১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমামতি ফিরে পেলেন মুফতি ছাইফুল্লাহ
Published: 2nd, March 2025 GMT
১৫ বছর পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়েছে বরেণ্য আলেম মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে।
রবিবার (২ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদ-উল-ফিতরের ১৯৮তম জামাত উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান। ঈদ জামাত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়।
এবারও শোলাকিয়ায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর-এর জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ছাড়াও সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করবে।
প্রস্তুতিমূলক সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো.
প্রস্তুতিমূলক সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের মেজর রায়হান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মোস্তারী কাদেরী, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, জেলার পিপি অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন, জিপি অ্যাডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া ও আমিনুল ইসলাম আশফাক;
ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলমগীর হোসাইন তালুকদার, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ;
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন, সদস্য সচিব মো. ফয়সাল প্রিন্সসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিরা। সভা সঞ্চালনা করেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো. এরশাদ মিয়া।
উল্লেখ্য, শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির বৈধ নিয়ম অনুযায়ী ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের চাপে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. শাহ কামাল তাকে বেআইনিভাবে সরিয়ে দেন। পাশাপাশি মোতাওয়াল্লির অধিকারকেও ছিনিয়ে নেয়া হয়।
ওয়াকফ দলিলকে তোয়াক্কা না করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক শাহ কামাল ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেন বেসরকারি এনজিও ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান বিতর্কিত আলেম ফরীদ উদদীন মাসউদকে।
তখন এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করে ঈদের জামাত নিয়ন্ত্রণ করে। মুফতি ছাইফুল্লাহর আগে তার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ নুরুল্লাহ (রহ:) দীর্ঘ ৩০ বছর শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে অবৈতনিক দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ ১৫ বছর শোলাকিয়া ইমামের পদ থেকে সরিয়ে রাখা হয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আবুল খায়ের মুহাম্মদ নুরুল্লাহ (রহ) এর সন্তান ও কিশোরগঞ্জের সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেম মুফতি মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহকে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম পরিবর্তনেরও দাবি ওঠে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সোচ্চার হন অনেকেই। তাদের দাবি, ‘চাপিয়ে দেওয়া’ ইমামকে অবিলম্বে সরিয়ে মোতাওয়াল্লি কর্তৃক নিযুক্ত আগের ইমাম সর্বজন প্রশংসিত মুফতি আবুল খায়ের মো. ছাইফুল্লাহকে আবারও ইমামের দায়িত্ব দিতে হবে।
এর প্রেক্ষিতে রবিবার মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ সাইফুল্লাহকে শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা/রুমন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক শ রগঞ জ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আবাহনীর ২৪ নাকি মোহামেডানের ১০!
ঢাকার ক্লাব লড়াইয়ে আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের লড়াই মানেই ভিন্ন আবহ, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চে ঠাসা। সেটা ক্রিকেট হোক বা ফুটবল। কিংবা হকি। ‘ঢাকা ডার্বি’ বছর টু বছরই আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। আর সেটা যদি হয় শিরোপার ফয়সালার ম্যাচ…তাহলে তো কথাই নেই। উত্তেজনার স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশেই।
সেই মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডের খেলায়। লিগের শিরোপা নির্ধারণী ‘অঘোষিত ফাইনাল’ আগামীকাল মিরপুর শের-ই-বাংলায় অনুষ্ঠিত হবে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দলের লড়াইয়ে যারা জিতবে তারাই জিতে যাবে শিরোপা। আবাহনী ঢাকা লিগের সবচেয়ে সফল দল। লিগের বর্তমান শিরোপাধারীরা ২৩ বার এই শিরোপা জিতেছে। মোহামেডান জিতেছে নয়বার।
লিগের গত মৌসুমে আবাহনী শিরোপা জিতেছিল। মোহামেডান হয়েছিল রানার্সআপ। এবার কার মুখে হাসি ফোটে সেটাই দেখার।
আরো পড়ুন:
অবিলম্বে কার্যকর হবে হৃদয়ের শাস্তি
ইমরানউজ্জামাানের সেঞ্চুরিতে অগ্রণীর বড় জয়
মোহামেডান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শেষ শিরোপা জিতেছিল ২০০৯-১০ মৌসুমে। বিমান বাংলাদেশকে হারিয়ে মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটি শিরোপা পেয়েছিল। এরপর দুইবার কেবল রানার্সআপ হয়েছিল। বাকিটা সময়ে শিরোপার কাছেও যেতে পারেনি। লম্বা সময় পর তাদের শিরোপার হাতছানি। সেজন্য আবাহনীকে হারাতেই হবে।
আবাহনী ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। মোহামেডানের পয়েন্ট ২২। শেষ ম্যাচে মোহামেডান শেষ বলে জয় নিশ্চিত করে ২ পয়েন্ট পায়। ম্যাচটিতে মোহামেডান হেরে গেলে আবাহনীর শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত এক ম্যাচ আগেই। কিন্তু শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ জিতে শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রাখে মোহামেডান।
আগামীকাল মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট হবে ২৪। লিগের নিয়ম অনুযায়ী, দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে হেড টু হেড হিসেব আসবে। লিগের রাউন্ড রবিন লিগে মোহামেডান আবাহনীকে হারিয়েছিল। সুপার লিগেও তারা জিততে পারলে হেড টু হেডে দুইবারই তারা এগিয়ে থাকবে। তাতে শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে সাদা-কালো শিবিরের।
আর আবাহনী ম্যাচটা জিততে পারলে, প্রথম মুখোমুখির প্রতিশোধ নিতে পারলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই তারা জিতে যাবে শিরোপা। তৃতীয় হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের হাতছানি তাদের। এর আগে ২০১৮-২০২০ এবং ২০০৭-২০০৯ মৌসুমে হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছিল ঐতিহ্যবাহী দলটি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল