচিত।
গ্লেনের প্রশ্নের জবাব জেলেনস্কি কতটা তেতোভাব আনতে চেয়েছিলেন, তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। তবে এর কয়েক মিনিট পরই ওভাল অফিসে যে উত্তেজনাকর বাগ্বিতণ্ডা হয়, তার কেন্দ্রেও ছিল যথাযথ সম্মান দেখানোর বিষয়টি।
আরও পড়ুনজেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়েছিল২২ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।